বিবিএ নিউজ.নেট | বুধবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২১ | প্রিন্ট | 255 বার পঠিত
কক্সবাজারে সার্ভেয়ারের বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া ঘুষের প্রায় ৯৪ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় দুদকের উপসহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণসহ প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চে শুনানিকালে এ নির্দেশ দেন। ওই সময় আদালতে অভিযুক্ত দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
ক্ষমতার অপব্যবহার, সরকারি চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ীদের হয়রানী, মিথ্যা অভিযোগে মামলায় জড়িয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদাবাজির ঘটনায় দুদক চেয়ারম্যানের দপ্তরে বেশকিছু অভিযোগ রয়েছে।
গত ১৩ ডিসেম্বর হাইকোর্টের উক্ত বেঞ্চ অভিযুক্ত দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিনকে আদালতে হাজির থাকতে নির্দেশ দেন এবং তার সম্পর্কে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করতে দুদককে বলা হয়েছিল। এর আগে দুদকের ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অপকর্ম জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ভিন্নখাতে নেয়ার বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রাকিব হাসান। দুদকের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান গণমাধ্যমকে বলেন, হাইকোর্ট জানতে চেয়েছেন, সার্ভেয়ারের বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া ঘুষের জব্ধ অর্থ গত দেড় বছরেও কেন রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হয়নি। বর্তমানে ওই টাকা কোথায় জমা দিয়েছেন অভিযুক্ত দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন।
তিনি বলেন, দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিনকে গত ১৬ জুন চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে পটুয়াখালী জেলা কার্যালয়ে বদলি করা হয়। কিন্তু দুদকের বদলি করা এই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে কক্সবাজারের চকরিয়ার একটি মানবাধিকার সংগঠনের সভাপতি দাবি করে জনৈক শাহিদুল ইসলাম লিটন হাইকোর্টে রিট আবেদন দাখিল করেন। গত ৩০ জুলাই ওই আবেদনটি হাইকোর্ট কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন।
দুদকের আইনজীবী বলেন, কিন্তু এ বিষয়টি নিয়ে চট্টগ্রামের বিভিন্ন দৈনিক ও অনলাইন পত্রিকায় অসত্য প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিনের বদলির আদেশ দুই সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হয়। তিনি বলেন, গত ২৬ আগস্ট হাইকোর্টে দ্বিতীয় দফা শুনানিতে আদেশ জালিয়াতির বিষয়টি আদালতের সামনে আসে। ভুয়া আদেশ তৈরি ও পত্রপত্রিকায় সরবরাহের সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে জড়িতদের বিরূদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়েছে। আদালত বলেন, সবকিছুর সুবিধাভোগী দুদক কর্মকর্তা। এসবের পেছনে ওই কর্মকর্তা জড়িত বলেই মনে হচ্ছে। তার কর্মকাণ্ড ভালো না। অন্যকে দিয়ে হয়তো এসব করানো হচ্ছে। তার উদ্দেশ্য সাধন করতেই এত কিছু করা হয়েছে। তাই কমিশনকে এটা গুরুত্বের সঙ্গে দেখা উচিত। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, কমিশন বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। ওই কর্মকর্তার বিষয়ে গত ১০ আগস্ট তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর চটগ্রামে দুদক কর্মকর্তার ক্ষমতার অপব্যবহার, রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হয়নি ঘুষের ৯৩ লাখ টাকা- শিরোনামে জাতীয় দৈনিকে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, কক্সবাজারে সার্ভেয়ারের বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া ঘুষের ৯৩ লাখ ৬০ হাজার ১৫০ টাকা দীর্ঘ দেড় বছর পরও রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া হয়নি। মামলার আলামত হিসেবে জব্দ করা ওই টাকা আদালতের অনুমতি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক তথা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিয়ে চালানসহ আদালতকে অবহিত করার কথা। কিন্ত এ-সংক্রান্ত মামলার নথি ঘেঁটে এবং সংশ্লিষ্ট আদালতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জব্দ করা টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া হয়নি।
Posted ১১:৫০ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২১
bankbimaarthonity.com | rina sristy