হামিম হাফিজুল্লাহ্ | মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪ | প্রিন্ট | 32 বার পঠিত
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) বার্ষিক সাধারণ সভা সোমবার (২৫ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ডিইউজের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম। প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোয়ার এবং বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। এছাড়া পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের আহ্বায়ক ডা. মো. জাহিদ হোসেন, বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এনি এবং বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, “জুলাই আন্দোলন কেবল একটি ঘটনা নয়, এটি ছিল ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগ ও গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্য এক অবিস্মরণীয় লড়াই। প্রায় দুই হাজার মানুষ নিহত এবং ২০ হাজারেরও বেশি আহত হয়েছে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার এই আন্দোলন এ জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।”
তিনি বলেন, “একটি রাষ্ট্রে সাংবাদিকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সবসময় সাংবাদিকদের পাশে ছিলেন এবং ভবিষ্যতেও বিএনপি সাংবাদিকদের অধিকার ও স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করবে। দেশের জনগণের কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে তারেক রহমান বলেন, ‘সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে যাতে ফ্যাসিবাদের শিকড় উপড়ে ফেলা যায় এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।’
বিশেষ অতিথিদের বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোয়ার বলেন, “গণমাধ্যম একটি দেশের বিবেক। তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, “সংবাদ প্রকাশে সতর্কতা অবলম্বন করুন। এমন সংবাদ প্রকাশ করবেন না, যা জাতির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে।”
অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী তার বক্তব্যে সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, ” বিগত পলাতক সরকার গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করেছে। দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি, চ্যানেল ওয়ানসহ তিন শতাধিক সংবাদপত্র ও নিউজ পোর্টাল বন্ধ করেছে। শেখ হাসিনার সরকার বাকস্বাধীনতা হরণ করে দেশকে শ্মশানে পরিণত করেছে।” তিনি আরো বলেন, “সাংবাদিকরা দেশের গণতান্ত্রিক লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তাই তাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে সত্য প্রকাশের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।”
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী তার বক্তব্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি যুক্ত হওয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “গণমাধ্যমকর্মীরা দেশের গণতান্ত্রিক লড়াইয়ের অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি। তাদের অধিকার রক্ষা করা সকল রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব।”
সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের পেশাগত উন্নয়ন ও অধিকার রক্ষায় ৭ দফা দাবি উপস্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো: ১. গণমাধ্যম সুরক্ষা আইন প্রণয়ন: সাংবাদিকদের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে কঠোর আইনি সুরক্ষা ব্যবস্থা প্রয়োজন। ২. বন্ধ গণমাধ্যম পুনরায় চালু: অতীতে বন্ধ হয়ে যাওয়া টিভি চ্যানেল ও পত্রিকা পুনরায় চালু করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। ৩. সাগর-রুনি হত্যার বিচার: সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। ৪. বেকার সাংবাদিকদের কর্মসংস্থান: পেশাজীবীদের পুনর্বাসন এবং নতুন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। ৫. প্রেসক্লাবের বহুতল ভবন নির্মাণ: সাংবাদিকদের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করা। ৬. ফ্যাসিবাদ মুক্ত গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠা: সংবাদপত্র ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। ৭. পেশাগত নিরপেক্ষতা: সাংবাদিকদের ওপর রাজনৈতিক চাপ বন্ধ করে তাদের সুষ্ঠুভাবে কাজ করতে দেওয়া। তিনি বলেন, “সাংবাদিকদের পেশাগত অধিকার রক্ষার জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়া এখন সময়ের দাবি।”
সভায় বক্তারা জুলাই আন্দোলনে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
Posted ৮:৪৪ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪
bankbimaarthonity.com | rina sristy