শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x

দুই বছরের স্থগিত এজিএম করবে ফার্স্ট ফিন্যান্স

বিবিএনিউজ.নেট   |   শনিবার, ০৬ জুলাই ২০১৯   |   প্রিন্ট   |   516 বার পঠিত

দুই বছরের স্থগিত এজিএম করবে ফার্স্ট ফিন্যান্স

উচ্চ আদালতের অনুমোদনক্রমে স্থগিত থাকা দুই বছরের বার্ষিক সাধারণ সভার (এজিএম) তারিখ নির্ধারণ করেছে সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ফার্স্ট ফিন্যান্স লিমিটেড। ২৫ জুলাই ট্রাস্ট মিলনায়তনে এজিএম অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন নওগাঁ-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. ইসরাফিল আলম। তিনি মনোনীত পরিচালক হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির পর্ষদ সদস্য হয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটির পর্ষদ সভায় মো. ইসরাফিল আলমকে চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

অ্যালফাবেট অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেডের মনোনীত পরিচালক হিসেবে মো. ইসরাফিল আলম ফার্স্ট ফিন্যান্সের পর্ষদে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন কোম্পানি সচিব সারওয়ার শফিক।

জানতে চাইলে ফার্স্ট ফিন্যান্সের নতুন চেয়ারম্যান মো. ইসরাফিল আলম এমপি বলেন, প্রতিষ্ঠানটি একসময় ভালো ছিল। কিন্তু যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে এটি রুগ্ণ হয়ে যায়। প্রতিষ্ঠানটিকে আবারো আগের অবস্থানে ফিরিয়ে আনতে অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই আমি এর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছি। প্রতিষ্ঠানটির খেলাপি ঋণ আদায় করাসহ এর অবস্থা উন্নয়নে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আশা করছি, আবারো প্রতিষ্ঠানটি ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবে।

সম্প্রতি উচ্চ আদালতের অনুমোদনক্রমে ২০১৬ ও ২০১৭ হিসাব বছরসহ সর্বশেষ সমাপ্ত ২০১৮ হিসাব বছরের বার্ষিক সাধারণ সভার তারিখ (এজিএম) নির্ধারণ কোম্পানিটির পর্ষদ। আগামী ২৫ জুলাই সকাল ১০টায় ২০১৬ হিসাব বছরের এবং বেলা সাড়ে ১১টায় ২০১৭ হিসাব বছরের এজিএম অনুষ্ঠিত হবে। ২০১৮ হিসাব বছরের এজিএম অনুষ্ঠিত হবে ১৯ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টায়। ২০১৬ হিসাব বছরের এজিএমের রেকর্ড ডেট ছিল ২০১৭ সালের ২৩ মে এবং ২০১৭ হিসাব বছরের এজিএমের রেকর্ড ডেট ছিল ২০১৮ সালের ৩০ আগস্ট। ২০১৮ হিসাব বছরের এজিএমের রেকর্ড ডেট ২৩ জুলাই।

উল্লেখ্য, লোকসানের কারণে সর্বশেষ ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০১৮ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি ফার্স্ট ফিন্যান্স। সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান (ইপিএস) হয়েছে ৩ টাকা ৪৯ পয়সা, যেখানে এর আগের হিসাব বছরে লোকসান ছিল ২ টাকা ৬২ পয়সা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ৭ টাকা ৩৯ পয়সা। এর আগের ২০১৭ হিসাব বছরেও কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। ফার্স্ট ফিন্যান্স সর্বশেষ ২০১৬ হিসাব বছরে ৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ ঘোষণা করেছিল। সে হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস ছিল ৪৩ পয়সা। সঞ্চিতি ঘাটতি সত্ত্বেও ২০১৬ হিসাব বছরের জন্য স্টক লভ্যাংশ ঘোষণার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে শেয়ারহোল্ডারের দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানিটির এজিএমের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় আদালতের কাছ থেকে বিলম্বিত এজিএম করার অনুমতি নিয়েছে কোম্পানিটি।

চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৭১ পয়সা, যেখানে এর আগের হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে লোকসান ছিল ১ টাকা ৭০ পয়সা। ৩১ মার্চ এর এনএভিপিএস দাঁড়ায় ৬ টাকা ৬৮ পয়সা।

প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ফার্স্ট লিজ ফিন্যান্স লিমিটেড ২০১৫ সালে নাম পরিবর্তন করে ফার্স্ট ফিন্যান্স হিসেবে ব্যবসা পরিচালনা করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ পরিদর্শনে ফার্স্ট ফিন্যান্সের উদ্যোক্তা পরিচালক ও সাবেক চেয়ারম্যান এ কিউ এম ফারুক আহমেদ চৌধুরীর স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মের বিষয়টি উঠে আসে। প্রতিষ্ঠানের অর্থে কানাডা ভ্রমণ, বছরের বেশির ভাগ সময় বিদেশে অবস্থান, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠানের অর্থের যথেচ্ছ ব্যবহার, ঋণ প্রস্তাব অনুমোদনের বিপরীতে কমিশন গ্রহণের মাধ্যমে অস্তিত্বহীন কোম্পানিকে অর্থ লাভের সুযোগ করে দেয়ার প্রমাণ পায় বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব অনিয়মের দায়ে ফার্স্ট ফিন্যান্সের তত্কালীন চেয়ারম্যান এ কিউ এম ফারুক আহমেদ চৌধুরীকে কেন অপসারণ করা হবে না—এ মর্মে কারণ দর্শাতে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় অপসারণ এড়াতে কৌশলে পর্ষদের দায়িত্ব ছেড়ে দেন তিনি। তারই ছোট ভাই এ কিউ এম ফয়সাল আহমেদ চৌধুরী পরবর্তী সময়ে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

প্রতিষ্ঠানটির সাবেক চেয়ারম্যান এ কিউ এম ফারুক আহমেদ চৌধুরীর অনিয়মের কারণে ২০১৪ সাল থেকেই এর আর্থিক অবস্থা ক্রমেই অবনতি হতে থাকে। ২০১৪ সালে আগের বছরের তুলনায় মুনাফা কমে ৭ কোটি ৩২ লাখ ৮০ হাজার টাকায় দাঁড়ায় এবং ইপিএস দাঁড়ায় ৬৬ পয়সা। ২০১৫ সাল শেষে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফায় ব্যাপক ধস নামে। এ সময়ে কোম্পানিটি মাত্র ৯৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা মুনাফা করে। সর্বশেষ ২০১৫ সালের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে কোম্পানিটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৩৫৯ কোটি টাকা।

ডিএসইতে ফার্স্ট ফিন্যান্স শেয়ারের সর্বশেষ দর ৬ টাকা ২০ পয়সা। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বোচ্চ দর ছিল ৮ টাকা ২০ পয়সা এবং সর্বনিম্ন ৪ টাকা ৬০ পয়সা।

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১২:২২ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৬ জুলাই ২০১৯

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।