বিবিএ নিউজ.নেট | সোমবার, ২৮ মার্চ ২০২২ | প্রিন্ট | 187 বার পঠিত
রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট বাংলাদেশের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করলেও দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে এ মুহূর্তে বড় ধরনের ঝুঁকিতে ফেলবে না বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল। আজ সোমবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য সফিউল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ তথ্য জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপন করা হয়।
মন্ত্রী বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন সামরিক সংকটে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে স্বল্প ও মধ্যমেয়াদে অভিঘাত পড়তে যাচ্ছে। দীর্ঘ মেয়াদে এর ফলাফল কী হবে তা নির্ভর করবে এ যুদ্ধ ও তার ফলে উদ্ভুত সংকট কতটা প্রলম্বিত হবে তার ওপর। তবে আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে এ সংকট দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতাকে এখনই বড় ধরনের ঝুঁকিতে ফেলবে না।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ইউক্রেনে শুরু হওয়া রাশিয়ার সামরিক অভিযানেএবং এর পাশাপাশি রাশিয়া ও তার মিত্র দেশ বেলারুশের ওপর পশ্চিমা দেশগুলোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। এই সংকটে জ্বালানী তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। রাশিয়া ইউক্রেন সংকটের প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে।
তিনি বলেন, চলমান সামরিক সংকট ও নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে প্রাকৃতিক গ্যাস, অপরিশোধিত তেল, সার, গম, নিকেল, অ্যালুমিনিয়াম ও ইলেকট্রিক পণ্যের গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ফিনিশ গুডসের মূল্য আবশ্যিকভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে। এই মুল্যবৃদ্ধি বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতিকে নিশ্চিতভাবে বাড়াবে। তেল-গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ার ফলে খাদ্যপণ্য, ভোগ্যপণ্য, শিল্পের কাঁচামাল এবং আন্তর্জাতিক পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পেয়ে দেশে মূল্যস্ফীতির চাপ অনুভূত হতে পারে। এই সংকটের কারণে রাশিয়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোষাক রফতানির অর্থ পরিশোধ নিয়েও জটিলতা দেখা দিতে পারে বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
ঢাকা-১৮ আসনের মোহাম্মদ হাবিব হাসানের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, চলতি অর্থ বছরের প্রথম আট মাসে বিশ্বের বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী দেশসমূহের সাথে ঋণ সহায়তার প্রতিশ্রুতি হিসাবে দুই হাজার ১৬২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ সময়ে বর্তমান ও আগের চুক্তি হতে দুই হাজার ৮৫৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড় হয়েছে।
নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, চলতি ২০২১-২২ অর্থ বছরের ফেব্রুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত বিদেশ হতে ১৩ হাজার ৪৪০ দশমিক ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিটেন্স এসেছে।
সৈয়দ আবু হোসেনের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, বিগত এক দশকে বাংলাদেশের ক্রমাগত উচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন কভিড-১৯ এর প্রভাবে সাময়িকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। বিগত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হলেও ২০২০-২১ অর্থ বছরে করোনা ভাইরাসের কারণে তা কমে ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ হয়েছে। তবে করোনা প্রাদুর্ভাবের সাথে সাথে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব, দুরদর্শিতা ও নিরলস কর্মতৎপরতায় বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তেমন বিপর্যায়ের মধ্যে পড়েনি। বরং মহামারির অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবেলায় বিশ্বে এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে।
Posted ৬:৩১ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২৮ মার্চ ২০২২
bankbimaarthonity.com | rina sristy