শনিবার ২৩ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x
প্রবাসের কথা

দেশ-দেশান্তর (শেষ পর্ব)

ওয়াহেদ হোসেন (নিউইয়র্ক থেকে)   |   বুধবার, ২৯ এপ্রিল ২০২০   |   প্রিন্ট   |   739 বার পঠিত

দেশ-দেশান্তর (শেষ পর্ব)

মহাকাশ বিজ্ঞান গবেষণা সংস্থা নাসা’র এ্যারোস্পেস সেন্টারে লেখক

সুযোগ এলো মেয়ের বাড়ি টেক্সাস বেড়াবার। মাসখানেকের সফর। জামাই বাবাজী বললো, “বাবা, কোথায় বেড়াবেন এবার ?” বললাম, “যেখানে নিয়ে যাও।” “হিউস্টন যেতে পারেন বা সমুদ্র।” জীবনে সমুদ্র দেখা কম হয়নি। বললাম, যাবো নাসাতে। ন্যাশনাল এ্যারোনটিক্স এন্ড স্পেস এ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা) ; বাংলায় “জাতীয় বিমানচালনবিদ্যা ও মহাশূন্য প্রশাসন।”

চাঁদ থেকে আনা পাথরখন্ড ছুঁয়ে দেখছেন লেখক

২৮ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখ, জামাই বাবাজী তার মোটরগাড়িতে করে নিয়ে চললো। আর কেউ নেই, যাত্রী আমরা দুজন মাত্র। আমাকে নিয়ে তার মনে আনন্দ। গাড়ির গতিবেগ খুব বেশি। দূরের রাস্তায় চলাচলে গাড়ির গতি থাকতে হয় সহনশীল উচ্চ মাত্রায়। ২০১৮ সালে প্রথম বারের মত বেড়িয়েছিলাম। তখন পাহাড় পর্বত ছিলো আমাদের বেড়াবার স্থান। এবারের বেড়ানো বড়ই মজার।

দর্শনীয় ছবি তুললাম অনেক। চাঁদ হতে আনা একটা ছোট পাথর এক জায়গায় বসানো আছে। সরাসরি সে পাথরে হাত দেয়া যায়। আমিও দিলাম, অপার আনন্দে ভাসলাম কিছুক্ষণ। ১৯৬৯ সালের সেই ১৬ বছরের নেইল আর্মস্ট্রং যেন আমিই। স্পেসশীপের পোষাক পরা নভোচারীর স্ট্যাচুর পাশে দাঁড়িয়ে, স্পেসশীপের পাশে, কাঁচের ঘেরা একটা চত্বর। যেখানে আছে বালি, নুড়িপাথর অর্থাৎ চাঁদের মাটি ; এমনি অনেক কিছুর সাথে নিজেকে জড়িয়ে ছবি। এক জগত হতে অন্য জগতে। স্পেসশীপের মধ্যে ভেসে চলা মানুষ। এ আনন্দ ভিন্নরূপ। মোট নয় ঘন্টা যাতায়াত এবং দু ঘন্টা নাসা দেখা। বিস্তর জায়গা নিয়ে নাসা। কিন্তু ও সব দেখার সুযোগ একেবারেই নেই। যে নাসা আমরা দেখলাম তা সেনিটোরিয়ামের মত একটি নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে।

নাসা স্পেস সেন্টারে মহাকাশচারী স্ট্যাচু

জামাই বাবাজী বললো, কেমন দেখলেন ? বললাম, “সুন্দর। তোমাকে ধন্যবাদ, শোকর আল্লাহর প্রতি।” আমার মেয়ে থাকে সান এন্টোনিও রোজরীজে। এলাকাটা নিরিবিলি। পাশেই বনভূমি। যেখানে রয়েছে হরিনের অবাধ বিচরণ। বিকেলবেলা অনেক হরিণ বেরিয়ে আসে বন হতে। রাস্তা দিয়ে মানুষ হাঁটে। বন্য পশুগুলো লোকালয়ে এগিয়ে আসে মানুষের কাছ থেকে খাবার পেতে। আইন অনুযায়ী বন্যপশু ধরা বা মারা নিষেধ। প্রেমে পড়ে গেলাম এলাকাটির।

১৪ জানুয়ারি ২০২০ সালের ভোরবেলা মেয়ের বাড়ি হতে বেরিয়ে সান এন্টোনিও বিমানবন্দরে উড়োজাহাজে চেপে উড়াল দিলাম। শিকাগো হয়ে নিউইয়র্ক। ছেলেমেয়ের মা আগে থেকেই ছিলো রোজরীজে। ফেরার সময় তাকে সঙ্গে করে নিয়ে এলাম। আকাশে মেঘের আলাদা রকমের খেলা। কখনও মেঘের ওপর দিয়ে, কখনও মেঘের নিচ দিয়ে, কখনও মেঘের মাঝ দিয়ে এগুচ্ছে বিমান।

উড়োজাহাজ থেকে দৃশ্যমান পেঁজা তুলোর মত মেঘমালা

আকাশে মেঘমালার মধ্যে সমুদ্রের হাতছানি। আকাশের গায়ে কখনও ডাঙ্গা, কখনও সমুদ্রের পানির মত মনে হয় নীলাকাশের দৃশ্যপট। আকাশেও রঙের খেলা, রঙধনুর সব রং দেখা গেলো। মাঝে মাঝে নিচে দালানকোঠায় ঠাঁসা সুরম্য নগরীর ছায়াচিত্র। যতটুকু সম্ভব ক্যামেরাবন্দী করলাম। রঙের খেলার সাথে যোগ হয়েছে অনন্ত আকাশে সবুজ আবরণ। ওগুলো বনভূমি। যথারীতি বিকেল ৫টায় ছেলের বাড়ি এসে পৌঁছলাম।

 

 

লেখক: আমেরিকায় অবস্থানরত বাংলাদেশী সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৫:০০ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২৯ এপ্রিল ২০২০

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

দেশ-দেশান্তর
(1187 বার পঠিত)

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।