নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ০৭ আগস্ট ২০২০ | প্রিন্ট | 345 বার পঠিত
অনেকদিন থেকেই খারাপ অবস্থায় রয়েছে বেসিক ব্যাংকের অবস্থা। বছরের পর বছর ধরে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় পড়ে আছে হাজার হাজার অভিযোগ। এর ফলে আটকে আছে কোটি কোটি টাকা। ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চুর সময়ে ব্যাংকটির অবস্থা নাজুক হয়ে পড়ে। ছরের পর বছর এ ব্যাংকের অডিট নিষ্পত্তি হয় না। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তাগিদ আর সরকারি হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সুপারিশ কোনো কাজে আসে না।
জানা গেছে, গত জুন পর্যন্ত বেসিক ব্যাংক লিমিটেডের প্রায় ২ হাজার অডিট আপত্তি রয়েছে। যার মধ্যে বাণিজ্যিক অডিট ৮৫০টি, স্থানীয় রাজস্ব অডিট ২৬টি, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরীক্ষা ৪৬৬টি এবং অভ্যন্তরী নিরীক্ষা ৫৭৬টি। এসব অডিট আপত্তি দীর্ঘদিন ধরেই ঝুলে রয়েছে। যেমন, বাণিজ্যিক অডিটের ৮৫০টির মধ্যে ৫ বছর বা তার বেশি সময় অনিষ্পন্ন অবস্থায় আছে ৬৬৭টি অডিট আপত্তি। আর বাকিগুলোরও বয়স তিন বছর হয়েছে।
বাণিজ্যিক অডিট আপত্তিগুলোকে মোট ৯ হাজার ৪৫৫ কোটি টাকার হিসাব অনিষ্পন্ন অবস্থায় রয়েছে। আর স্থানীয় রাজস্ব অডিট আপত্তিতে সাড়ে ৩ কোটি টাকার কোনো নিষ্পত্তি হয়নি। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক ও অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উল্লেখিত আপত্তিতে কোনো প্রকার টাকার অংশ উল্লেখ করা হয় না। এসব টাকা যোগ করলে অন্য আপত্তির চেয়ে বেশি হবে বলেই জানা গেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, আইনগত সমস্যা, সমন্বয়ের অভাব, নথিপত্র হারানোসহ বিভিন্ন কারণে অডিট আপত্তি তৈরি হয়। এর পাশাপাশি অনেক বিষয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতিও থাকে। ফলে দীর্ঘদিন ধরে অডিট আপত্তিগুলো নিষ্পত্তি হচ্ছে না। এতে যেমন—প্রতিষ্ঠানগুলোর হালনাগাদ আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না, তেমনি একই হিসাব অনেক বছর ধরে চালিয়ে যেতে হচ্ছে। অনেক অনিয়মের সুরাহা হচ্ছে না।
এদিকে নানা অনিয়মে বেসিক ব্যাংকের অবস্থা খুবই খারাপ। ২০০৯ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে চার বছরে বেসিক ব্যাংক থেকে ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা বের করে নেওয়া হয়। এ সময়ে এক ধরনের লুটপাট করা হয়েছে। যা ব্যাংকিং খাতের জন্য কলঙ্কজনক অধ্যায়। এ সময়ে অন্যায় অনিয়ম নিয়ে যত তদন্ত হয়েছে সবগুলোতে ব্যাংকটির তৎকালীন চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চুকে দায়ী করা হয়। কেবল ২০১৫ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন এই কেলেঙ্কারি নিয়ে ৫৬টি মামলা দায়ের করে। যদিও অন্য কোনো পরিচালককে এ বিষয়ে দায়ী করা হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংকটি ধুঁকে ধুঁকে চলছে। আর সেসব অন্যায়ের দায় নিতে হচ্ছে বর্তমান কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। গত ফেব্রুয়ারি থেকে অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সঙ্গে সমন্বয় করে তাদের বেতন ও আনুষঙ্গিক সুবিধা ১০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো হয়েছে।
Posted ১০:৫৮ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০৭ আগস্ট ২০২০
bankbimaarthonity.com | saed khan