নিজস্ব প্রতিবেদক | বুধবার, ১৭ জুন ২০২০ | প্রিন্ট | 346 বার পঠিত
পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়লেও ক্রমাগতভাবে কমছে বাংলাদেশের এফডিআই। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) বেশ বেড়েছে। আরেক পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারে বিনিয়োগ এসেছে বাংলাদেশের চেয়ে বেশি। রপ্তানি বাজারে আমাদের অন্যতম প্রতিযোগী দেশ কম্বোডিয়ায় এফডিআইও বেড়েছে এবং দেশটি স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পেরেছে।
জাতিসংঘের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংস্থা আঙ্কটাড মঙ্গলবার (১৬ জুন) বিশ্ব বিনিয়োগ রিপোর্ট-২০২০ প্রকাশ করেছে। যেখানে বাংলাদেশসহ সব দেশের ২০১৯ সালের বিদেশি বিনিয়োগের পরিসংখ্যান রয়েছে। রিপোর্টে ২০২০ সালে পৃথিবীতে বিনিয়োগের পরিস্থিতি কী হতে পারে তার অনুমান রয়েছে।
আঙ্কটাড বলেছে, করোনা মহামারির কারণে এ বছর বিশ্বে বিনিয়োগ কমবে ৪০ শতাংশ। আগামী বছর কমতে পারে ৫ থেকে ২০ শতাংশ। ২০২২ সালে গিয়ে পরিস্থিতির পুনরুদ্ধার হতে পারে। আঙ্কটাডের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে বাংলাদেশে এফডিআই এসেছে ১৫৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার, যা গত ৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। আগের বছর ২০১৮ সালে বিদেশি বিনিয়োগ এসেছিল ৩৬১ কোটি ৩০ লাখ ডলার। ওই বছর বাংলাদেশে একক বছরে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ আসে। এর মধ্যে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করে জাপানের কোম্পানি জাপান টোব্যাকো। আকিজ গ্রুপের তামাক ব্যবসা কেনা বাবদ প্রায় ১৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগ জাপান টোব্যাকোর।
গত বছর বিদেশি বিনিয়োগ কমে যাওয়ার কারণ কী হতে পারে জানতে চাইলে গবেষণা সংস্থা সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, আমরা যে প্রক্রিয়ায় বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছি তার চেয়ে আঞ্চলিক অন্য দেশ এগিয়ে গেছে। ভারতের কথাই ধরা যাক। ভারত গত বছর এফডিআই আকর্ষণে সফল হয়েছে। আঞ্চলিক বিবেচনায় বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সাধারণত দেখা যায়, একটি দেশে যখন বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারে, তখন পাশের আরেকটি দেশ পিছিয়ে যেতে পারে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে বেশকিছু অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজ চলছে। তবে এর মধ্যে যদি দু’একটা পূর্ণাঙ্গভাবে অপারেশনে চলে আসত তাহলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের প্রতি আলাদা বার্তা যেত। ওয়ানস্টপ সার্ভিস চালু হলেও শতাধিক সেবার মধ্যে ২০টির মতো চালু হয়েছে। বর্তমানে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে আরও বেশি বেগে এগোতে হবে।
আঙ্কটাডের রিপোর্টে বাংলাদেশে এফডিআই কমে যাওয়ার কারণ উল্লেখ করা হয়নি। শুধু বলা হয়েছে, আগের বছরের বড় অঙ্কের বিনিয়োগের সমন্বয় ঘটেছে। বাংলাদেশে গত বছর তৈরি পোশাক খাতে কোরিয়া, চীন ও হংকং থেকে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ এসেছে বলে এতে উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া গত বছর নতুন বিনিয়োগের ঘোষণা এসেছে ১৫০ কোটি ডলারের মতো, যা পরবর্তীতে বাস্তবে রূপ নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তুলনামূলক চিত্র: গত বছর দক্ষিণ এশিয়ায় বিনিয়োগ এসেছে ৫ হাজার ৭০০ কোটি ডলার, যা আগের বছরের চেয়ে ১০ শতাংশ বেশি। ভারতে এসেছে ৫ হাজার ২০০ কোটি ডলার। ভারতে আগের বছরের চেয়ে বেড়েছে ২০ শতাংশ। এলডিসিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি এফডিআই এসেছে কম্বোডিয়ায় ৩৭০ কোটি ডলার। মিয়ানমারে এসেছে ২৮০ কোটি ডলার।
কেমন যাবে ২০২০: ২০১৯ সালে সারাবিশ্বের বিদেশি বিনিয়োগের অন্তঃপ্রবাহের পরিমাণ ছিল ১ দশমিক ৫৪ ট্রিলিয়ন ডলার। এ বছর এক ট্রিলিয়ন ডলারের নিচে নামবে। আঙ্কটাডের মহাসচিব মুখিশা কিতুয়ি বলেন, ভবিষ্যৎ খুবই অনিশ্চিত। পরিস্থিতি নির্ভর করবে বর্তমান স্বাস্থ্য সংকটের স্থায়িত্ব ও অতিমারির অর্থনৈতিক সংকট নিরসনে বিভিন্ন নীতির কার্যকারিতার ওপর। শীর্ষ পর্যায়ের ৫ হাজার কোম্পানি তাদের আয় গড়ে ৪০ শতাংশ কমে যাবে বলে অনুমান করেছে।
Posted ৭:৪৮ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৭ জুন ২০২০
bankbimaarthonity.com | saed khan