নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ০১ এপ্রিল ২০২৩ | প্রিন্ট | 111 বার পঠিত
ঘুষ, দুর্নীতি, জালিয়াতি, প্রতারণা এবং বিদেশে অর্থপাচারকারী প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহর নেতৃত্বাধীন কমিশন। বর্তমান কমিশন সম্প্রতি হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়নে এবার অনেক বেশি কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়ে এগুচ্ছেন।
অনেক প্রভাবশালী দুর্নীতিবাজ দেশের টাকা বিদেশে পাচার করেছে, ব্যবসার আড়ালে আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা বিদেশে নিয়ে গেছে। যদিও পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে মাত্র একটি অপরাধ খতিয়ে দেখার এখতিয়ার দুদকের। এরপরও দুদকের কাজের গতি বাড়ানোর জন্য নানা উদ্যোগ নিচ্ছে।
এরমধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ঢাকা ওয়াসার প্রভাশালী এমডি প্রকৌশলী তাকসিন এ খানের বিরুদ্ধে টানা ১৩ বছরের নানা অনিয়ম, কমিশন ও লভ্যাংশ ভাগাভাগি, দুর্নীতি, নিয়োগ বাণিজ্য, যুক্তরাষ্ট্রে একাধিক বাড়ি ক্রয়সহ আলোচিত অভিযোগ নিয়ে হাইকোর্টের নিদেশনার আলোকে দুদকের অনুসন্ধান পুরোদমে এগিয়ে চলছে বলে জানা যায়। এমপি আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপের বিরুদ্ধে বিদেশে একাধিক বাড়ি ক্রয় এবং অর্থ পাচারের বিষয়ে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের অভিযোগটিও গুরুত্বের সাথে অনুসন্ধান করছে দুদক। এছাড়াও সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ি ক্রয় এবং অর্থ পাচারের বিষয়টি নিয়ে দুদকের অনুসন্ধান ও তদন্ত চলছে।
দুদক চেয়ারম্যান ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের হলফনামায় উল্লেখিত সম্পদ,দায় দেনাসহ তাদের সম্পদের বিষয়ে বিশেষ নজরদারি করর। এরবার সব প্রার্থীর হলফনামার সম্পদ বিবরণী খতিয়ে দেখবে দুদক। গত ২১ মার্চ দুদক কার্যালয়ে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে কঠোর পদক্ষেপের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এরআগে গত ২০ মার্চ রাতে দুদকের ২০২২ সালে বার্ষিক প্রতিবেদন মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে হস্তান্তরকালে দুদকের চেয়ারম্যানকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আরো কঠোর অবস্থান নিতে পরামর্শ দিয়েছেন।’ওই সময় দুদক স্বচ্ছতার সঙ্গে সাধ্যমতো কাজ করছেন বলে রাষ্ট্রপতিকে অবগত করা হয়।
সূত্র মতে, দুদকের ২০২২ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯ হাজার ৩৩৮টি অভিযোগ জমা পড়ে। এসব অভিযোগ যাচাই শেষে ৯০১টি অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্যে নেওয়া হয়। দুদকের তফসিলভুক্ত নয়, এমন ৩ হাজার ১৫২টি অভিযোগের বিষয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ২০২১ সালে দুদকে ১৪ হাজার ৭৮৯টি অভিযোগের মধ্যে ৫৩৩ অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য নেওয়া হয়। আর দুই হাজার ৮৮৯টি অভিযোগের বিষয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। দুদকের ২০২২ সালে চার্জশিট অনুমোদন হয়েছে ২২৪টি, মামলা হয়েছে ৪০৬টি, ফাঁদ মামলা হয়েছে মাত্র ৪টি। ২০২২ সালে ৩৪৬টি দুর্নীতি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। প্রতিবেদনে দেশের ২৯টি বিশেষ জজ আদালতে দুদকের পক্ষে ১২০ জন আইনজীবী মামলা পরিচালনা করেন। ২০২২ সালে সারাদেশে আদালতে তিন হাজার ৩২৬টি বিচারাধীন মামলা ছিল। এর মধ্যে ৪১৯টি মামলার বিচারকার্য উচ্চ আদালতের আদেশে স্থগিত থাকায় বাকি দুই হাজার ৯১০টি মামলার বিচারকাজ চলমান ছিল।এসব মামলার মধ্যে ২০২২ সালে কমিশন আমলের ৩০৭টি এবং ব্যুরো আমলের ৩৯টিসহ মোট ৩৪৬টি নিষ্পত্তি হয়। নিষ্পত্তিকৃত মামলার মধ্যে কমিশন আমলের ১৯৭টি এবং ব্যুরো আমলের ১৪টি মামলায় আসামিদের সাজা হয়েছে। আর কমিশনের আমলের ১১০টি এবং ১৫টি মামলায় আসামিরা খালাস পেয়েছেন।
Posted ৭:০১ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০১ এপ্রিল ২০২৩
bankbimaarthonity.com | rina sristy