নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ১৮ জুন ২০২২ | প্রিন্ট | 204 বার পঠিত
২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের নির্মাণ তথা আবাসন খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে দাবি করেছে আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)।
সংগঠনটি বলছে, প্রস্তাবিত বাজেটে লিফটের কর ১৯ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে লিফট আমদানিতে শুল্ক কর ১১ থেকে এক লাফে ১৯ শতাংশ বেড়ে ৩০ শতাংশে উঠেছে। হঠাৎ এই মূল্য বৃদ্ধির ফলে ফ্ল্যাটের দাম আরও বাড়বে।
শনিবার (১৮ জুন) রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে ‘ঘোষিত জাতীয় বাজেট ২০২২-২০২৩ সম্পর্কিত রিহ্যাবের প্রতিক্রিয়া শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে’ এসব কথা বলেন সংগঠনটির সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রিহ্যাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইন্তেখাবুল হামিদ, সহ-সভাপতি (প্রথম) কামাল মাহমুদ, সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম দুলাল, লায়ন শরীফ আলী খান এবং প্রকৌশলী মোহাম্মদ সোহেল রানা।
সংবাদ সম্মেলনে রিহ্যাব জানায়, আবাসন খাতের অন্যতম প্রধান উপকরণ এমএস রড। গত কয়েক মাস দফায় দফায় দাম বৃদ্ধি পেয়েছে এ রডের। রডের দাম এখন আকাশ ছোঁয়া। বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে আমরা চেয়েছিলাম, ইস্পাতের কাঁচামালের ওপর শুল্ক কর কমানো হোক। সেটি না করে উল্টো বিক্রি পর্যায়ে প্রতি টন বিলেটের ওপর ২০০ টাকা ও রডে ২০০ টাকা মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) বাড়ানো হয়েছে। ফলে রডের দাম আরও বাড়বে।
ঘোষিত বাজেটে লিফটের কর ১৯ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ, মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ১৫ শতাংশ, এআইটি ৫ শতাংশ ও এটি ৫ শতাংশ। এতে লিফট আমদানিতে শুল্ক-কর ১১ থেকে এক লাফে ১৯ শতাংশ বেড়ে ৩০ শতাংশে উঠেছে। বিভিন্ন ধরনের তারের বিদ্যমান শুল্ক ৫ শতাংশ হতে বৃদ্ধি করে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের পাইপের ক্ষেত্রে শুল্ককর ১৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে, জিআই ফিটিংসের বিপরীতে ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। টিউবসহ সিমিলার পণ্যের ওপর শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এলোমনিয়া ফয়েলের ওপর সম্পূরক শুল্ক আরোপ ছিল না। কিন্তু ঘোষিত বাজেটে এটার ওপর ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন বলেন, আমরা রড, সিমেন্ট, বালু, ইট, পাথরসহ ১০-১১টা নির্মাণ সামগ্রীর ওপর স্টাডি করে দেখেছি কয়েক মাসের মূল্য বৃদ্ধিতে নতুন ও নির্মাণাধীন প্রকল্পসমূহে প্রতি বর্গফুটের নির্মাণ ব্যয় প্রায় ৫০০ টাকা করে বৃদ্ধি পেয়েছে। ৫০০ টাকা নির্মাণ ব্যয় বৃদ্ধি পেলে প্রতি বর্গফুটের জন্য গ্রাহককে বাড়তি বহন করতে হবে প্রায় ১ হাজার টাকা। কারণ আমরা ডেভেলপাররা অধিকাংশ জমি গ্রহণ করি ৫০: ৫০ রেশিওতে। বাড়তি দাম `সবার জন্য আবাসন` এ স্লোগানকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে এবং অনেকের আবাসনের স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে।
রিহ্যাব নেতারা বলেন, ঘোষিত বাজেটের বাড়তি চাপ সংকট আরও বৃদ্ধি করবে এবং এই সেক্টর আরও ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে যাবে। প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত ২ কোটি মানুষের আয়ের এ খাতটি আরও মুখ থুবড়ে পড়তে পারে। দেশের উন্নয়নের স্বার্থে, মানুষের মৌলিক অধিকার পূরণের স্বার্থে আবাসন খাতকে গতিশীল করার আহ্বান জানাই। সবার জন্য আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য জাতীয় বাজেট ২০২২-২৩ পাশ করার আগে রিহ্যাবের দাবি এবং প্রস্তাবনাসমূহ বিবেচনা করার জন্য আপনাদের মাধ্যমে আবারও প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, এনবিআর চেয়ারম্যানসহ জাতীয় বাজেট ২০২২-২৩ এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করছি।
Posted ৬:৫৫ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১৮ জুন ২০২২
bankbimaarthonity.com | rina sristy