
বিশেষ প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | প্রিন্ট | 123 বার পঠিত
বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশনের (বিআইএ) নির্বাহী কমিটির নির্বাচণ উপলক্ষে আচরণ বিধির একটি খসড়া প্রকাশ করেছে সংগঠনটি। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিআইএ’র নির্বাচন বোর্ডের সচিব মোঃ ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত এই খসড়ায় মতামত গ্রহণের জন্য বীমা কোম্পানিগুলোর মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এ মতামত প্রদানের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
২৫ দফা বিশিষ্ট এই খসড়া আচরণ বিধিমালায় বলা হয়েছে,
(১) নির্বাচন বোর্ড ও নির্বাচন আপীল বোর্ড বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা ১৯৯৪ এবং এই আদেশের বিধান অনুযায়ী নির্বাচনের সকল কার্যক্রম পরিচালনা করিবে। কার্যনির্বাহী কমিটি নির্বাচন সংক্রান্ত কোন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করিতে পারিবে না।
(২)নির্বাচনের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের উদ্দেশ্যে বাণিজ্য সংগঠন, নির্বাচন বোর্ডের প্রস্তাব অনুযায়ী এক বা একাধিক নির্বাচনী কর্মকর্তা নিযুক্ত করিবে। তবে কোন কার্যনির্বাহী সদস্য, প্রার্থী কিংবা মনোনয়ন পত্রে প্রার্থীর প্রস্তাবক ও সমর্থক কাহাকেও নির্বাচন কর্মকর্তা নিয়োগ করা যাইবে না ।
(৩) নির্বাচন তফসিল জারী করার পর হইতে নির্বাচন সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত নিম্নলিখিত আচরণ বিধি প্রযোজ্য হইবে যাহা লংঘিত হইলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়া তাঁহার প্রার্থীপদ বাতিল করা সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে, যথা :-
নির্বাচন উপলক্ষে বিজ্ঞাপন প্রদান, কোন প্রকার পোষ্টার, চিকা অথবা ব্যানার ব্যবহার করা যাইবে না। মিছিল করা অথবা শ্লোগান দেওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকিবে। ভোটারদের নিকট কেবলমাত্র সাদাকালো এ ফোর সাইজের প্রচারপত্র প্রেরণ করা যাইবে, তবে কোন রকম উপঢৌকন প্রেরণ করা যাইবে না। কোন প্রার্থী একক অথবা দলবদ্ধভাবে কোন হোটেল, রেস্তোরা বা কমিউনিটি সেন্টারে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্বাচনী ও পরিচিতি সভা অনুষ্ঠান, ভোটারদের আপ্যায়নের আয়োজন এবং উহাতে অংশ গ্রহণ করিতে পারিবেন না। নির্বাচন অনুষ্ঠানের ৪৮ ঘণ্টা পূর্ব হইতে সকল প্রকার নির্বাচনী প্রচারণা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকিবে।
নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিন নির্বাচন বোর্ড কর্তৃক ঘোষিত ভোট কেন্দ্রের ১০০ গজের মধ্যে প্রার্থী অথবা তাহার সমর্থকদের সমাবেশ, জটলা, ব্যাজ ধারণ ও পোষ্টার বহন সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকিবে।
(৪) এই নির্বাচন আচরণ বিধির এক বা একাধিক বিধান লংঘিত হইলে অথবা এই বিষয়ে কোন অভিযোগ উত্থাপিত হইলে সংশ্লিষ্ট পক্ষকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়া নির্বাচন বোর্ড এই বিধি মোতাবেক সিদ্ধান্ত প্রদান করিবে। নির্বাচন বোর্ডের উক্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপত্তি থাকিলে সংশ্লিষ্ট পক্ষ আপীল বোর্ডের নিকট সাথে সাথে আপীল দায়ের করিবে।
(৫) নির্বাচন বোর্ড ভোট গ্রহণ কক্ষে একই সঙ্গে প্রবেশের জন্য ভোটারের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করিবেন। নির্বাচন বোর্ড, নির্বাচন কর্মকর্তা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যবৃন্দ, নির্বাচনী প্রার্থী এবং কেবলমাত্র ভোট দানের জন্য আগত ভোটার ভিন্ন অন্য কাহারও ভোট গ্রহণ কক্ষে প্রবেশাধিকার থাকিবে না ।
(৬) ভোট চিহ্ন প্রদানের জন্য নির্ধারিত গোপন কক্ষে এক সঙ্গে একাধিক ভোটারের/ব্যক্তির প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকিবে। ভোট গ্রহণ কক্ষের বাহিরে ব্যালট পত্র নেওয়া যাইবে না।
(৭) প্রত্যেক ভোটারদের সশরীরে এসে ভোট প্রদান করিতে হইবে এবং ভোট প্রদান কারীকে অবশ্যই এনআইডি কার্ড সঙ্গে আনিতে হইবে।
(৮) নির্বাচন প্রার্থীবৃন্দ ভোট গ্রহণ এলাকা ও কক্ষে কেবল মাত্র নির্বাচন বোর্ড কর্তৃক সংরক্ষিত স্থান / আসনে অবস্থান করিতে পারিবেন এবং কেবল মাত্র নির্বাচন বোর্ডের অনুমতি গ্রহণ পূর্বক একমাত্র ভোট দানের উদ্দেশ্যে ভোট প্রদান কক্ষের সংশ্লিষ্ট এলাকায় বিধি মোতাবেক প্রবেশ করিতে পারিবেন।
(৯) কোন প্রার্থী, ভোট গ্রহণ কক্ষে কোন ভোটারের সংগে কোন প্রকার আলাপ ও প্রচারনায় লিপ্ত হইতে পারিবেন না।
(১০) চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত নহে কিংবা জাল ভোট দান কিংবা ইতোমধ্যে ভোট দিয়াছেন, এমন ভোটারের বিরুদ্ধে অথবা অন্য কোন আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে প্রার্থীগণ নির্বাচন বোর্ড ও নির্বাচন কর্মকর্তার নিকট আপত্তি দাখিল করিতে পারিবেন।
১১) নির্বাচন বোর্ড এইরূপে দাখিলকৃত আপত্তি, অভিযোগের সুরাহা করত: প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।
(১২) নির্বাচন বোর্ড কিংবা নির্বাচনী কর্মকর্তার নিষেধ বা সতর্কীকরণ সত্ত্বেও কোন প্রার্থী ভোট গ্রহণ কক্ষে আলাপচারিতা ও প্রচারনায় লিপ্ত হইলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়া উপদফা (৪) এ বর্ণিত বিধান অনুসরণপূর্বক তাহার প্রার্থীপদ বাতিল করা যাইবে ।
১৩) নির্বাচন বোর্ড ব্যালট পত্রের ফরম নির্ধারন করিবে’। ব্যালট পত্রের প্রথম অংশে ব্যালট পত্র নম্বর মুদ্রিত থাকিবে এবং ব্যালট পত্র আবশ্যিকভাবে বানিজ্য সংগঠনের সীল ও নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর সম্বলিত হইতে হইবে। অন্যথায় উহা গ্রহণযোগ্য হইবে না ।
১৪) ভোটার তালিকায় ভোটার নম্বর, ভোটারের নাম, তাহার প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানা বিস্তারিত ভাবে উল্লেখ করিতে হইবে। সংগঠনের দপ্তরে রক্ষিত সদস্য প্রতিষ্ঠান কর্তৃক মনোনীত সদস্যের নমুনা স্বাক্ষরের ভিত্তিতে অথবা নির্বাচন বোর্ড কর্তৃক প্রদত্ত ছবি সম্বলিত পরিচিতি পত্রের মাধ্যমে ভোটার সনাক্ত করা হইবে। উক্ত পরিচিতি পত্র না থাকিলে অথবা স্বাক্ষরে গরমিল হইলে ভোট প্রদান করা যাইবে না ।
(১৫) পরিচিতি পত্র অথবা নির্বাচন বোর্ড কর্তৃক সংগঠনের দপ্তরে রক্ষিত নমুনা স্বাক্ষরের ভিত্তিতে সন্দেহাতীতরূপে ভোটার সনাক্ত করা হইলে নির্বাচনী কর্মকর্তা ভোটারের নাম ও নম্বর লিপিবদ্ধ করিয়া ব্যালট পত্রের প্রথম অংশ উক্ত ভোটারের স্বাক্ষর, নিজ স্বাক্ষর ও সিলসহ যথাযথভাবে পূরণকরত: ব্যালট পত্রের অপর অংশটি সংশ্লিষ্ট ভোটারকে প্রদান করিবেন এবং চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় উক্ত ভোটারের নাম এর বিপরীতে ব্যালট পত্র নম্বর লিপিবদ্ধ করিয়া ভোটাধিকার প্রয়োগ রেকর্ড করিবেন। একজন ভোটারকে কোন অবস্থাতেই একাধিক ব্যালট পত্র প্রদান করা যাইবে না।
(১৬) শারীরিকভাবে অসমর্থ কোন ভোটার, সাহায্যকারী ব্যতীত ভোট দানে অপারগ হইলে নির্বাচন বোর্ড নির্বাচন কর্মকর্তাবৃন্দের মধ্য হইতে একজনকে ভোট প্রদান কক্ষে উক্ত ভোটারের সাহায্যকারী নিযুক্ত করিবেন ।
(১৭) ভোট গ্রহণ প্রারম্ভের অন্তত ১৫ মিনিট পূর্বে নির্বাচন বোর্ড নির্বাচন প্রার্থীগণের (যদি উপস্থিত থাকেন) সম্মুখে নিরীক্ষণ করিয়া শূন্যতার নিশ্চয়তার বিধান পূর্বক ব্যালট বাক্সটি বন্ধ ও সীল করিবেন এবং নির্বাচন বোর্ড, প্রার্থী ও ভোটারদের নিকট দৃশ্যমান একটি উপযোগী স্থানে স্থাপন করিবেন।
(১৮) একটি ভোট গ্রহণ কক্ষে একই সংগে কোন গ্রুপের সংরক্ষিত আসনে নির্বাচনের জন্য একাধিক ব্যালট বাক্স ব্যবহার করা যাইবে না। একটি ব্যালট বাক্স পূর্ণ কিংবা আরও ভোট গ্রহণের জন্য নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যানের নিকট ব্যবহারে অনুপযোগী প্রতীয়মান হইলে তিনি সংশ্লিষ্ট ব্যালট বাক্সটি সীল করিয়া নিরাপদ ও দৃশ্যমান স্থানে সংরক্ষণ করত: উহার স্থলে অপর একটি শূন্য ও সীলকৃত ব্যালট বাক্সে ভোট গ্রহণ করিবেন।
(১৯) ভোট গ্রহণের বিরতিকালে অথবা নির্বাচন বোর্ড কর্তৃক কেবল মাত্র সাময়িক প্রয়োজনে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হইলে ব্যালট বাক্স সীল করিয়া নির্বাচন বোর্ড কর্তৃক ভোট গ্রহণ পুনরায় আরম্ভ না করা পর্যন্ত সংরক্ষিত থাকিবে।
(২০) নির্বাচনী তফসিলে নির্ধারিত তারিখ ও সময়ের মধ্যে ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত সকল ভোটার ভোট দান করিতে পারিবেন ।
(২১) উপদফা (২০) এ বর্ণিত ভোট প্রদান সমাপ্ত হইলে ভোট গ্রহণ বন্ধ করা হইবে। অতঃপর ভোট গণনা শুরু হইবে এবং সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত একটানা চলিতে থাকিবে। প্রার্থীগণ ভোট গণনার সময় উপস্থিত থাকিতে পারিবেন। তবে কোন প্রার্থী ভোট গণনার সময় নিজে উপস্থিত না থাকিলে নির্বাচন বোর্ডের পূর্বানুমতিক্রমে তাঁহার পক্ষে একজন প্রতিনিধি নিযুক্ত করিতে পারিবেন।
(২২) নির্বাচন বোর্ড ভোট গণনার উদ্দেশ্যে ব্যালট বাক্স হইতে ব্যালট পত্র বাহির করিয়া প্রাপ্ত ব্যালট পত্রের সংখ্যা লিপিবদ্ধ করত: ভোট গণনা শুরু করিবে।
নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে ব্যালট পত্র বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে, যথাঃ-
(ক) নির্বাচনী কর্মকর্তার স্বাক্ষর ও সীল না থাকিলে ;
(খ) নির্ধারিত সংখ্যক পদের অতিরিক্ত অথবা কম সংখ্যক প্রার্থীকে ভোট প্রদান করা হইলে; এবং
(গ) কাটাকাটি, ওভার রাইটিং সম্বলিত অস্পষ্ট ও ব্যালট পত্রের নির্দেশাবলী লঙ্ঘন করিয়া পূরণকৃত ব্যালট পত্র। নির্বাচন বোর্ড উপর্যুক্ত বাতিলকৃত ব্যালট পত্র বান্ডিল বদ্ধ করিয়া উহার সংখ্যা লিপিবদ্ধ করিবে।
(২৩) নির্বাচন বোর্ড বৈধ ব্যালট পত্রসমূহ হইতে প্রত্যেক প্রার্থীর পক্ষে প্রদত্ত ভোট গণনা করিয়া লিপিবদ্ধ করিবে। এই ভোট গণনায় নির্বাচন বোর্ড ও নির্বাচনী কর্মকর্তা ব্যতীত অন্য কেহ অংশ গ্রহণ করিতে পারিবেন না।
(২৪) নির্বাচন বোর্ড ভোট গ্রহণ ও গণনা শেষে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা ও প্রকাশ করিবে। অতঃপর নিম্নলিখিত নথিপত্রসমূহ পৃথকভাবে সীল স্বাক্ষরসহ বান্ডিলবদ্ধ করিয়া নির্বাচন বোর্ড ও নির্বাচন আপীল বোর্ডের যৌথ তত্ত্বাবধানে বিশেষ হেফাজতে সংরক্ষণ করিবে, যথা :-
(ক) অব্যবহৃত ব্যালট পত্র (ক্রমিক নং ও সংখ্যা উল্লেখ করিতে হইবে)
(খ) বৈধ ব্যালট পত্র (সংখ্যা উল্লেখ করিতে হইবে)।
(গ) বাতিল ঘোষিত ব্যালট পত্র (সংখ্যা উল্লেখ করিতে হইবে)।
(ঘ) ব্যালট বহির সহিত সংযুক্ত সরবরাহকৃত ব্যালট পত্রের প্রথম অংশ (ক্রমিক নং ও সংখ্যা উল্লেখ করিতে হইবে)।
(ঙ) গণনাকারী ও নির্বাচন বোর্ড কর্তৃক স্বাক্ষরিত ভোট গণনা পত্রসমূহ ।
(২৫) উপ-দফা (২৪) এর অধীনে সংরক্ষিত উপর্যুক্ত নথিপত্রসমূহ কেবলমাত্র সংশ্লিষ্ট
প্রার্থীর অথবা প্রার্থীবৃন্দের উপস্থিতিতে নির্বাচন আপীল বোর্ড, এফবিসিসিআই আর্বিট্রেশন ট্রাইব্যুনাল, সরকার অথবা আদালতের নির্দেশ মোতাবেক পরীক্ষার উদ্দেশ্যে বান্ডিল মুক্ত করা যাইবে।
Posted ৭:৪২ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
bankbimaarthonity.com | rina sristy