শনিবার ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বীমা কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী নিয়োগ প্রবিধানমালার সংশোধন

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বুধবার, ০৩ জানুয়ারি ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   185 বার পঠিত

বীমা কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী নিয়োগ প্রবিধানমালার সংশোধন

নানামুখী পরিবর্তন নিয়ে বীমা কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ ও অপসারণ প্রবিধানমালা সংশোধন করা হয়েছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদনক্রমে ও প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) সংশোধিত প্রজ্ঞাপনটি রোববার (২৪ ডিসেম্বর) গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। বীমা আইন ২০১০ এর ১৩ নং আইনের ধারা ১৪৮ এর ক্ষমতাবলে ধারা ৮০ তে উল্লেখিত মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ ও অপসারণ প্রবিধানমালা-২০১২তে বেশ কিছু সংশোধন করা হয়।

নতুন এই প্রজ্ঞাপন অনুসারে, মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগের শিক্ষাগত যোগ্যতা হবে- কোন স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কমপক্ষে ২য় শ্রেণী বা সমমানের সিজিপিএ (কমুলেটিভ গ্রেড পয়েন্ট এভারেজ)সহ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অথবা ২য় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএসহ চার বছর মেয়াদী স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি; তবে বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রীধারীদের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন হতে সমতাকরণ সার্টিফিকেট দাখিল করতে হবে। এছাড়া, কোন বীমা কোম্পানিতে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কোনো ব্যক্তির নিয়োগ ইতিপূর্বে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত হয়ে থাকলে তার ক্ষেত্রে উল্লিখিত শিক্ষাগত যোগ্যতা ও তৃতীয় শ্রেণী শিথিলযোগ্য হবে।

এর আগে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে ৩য় শ্রেণির স্নাতক ডিগ্রিও গ্রহযোগ্য ছিল। অর্থাৎ স্নাতকের ফলাফলের বিষয়ে কোন সীমা নির্ধারণ ছিল না। এমনকি বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রির গ্রহণযোগ্যতার বিষয়েও কোন বক্তব্য ছিল না।

প্রজ্ঞাপনে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার কর্ম অভিজ্ঞতা সর্ম্পকে বলা হয়েছে- ইতোপূর্বে কোন বীমা কোম্পানিতে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে বা এর অব্যবহিত নিম্নপদে অন্যূন ২ বছরের অভিজ্ঞতাসহ বীমা ব্যবসায় অন্যূন ১২ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা; তবে কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত মনে করলে উল্লেখিত শর্তের ব্যত্যয় ঘটিয়ে সরকার বা সরকারি কোন দপ্তর, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট কোনো বীমা কোম্পানি যার ৫০শতাংশের অধিক শেয়ারের মালিকানা সরকার বা সরকার সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তর, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের রয়েছে এরূপ বীমা কোম্পানির ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকভাবে সুপরিচিত বহজাতিক বীমা কোম্পানিতে উর্ধ্বতন ব্যবস্থাপনা পদে অন্যূন ১০ বছরের বীমা বিষয়ক কাজে সরাসরি অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তির ক্ষেত্রে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা পদে নিয়োগ অনুমোদন করতে পারবে।

এর আগে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে অব্যবহিত নিম্নপদে কমপক্ষে ৩ বছরসহ বীমা ব্যবসায় ১৫ বছরের কর্ম অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হতো। নতুন প্রজ্ঞাপনে অব্যবহিত নিম্নপদে ২ বছরের অভিজ্ঞতাসহ ও বীমা ব্যবসায় অন্যূন ১২ বছরের কর্ম অভিজ্ঞতার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া, অ্যাকুয়ারিয়াল বিজ্ঞানে ডিগ্রিধারী, ইনিস্টিটিউট অ্যান্ড ফ্যাকাল্টি অব অ্যাকচুয়ারিজ, ইউকে বা সোসাইটি অব অ্যাকচুয়ারিজ, ইউএসএ এর ফেলো বা অ্যাসোসিয়েট অথবা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক তালিকাভূক্ত কোন অ্যাকচুয়ারিয়াল বডি এর ফেলো বা অ্যাসোসিয়েটের ক্ষেত্রে ১৫ বছরের জায়গায় ১২ বছর অভিজ্ঞতার ন্যূনতম মেয়াদ হতে সর্বোচ্চ ৫ বছরের জায়গায় ৩ বছর করে সংশোধন করা হয়েছে। এছাড়া, স্বীকৃত পেশাগত ডিগ্রি বা পদবীধারীদের ক্ষেত্রে (খ) দফায় উল্লেখিত ১৫ বছরের জায়গায় ১২ বছর, অভিজ্ঞতার ন্যূনতম মেয়াদ হতে সর্বোচ্চ ৩ বছরের জায়গায় ২ বছর করে সংশোধন করা হয়েছে।

নতুন প্রবিধানে মুখ্য নির্বাহীর নিয়োগ বা নিয়োগ নবায়ন চুক্তিভিত্তিক হবে বলে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া, মূখ্য নির্বাহীর নিয়োগের ক্ষেত্রে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ আইন ও বিধি-বিধান অনুসরণ করে বহুল প্রচলিত একটি বাংলা ও ইংরেজি পত্রিকার পাশাপাশি কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন করবে। কোম্পানি মুখ্য নির্বাহী নিয়োগ বা নিয়োগ নবায়নের পূর্বে নির্বাচিত প্রার্থীর জীবনবৃত্তান্ত, সম্মানী প্যাকেজ এবং বোর্ড সভার কার্যবিবরণী দাখিল করবে।

এর আগে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হবার বা উক্ত পদে না থাকবার ঘটনা অবগত হওয়ার ১৫ দিন শেষ হওয়ার পূর্বে কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবহিত করার যে প্রক্রিয়া ছিলো তা রহিত করা হয়েছে।

নতুন প্রবিধানে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ লাভের জন্য প্রার্থীর অযোগ্যতার ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন বয়স ৪০ বছরের বিধান বাদ দেয়া হয়েছে এবং সর্বোচ্চ বয়স ৬৭ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত পুনর্নিয়োগের বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া, ‘বাংলাদেশের নাগরিক বা বাংলাদেশের ডমিসাইল’ হওয়ার বাধ্যবাধকতাও তুলে নেয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বীমা ব্যবসারত বিদেশে নিবন্ধিত কোম্পানি অথবা বিদেশে নিবন্ধিত কোম্পানির শতভাগ মালিকানাধীন বাংলাদেশি বীমা কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী নিয়োগের ক্ষেত্রে এই বিধান প্রযোজ্য হবে না। এছাড়া বীমা আইনের ধারা ৫০এর উপ-ধারা (১)বা প্রবিধান ৭ অনুযায়ী কোন ব্যক্তি অপসারিত হলে মুখ্য নির্বাহী হিসেবে তিনি অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।

সংশোধিত প্রবিধানে মুখ্য নির্বাহীর মোট বেতনের বিষয়ে বলা হয়েছে-মূল বেতন, বাড়ী ভাড়া এবং অন্যান্য ভাতাদি (ভবিষ্য তহবিল, চিকিৎসা ভাতা, উৎসব ভাতা, বীমা, এক বা একাধিক ইনসেনটিভ বোনাস ইত্যাদির পরিমাণ বা সীমা নির্দিষ্ট অঙ্কে উল্লেখসহ) সমন্বয়ে মোট বেতন নির্ধারিত হবে। উপরোল্লিখিত এক বা একাধিক ইনসেনটিভ বোনাস এক বছরে সর্বমোট ১০ লাখ টাকার অধিক দেয়া যাবে না। অন্যান্য সুবিধাদি, যেমন গাড়ি, জ্বালানী, চালক, ইউটিলিটি বিল, ছুটি, পরিবহন সহায়তা ইত্যাদির পরিমাণ বা সীমা নির্দিষ্ট থাকতে হবে।

সংশোধিত প্রবিধানে বীমা কোম্পানির মুখ্য নির্বাহীরা যে লভ্যাংশ, কমিশন, ক্লাব সদস্য সংক্রান্ত খরচ বা ইনক্রিমেন্ট পেত তা বন্ধ করা হলো।

 

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১২:৩৮ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০৩ জানুয়ারি ২০২৪

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

(1619 বার পঠিত)
বিজ্ঞাপন
(1533 বার পঠিত)
বিজ্ঞাপন
(1212 বার পঠিত)
বিজ্ঞাপন
(1025 বার পঠিত)

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।