নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ০৭ মে ২০২০ | প্রিন্ট | 704 বার পঠিত
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস ও স্কয়ার ফার্মাসিউটক্যালসসহ ৬ কোম্পানিকে রেমডিসিভি উৎপাদনের অনুমতি দিয়েছে। এর মধ্যে বেক্সিমকো ফার্মা চলতি মে মাসেই ওষুধটির পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করবে বলে জানা গেছে। বেক্সিমকোর রেমডিসিভি ওষুধে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত একজন রোগীর সূস্থ হতে খরচ হবে সর্বোচ্চ ৬৬ হাজার টাকা
মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স বেক্সিমকোর রেমডিসিভির নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তার বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদপত্র নিউইয়র্ক টাইমসও প্রকাশ করেছে সেটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের চিফ অপারেটিং অফিসার রাব্বুর রেজা তাদেরকে নিশ্চিত করেছেন, কোম্পানিটি চলতি মাসেই রেমডিসিভিরের পরীক্ষামূলক উৎপাদনে যাচ্ছে।
উল্লেখ, ইবোলা ভাইরাসের চিকিৎসা ব্যবহৃত রেমডিসিভির করোনাভাইরাসের চিকিৎসায়ও সমান কার্যকর বলে দাবি করেছে গিলিয়েড সায়েন্সেস। এক সমীক্ষায় এর স্বপক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানায় কোম্পানিটি। তাদের ভাষ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের ২২ দেশের ১০৬৩ জন গুরুতর অসুস্থ করোনা রোগীর উপর সমীক্ষাটি চালানো হয়েছিল। তাতে দেখা গেছে, ৩১ শতাংশ রোগী গড় সময়ের চেয়ে আগে করোনা থেকে মুক্ত হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন। সাধারণত এই ধরনের গুরুতর রোগীদের সুস্থ হতে ১৫ দিন সময় লাগে। যাদের উপর রেমডিসিভির প্রয়োগ করা হয়েছে, তারা ১১ দিনেই সুস্থ হয়েছেন। অন্যদিকে, গুরুতর রোগীদের মধ্যে যাদের উপর রেমডিসিভির প্রয়োগ করা হয়নি তাদের মধ্যে মৃত্যুর হার ১১ শতাংশ। অন্যদিকে যাদের উপর রেমডিসিভির প্রয়োগ করা হয়েছে, তাদের মৃত্যু হার ৮ শতাংশ।
রেমডিসিভিরে ১৫ দিনের জায়গায় ১১ দিনে সুস্থ হওয়া যায়
যদিও তার আগে বিজ্ঞান সাময়িকী ল্যানসেট অপর এক সমীক্ষার বরাতে জানিয়েছিল, করোনার চিকিৎসায় রেমডিসিভিরের বিশেষ কোনো কার্যকারিতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। রেমডিসিভিরের কার্যকারিতা নিয়ে নানামুখী আলোচনার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (ঋউঅ) গত সপ্তাহে করোনার চিকিৎসায় ওষুধটি ব্যবহারের অনুমতি দেয়।
এফডিএ’র অনুমোদনের দুই দিনের মাথায় বাংলাদেশে ৬ কোম্পানিকে রেমডিসিভির উৎপাদনের অনুমতি দেওয়া হয়।
রাব্বুর রেজা জানান, তাদের উৎপাদিত রেমডিসিভিরের মূল্য হতে পারে এক ছোট শিশি ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা। আর করোনায় আক্রান্ত একজন রোগীর চিকিৎসায় ৫ থেকে ১১ শিশি রেমডিসিভির লাগতে পারে।
সে হিসেবে একজন করোনা রোগীর চিকিৎসায় শুধু রেমডিসিভিরের জন্য ৩০ হাজার টাকা থেকে ৬৬ হাজার টাকা পর্যন্ত ব্যয় হতে পারে।
বেক্সিম ফার্মার সিওও রাব্বুর রেজা বলেন, আমাদের স্টাডি শেষ হলে বুঝতে পারব একজন রোগীর জন্য ঠিক কতটুকু ওষুধ প্রয়োজন হবে।
তবে তিনি বলেন, সরকারের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা পেলে ওষুধটির দাম কিছুটা কমিয়ে আনতে পারবেন তারা।
এই মাসে উৎপাদন শুরু হওয়া ওষুধগুলো প্রাথমিকভাবে দেশীয় চাহিদা মেটানোর জন্য ছাড়া হবে বলে তিনি জানান।
যুক্তরাষ্ট্রে রেমডিসিভিরের উৎপাদক সরকারকে ২ লাখ শিশি ফ্রি দিচ্ছে
বেক্সিমকোর ওই কর্মকর্তা জানান, রেমডিসিভিরের কাঁচামাল আমদানি করা হবে চীন থেকে। ইতোমধ্যে সেদেশের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এ বিষয়ে চুক্তি হয়েছে। ওই চুক্তির্ আওতায় আমদানি করা কাঁচামালে ১ লাখ শিশি রেমডিসিভির উৎপাদন করা যাবে।
যুক্তরাষ্ট্রে রেমডিসিভির উৎপাদনকারী কোম্পানি গিলিয়েড সায়েন্সেস সরকারকে ২ লাখ রোগীর চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক রেমডিসিভির বিনামূল্যে সরবরাহ করার ঘোষণা দিয়েছে। তারা বলেছে, রেমডিসিভির নিয়ে তারা কোনো মুনাফা করতে চায় না, বরং জাতির এই বিপর্যয়ে পাশে থাকতে চায়। তবে বাংলাদেশে বেক্সিমকো বা অন্য কোনো কোম্পানি সরকার বা দরিদ্রদের বিনামূল্যে কোনো রেমডিসিভির সরবরাহ করবে কি-না তা সে বিষয়ে এখনো মুখ খুলেনি।
Posted ১:৩৬ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৭ মে ২০২০
bankbimaarthonity.com | saed khan