বিবিএনিউজ.নেট | বৃহস্পতিবার, ০৪ এপ্রিল ২০১৯ | প্রিন্ট | 542 বার পঠিত
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে দেশব্যাপী মোট ৬৫টি প্রকল্প উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন। এর মধ্যে ১১টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের উদ্বোধন ও ১৩টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি। এসব প্রকল্প উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে প্রদত্ত ভাষণে আসন্ন রমজানে নিত্যপণ্যের দাম না বাড়াতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সামনে রোজা। এ সময় তেল, ছোলা, চিনিসহ নিত্যপণ্যের দাম যাতে না বাড়ে, সেজন্য আমি আপনাদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে পর্যাপ্ত সরবরাহ যেন থাকে, সে বিষয়টিও আপনাদের দেখতে হবে।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) আওতাধীন বিভিন্ন অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১৬টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু, ২০টি নতুন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং পাঁচটি চলমান কাজেরও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে ফসলি জমি নষ্ট না করার ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, যাদের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে, তাদের ক্ষতিপূরণ সঙ্গে সঙ্গে দিতে হবে। একই সঙ্গে তাদের বিকল্প জায়গার ব্যবস্থাও করতে হবে। আমরা ফসলি জমি নষ্ট করব না। মানুষের জন্য কাজ করি, সেই মানুষকে কষ্ট দেয়ার জন্য নয়। এক্ষেত্রে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তাদের যেন কোনো কষ্ট না হয়। সেদিকে নজর দিতে হবে।
বঙ্গবন্ধুই প্রথমে বিসিক শিল্পনগরী গড়ে তুলেছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এজন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করেন তিনি। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, বাঙালিদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না। আজ বাঙালিদের কেউ দাবিয়ে রাখতে পারেনি।
অনুষ্ঠান মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ-বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি-বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ।
সরকারের উন্নয়ন একেবারে তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, উৎপাদিত পণ্যের বাজার সৃষ্টির জন্য আমরা কেবল রফতানির ওপর নির্ভর করতে পারি না। দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা যেন বাড়ে এবং দেশে যেন আমাদের বাজার সৃষ্টি হয়, সে পদক্ষেপও আমরা নিয়েছি। সারা বাংলাদেশে আমরা ডিজিটাল সেন্টার করে দিয়েছি। এর ফলে এখন ক্রয়-বিক্রয় থেকে শুরু করে সবকিছু ঘরে বসেই মানুষ অনলাইনে সারতে পারছে।
দেশের পোস্ট অফিসগুলোকেও আধুনিকায়ন করা হচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সমগ্র বাংলাদেশকে নিয়ে আমরা অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্য স্থির করেছি। আপনারা যারা আজ দেশের শিল্পায়নের সঙ্গে যুক্ত, তারা এর সুফল পাচ্ছেন। আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারে তার সরকারের বিবিআইএন (বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল) এবং বিসিআইএন-ইসি (বাংলাদেশ, চীন, ভারত, মিয়ানমার) পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
সারা দেশে ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর আগে আমি ১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিয়েছি। আজকে আরো ১১টি করা হলো এবং ১৩টির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হলো। বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের জন্য সাহস করেও যারা বাংলাদেশে এসেছেন, তাদের আমি ধন্যবাদ জানাই। আমি মনে করি, এটা আমাদের অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখবে।
প্রধানমন্ত্রী বুধবার যে ১১টি অর্থনৈতিক অঞ্চল উদ্বোধন করেন, সেগুলো হলো মোংলা অর্থনৈতিক অঞ্চল, মেঘনা অর্থনৈতিক অঞ্চল ও মেঘনা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইকোনমিক জোন, আব্দুল মোনেম অর্থনৈতিক অঞ্চল, বে-অর্থনৈতিক অঞ্চল, আমান অর্থনৈতিক অঞ্চল, সিটি অর্থনৈতিক অঞ্চল, কিশোরগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চল, ইস্টওয়েস্ট স্পেশাল অর্থনৈতিক অঞ্চল, কর্ণফুলী ড্রাইডক বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল।
উত্তরায় বিজিএমইএর নতুন ভবন উদ্বোধন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে রাজধানীর উত্তরায় পোশাক খাতের মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাতবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি সালাম মুর্শেদী ও আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী পারভেজ গণভবন প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিজিএমইএর নির্মীয়মাণ নতুন ভবন প্রান্ত থেকে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানসহ অন্যরা। ভিডিও কনফারেন্সটি সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান।
Posted ২:৫৩ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৪ এপ্রিল ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed