নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ০৭ জুন ২০২০ | প্রিন্ট | 409 বার পঠিত
আগামী বাজেটে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ঠিক রাখতে কর ফাঁকি ও অবৈধ অর্থ পাচার প্রতিরোধে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ দিয়েছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
রোববার (৭ জুন) ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থান এবং বাজেটের চ্যালেঞ্জ নিয়ে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চলনায় এতে মূল প্রতিবেদন তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।
সংস্থাটি জানায়, চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই রাজস্ব আদায় কমছে। মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে এ বছর আমাদের ঘাটতি প্রায় এক লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা হবে। চলমান পরিস্থিতি বিবেচনায় এ বছর রাজস্ব প্রবৃদ্ধি শূন্য ৪ শতাংশের বেশি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এতে করে রাজস্ব জিডিপির অনুপাতেও পতন ঘটবে। এসব পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সামনে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা দরকার বলছে সিপিডি।
আমাদের সম্পদ কত আছে-এটা যদি আমরা সঠিকভাবে নির্ণয় না করতে পারি তাহলে ব্যয় কোথায় প্রধান্য দিতে হবে তা নির্ধারণ করা কঠিন হবে শঙ্কা প্রকাশ করেন প্রতিষ্ঠানটির রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।
আগামী অর্থবছরে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়তে পারে জানিয়ে সিপিডি বলছে, এটি অর্জন করা কঠিন হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যবসার যে অবস্থা তাতে করহার বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। উল্টো অনেক খাত থেকে কর কমানোর চাপ আসছে। এতে করে আগামী অর্থবছরে সরকারের সম্পদ সংগ্রহ বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।
রাজস্বনীতির ক্ষেত্রে তিনটি বিষয়ে গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে সিপিডির পক্ষ থেকে। তা হলো-দেশের অভ্যন্তরীণ পণ্যের চাহিদা বাড়াতে হবে। এজন্য ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে ব্যক্তিশ্রেণির করসীমা আড়াই লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে সাড়ে তিন লাখ টাকা করা যেতে পারে বলছে সিপিডি। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর যে শুল্ক আছে তা কমাতে হবে যাতে করে গরিব মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে। এক্ষেত্রে কৃষক যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেই বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। রাজস্বনীতির মধ্যে প্রণোদনাসহ বিভিন্ন ছাড়ের সমন্বয় রাখতে হবে। এছাড়া আগামী বাজেটে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ঠিক রাখতে হলে অবশ্যই কর ফাঁকি ও অবৈধ অর্থ পাচার প্রতিরোধে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।
মার্চের শেষের দিক থেকে অর্থনীতি একটা ভিন্ন গতি প্রকৃতির দিকে ঢুকে গেছে উল্লেখ করে মূল প্রতিবেদন তুলে ধরার সময় তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি কেমন হতে পারে আমরা সেটা দেখার চেষ্টা করেছি। সেক্ষেত্রে আমরা কতগুলো বিষয়কে বিবেচনায় নিয়েছি। বর্তমান যে পরিস্থিতি তাতে কী ধরনের প্রভাব পড়েছে আমরা দেখার চেষ্টা করেছি। আমরা দেখেছি, পাঁচটি খাত সরাসরি বড় অসুবিধায় পড়েছে।
তিনি বলেন, মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ১৫টি খাত থাকে। নিঃসন্দেহ অনেক খাতই বড় ধরনের ক্ষতিতে পড়েছে। কিছু কিছু খাত যেমন-কৃষি হয়তো ওইভাবে প্রভাবিত হয়নি। কৃষির উৎপাদন মোটামুটি ভালো হয়েছে।
ম্যানুফ্যাকচারিং ও কনস্ট্রাকশন খাত প্রত্যক্ষভাবে বড় সমস্যায় পড়েছে এবং হোটেল-রেস্টুরেন্ট ও ট্রান্সপোর্ট দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় জিডিপিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আমরা যদি ধরে নেই, অর্থবছরের বাকি যে সময় আছে তাতে ভালো প্রবৃদ্ধি হবে, তারপরও প্রবৃদ্ধি দুই দশমিক পাঁচ শতাংশের বেশি হতে পারবে না। অর্থাৎ আমরা সব থেকে ভালো সিনারিও যদি আমরা এই বছরের জন্য চিন্তা করি তাহলে আমাদের ধারণা, এ বছরের প্রবৃদ্ধি দুই দশমিক পাঁচ শতাংশের বেশি হবে না।
Posted ৬:১৭ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৭ জুন ২০২০
bankbimaarthonity.com | saed khan