| শুক্রবার, ০১ মার্চ ২০১৯ | প্রিন্ট | 878 বার পঠিত
সর্বস্তরে বাংলা ভাষা ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিয়ে জাতীয় সংসদের সব কার্যক্রম পরিচালনায় বাংলা বর্ষপঞ্জি প্রচলন করার প্রস্তাব দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নূর তাপস। এই প্রস্তাবের সমর্থন করে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু রাষ্ট্রের পক্ষে বাংলা ভাষা ব্যবহার সহজ করার জন্য সিপিসি সংশোধনের প্রস্তাব করেন।
বৃহস্পতিবার রাতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তারা এই প্রস্তাব করেন।
আওয়ামী লীগের সদস্য ফজলে নূর তাপস বলেন, ফেব্রুয়ারিকে ভাষার মাস হিসেবে পালন করি, ভাষা শহীদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করি। ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ভাষা শহীদ দিবস হিসেবে পালন করি এবং মাসব্যাপী ভাষার সম্মান-মর্যাদা রক্ষার কথা বলি, কিন্তু আসলেই কতটুকু করেছি এবং কতটুকু অবদান রাখছি।
তিনি বলেন, ভাষার অধিকার, ভাষার মর্যাদা, সম্মান রক্ষার লক্ষ্যে ভাষা সৈনিকেরা ত্যাগ স্বীকার করেছেন। অনেকেই তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় একটি স্বাধীন জাতি হয়েও আমরা আমাদের ভাষাকে রক্ষা করতে পারছি না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেকগুলো উদ্যোগ নিয়েছেন, কিন্তু তারপরেও আমরা কেন যেন পেরে উঠছি না। এরজন্য আমি মনে করি, আমরাই দায়ী।
তাপস বলেন, আমাদের দেশের জাতীয় দৈনিকগুলো অযথা ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করছে। টিভিতেও ইংরেজি শব্দের মিশ্রণ করে সংবাদ পরিবেশন করছে। বিজ্ঞাপনগুলোতেও বিভিন্ন ইংরেজি শব্দ প্রচার করা হচ্ছে। আমরা ইংরেজি শিখেছি বৈশ্বিক সমাজে এই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু এখন প্রতিযোগিতা চলছে ইংরেজি বলার। পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, একটি বাক্য পরিপূর্ণভাবে বাংলায় বলতে পারছি না, পরিপূর্ণভাবে ইংরেজিও বলতে পারছি না।
তিনি বলেন, সরকারি কাগজপত্রগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে শব্দ ব্যবহার করে থাকে বঙ্গাব্দ। এই সংসদের কার্যক্রম বা কার্যপরিচালনায় বাংলা বর্ষপঞ্জির ব্যবহারের অভাব রয়েছে। তাই আমি আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি সংসদের কার্যক্রমে বাংলা বর্ষপঞ্জির প্রচলন করার জন্য। তবে কেউ যদি তাদের বক্তব্যে ইংরেজি ভাষাসহ অন্য শব্দ ব্যবহার করেন তাহলে কার্যক্রমে যেন সেই শব্দটির পরিবর্তে বাংলা শব্দটি সন্নিবেশ করা হয়।
ফজলে নূর তাপসের বক্তব্যের পর বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্ন পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে এই বক্তব্য সমর্থন করেন। তিনি বলেন, আমরা ১৯৮৭ সালে বাংলা ভাষা প্রচলন আইন করেছিলাম। সেই বাংলা ভাষা বাস্তবায়ন আইনে আছে রাষ্ট্রীয় কাজে স্বীকৃত ইংরেজি ছাড়া অন্য কোথাও বাংলা ব্যবহার না করা হলে সাজা হবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো সরকারই বাংলা ভাষা ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছেন বা সাজা হয়েছে এরকম কোনো রেকর্ড নেই। সবচেয়ে বড় কথা ১৯৯১ সালে হাইকোর্টের একটি রিট এ বলা হয়েছে সংবিধানে রাষ্ট্রের ভাষা বাংলা, কিন্তু আমাদের উচ্চ আদালতে বাংলা এবং ইংরেজি দুই ভাষাই চলবে। সিভিল কোর্টে লেখা আছে আদালতের ভাষা বাংলা এবং ইংরেজি হবে। সিপিসি’র ওই সেকশনের কারণে উচ্চ আদালত ওই রায় দিয়েছেন। যদি সিপিসি সংশোধন করা হয় তাহলে রাষ্ট্রের পক্ষে বাংলা ভাষা ব্যবহার সহজ হবে।
Posted ১২:১২ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০১ মার্চ ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed