নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ১১ জুন ২০২০ | প্রিন্ট | 535 বার পঠিত
বাজেটে অর্থ বিভাগ থেকে বিদ্যুৎ জ্বালানি খাতের জন্য ২৬ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। গত অর্থ বছরে এই বরাদ্দ ছিল ২৮ হাজার ৫১ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত বারের তুলনায় এবার বরাদ্দ কমেছে এক হাজার ২৯৩ কোটি টাকা। যদিও এবার বাজেটে নিজস্ব অর্থায়ন, বিভিন্ন তহবিল এবং ইসিএ ফাইনান্সিং মিলিয়ে বিদ্যুৎ জ্বালানিখাতে ৩০ হাজার ৭৩৬ কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন হচ্ছে বলে বিদ্যুৎ জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১১ জুন) জাতীয় সংসদে বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এই বরাদ্দ রাখার কথা ঘোষণা করেন।
অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় বলেন, ২০৪১ সাল মেয়াদি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। এখন যা সব মিলেয়ে ২৪ হাজার মেগাওয়াট। এখন পর্যন্ত দেশের ৯৬ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। এখন দেশে মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৫১০ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। এখন ১৬ হাজার ৮৭৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার ৪৮ টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। এছাড়া ১২টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রর চুক্তি সই করা হচ্ছে। যার ক্ষমতা দুই হাজার ৭৮৫ মেগাওয়াট। এছাড়া আরো ৬৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৬টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রর দরপত্র প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া আরও ১৯ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
এছাড়া পায়রা, মহেশখালি মাতারবাড়িতে মেগা পাওয়ার হাব নির্মাণের জন্য বড় প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে পায়রা ১৩২০, মাতারবাড়ি ১২০০ এবং রামপালে ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র উল্ল্যেখযোগ্য।
অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতায় বলা হয়, নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে ১০ ভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে নতুন প্রকল্প হাতে নেয়া হচ্ছে। এছাড়া উপ আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে বিদ্যুৎখাতের উন্নয়নের কথা তুলে ধরা হয়।
বাজেট বক্তৃতায় বলা হয়, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে শতভাগ উপজেলায় বিদ্যুতায়ন করা হবে। এরমধ্যে ২৫৭ উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা হয়েছে এছাড়া আরো ১৫৩ উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়নের কাজ চলছে।
এদিকে বাজেট বক্তৃতায় জ্বালানি বিষয়ে বলা হয়, দেশে এখন প্রায় ২ হাজার ৫২২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন হচ্ছে। ২০২১ সালের মধ্যে বাপেক্স ১০৮টি কূপ খনন করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছিল এরমধ্যে ২৯টি কূপের খনন শেষ করেছে। এছাড়া সাগরে তেল গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য মডেল পিএসসি ২০১৯ করা হয়েছে। এর বাইরেও চাহিদা সামাল দিতে আরো এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস আমদানি করার জন্য দুটি ভাসমান টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়েছে। এখন গড়ে দৈনিক ৫৬০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস আমদানি হচ্ছে। গ্যাসের অপচয় হ্রাস করার জন্য প্রিপেইড মিটার বসানো হচ্ছে।
ঘোষিত বাজেট দেখা গেছে বিদ্যুৎ খাতে ৯৩টি এবং জ্বালানিতে ২৪ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। জ্বালানিখাতে কোন ভর্তুকি রাখা হয়নি। অন্যদিকে বিদ্যুতের সংকট সামাল দিতে থাকছে আট হাজার কোটি টাকার ভর্তুকির প্রস্তাব।
এদিকে বিদ্যুৎ জ্বালানির বলে বরাদ্দ ২৮ হাজার ৫১ কোটি টাকা হলেও এবার বাজেটে নিজস্ব অর্থায়ন, বিভিন্ন তহবিল এবং ইসিএ ফাইনান্সিং মিলিয়ে বিদ্যুৎ জ্বালানিখাতে ৩০ হাজার ৭৩৬ কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন হচ্ছে বলে বিদ্যুৎ জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। এরমধ্যে বিদ্যুৎখাতে অর্থ বিভাগ দেবে ২৪ হাজার ৮০৩ কোটি ৯৩ লাখ, ইসিএ (ঠিকাদারদের মাধ্যমে অর্থায়ন) হবে এক হাজার ৮৩৭ কোটি ৯৬ লাখ এবং নিজস্ব তহবিল থেকে আরো ৯৫৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।
জ্বালানিতে অর্থ বিভাগ দেবে এক হাজার ৮৩৫ কোটি ৬২ লাখ, জিডিএফ (গ্যাস উন্নয়ন তহবিল) থেকে ২৬০ কোটি ২৯ লাখ এবং নিজস্ব খাত থেকে আরো এক হাজার ৪২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।
Posted ১১:১৫ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১১ জুন ২০২০
bankbimaarthonity.com | saed khan