বিবিএনিউজ.নেট | রবিবার, ১৯ জুলাই ২০২০ | প্রিন্ট | 276 বার পঠিত
সময়মতো ফি পরিশোধ না করায় বিদায়ী অর্থবছর শেষে বন্ধ হয়ে গেছে ৮৪ হাজার বিও অ্যাকাউন্ট। তবে এ সংখ্যা গত বছরের তুলনায় অর্ধেকেরও কম। গত বছর প্রায় দুই লাখের মতো বিও বাতিল হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সামনে ওয়ালটনের আইপিও এবং রবির আইপিও পাইপলাইনে থাকার কারণে এবার বিও কম বাতিল হয়েছে। তবে কিছু ব্রোকারেজ হাউস থেকে এখনও বাতিল অ্যাকাউন্টের তালিকা সিডিবিএলে পাঠানো হয়নি। সব হিসাব পেলে বাতিল বিওর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
এদিকে স্মরণকালের (২০১০ সালের) ভয়াবহ ধসের পর আর স্বরূপে ফিরতে পারেনি পুঁজিবাজার। মাঝেমধ্যে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও আবারও পতনের ধাক্কা লেগেছে বাজারে। ফলে বাজারবিমুখ হয়ে পড়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা, যার ধারাবাহিক ধাক্কা লেগেছে বিও অ্যাকাউন্টে।
ধারণা করা হয়েছিল করোনাভাইরাসের প্রভাবে এ বছর আরও বেশি সংখ্যক বিও বাতিল হবে। কিন্তু সামনে ভালোমানের কিছু কোম্পানির আইপিও পাইপলাইনে থাকায় বিনিয়োগকারীরা বিও বাতিল করেননি। কারণ প্রতি বছর যে বিও বাতিল হয় তার সিংহভাগই থাকে প্রাইমারি মার্কেটে শেয়ারের আবেদন করার জন্য খোলা বিও।
এ নিয়ে গত ছয় বছরে নবায়ন না করায় বন্ধ হয়ে গেছে সাত লাখের বেশি বিও অ্যাকাউন্ট। ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে শেয়ার সংরক্ষণকারী কোম্পানি সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০১৪-১৫ সালের অর্থবছর শেষে মোট বিও’র সংখ্যা ছিল ৩২ লাখ চার হাজার ৬০২টি। ২০১৯-২০ অর্থবছরে তা নেমে দাঁড়িয়েছে ২৪ লাখ ৯৪ হাজার ১৫৮টিতে।
জানা যায়, অন্যসব বছরের মতো এবারও যেসব অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে গেছে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যকই প্রাইমারি মার্কেট বা আইপিওতে আবেদনধারী বিও। এছাড়া সেকেন্ডারি মার্কেটে সুবিধা করতে না পেরে পুঁজিবাজার ছেড়ে গেছেন অনেক বিনিয়োগকারী। আবার অনেক স্বল্পসংখ্যক শেয়ারধারীও অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে জয়তুন সিকিউরিটিজ ইন্টারন্যাশনালের কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, এবার যেসব বিও বাতিল হয়েছে তার বেশিরভাগই আইপিওতে আবেদন করার জন্য খোলা অ্যাকাউন্ট। সামনে ওয়ালটনের মতো বড় কোম্পানির আইপিও থাকায় বিনিয়োগকারীরা অনেকেই বিও বাতিল করেননি। তা না হলে বাতিল বিওর সংখ্যা আরও বাড়ত।
সংশ্লিষ্টদের মতে, প্রতি বছর প্রধানত দুই কারণে অসংখ্য বিও বাতিল হয়। এর মধ্যে একটি হচ্ছে বাজারের মন্দা পরিস্থিতি, অন্যটি প্রাইমারি মার্কেট থেকে বিনিয়োগকারীদের সুবিধা না পাওয়া।
এ প্রসঙ্গে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, যেসব অ্যাকাউন্ট বাতিল হয়েছে তার বেশিরভাগই প্রাইমারি মার্কেটে আবেদনের জন্য খোলা হয়েছিল। প্রতি বছরই এমন হয়। ভালো কোনো কোম্পানির আইপিও থাকলে তখন বিও খোলার প্রবণতা বাড়ে। বছর শেষে অনেকেই এসব অ্যাকাউন্ট আর নবায়ন করেন না। ফলে অনেক অ্যাকাউন্ট ঝরে যায়।
নিয়মানুযায়ী, জুনে বিও ফি পরিশোধ না করলে সেসব অ্যাকাউন্ট এমনিতেই বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু যেসব হিসাবে শেয়ার কিংবা টাকা থাকে সেসব হিসাব বন্ধ হয় না। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) ডিপোজিটরি (ব্যবহারিক) প্রবিধানমালা, ২০০৩-এর তফসিল-৪ অনুযায়ী, বিও হিসাব পরিচালনার জন্য ডিপোজিটরি অংশগ্রহণকারী বা বিনিয়োগকারীকে নির্ধারিত হারে বার্ষিক হিসাবরক্ষণ ফি দিয়ে হিসাব নবায়ন করতে হয়। এর আগে পঞ্জিকাবর্ষ হিসেবে প্রতি বছর ডিসেম্বরে এ ফি জমা নেওয়া হতো। তবে ২০১০ সালের জুনে বিএসইসি বিও হিসাব নবায়নের সময় পরিবর্তন করে বার্ষিক ফি প্রদানের সময় জুন মাস নির্ধারণ করে। এ সময়ে বিও নবায়ন ফি ৩০০ থেকে বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করা হয়। এরপর বিএসইসির জারি করা ২০১১ সালের ১৮ এপ্রিল এক সার্কুলারে ৩০ জুনের মধ্যে বিও হিসাব নবায়নের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়। না হলে তা বাতিল করা হবে বলে ওই সার্কুলারে বলা হয়েছিল। বর্তমানে বিও নবায়ন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫০ টাকা।
Posted ১:১১ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৯ জুলাই ২০২০
bankbimaarthonity.com | Sajeed