বিবিএনিউজ.নেট | সোমবার, ০৫ আগস্ট ২০১৯ | প্রিন্ট | 489 বার পঠিত
ঈদুল আজহার বাকি মাত্র কয়েক দিন। কোরবানি দেওয়া পশুর বর্জ্য দ্রুততম সময়ে অপসারণ করা প্রতিবারই এক বড় চ্যালেঞ্জ রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের জন্য। এবারের ঈদে কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণে দুই সিটি করপোরেশনের প্রায় ১৪ হাজার কর্মী মাঠপর্যায়ে কাজে নিয়োজিত থাকবে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ডিএনসিসিতে এবার প্রায় ছয় হাজার কর্মী ও ডিএসসিসিতে প্রায় ৮ হাজার কর্মী কাজ করবে। এদের মধ্যে ডিএনসিসির নিয়মিত কর্মী প্রায় আড়াই হাজার এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পিসিএইচপির প্রায় সাড়ে চার হাজার কর্মী কাজ করবে বর্জ্য অপসারণে।
অন্যদিকে ডিএসসিসির নিয়মিত কর্মী পাঁচ হাজার ২৪১ জন। সঙ্গে থাকছে পিসিএইচপির প্রায় তিন হাজার কর্মী। এছাড়াও ঈদের দিনগুলো লক্ষ্য রেখে দ্রুততম সময়ে বর্জ্য অপসারণে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া পরিচ্ছন্নতাকর্মী থাকবে দুই সিটিতেই। সব মিলিয়ে ১৪ হাজারের বেশি পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবার থাকছে রাজধানীতে কোরবানি হওয়া পশুর বর্জ্য অপসারণ মিশনে।
ঢাকার উত্তরের ৫৪টি ওয়ার্ডে পাঁচটি করে মোট ২৭০টি স্থান নির্ধারিত থাকবে পশু কোরবানি দেওয়ার জন্য। একইভাবে দক্ষিণের ৭৫টি ওয়ার্ডেও পাঁচটি করে মোট ৩৭৫টি নির্ধারিত স্থান রেখেছে ডিএসসিসি। বর্জ্য দ্রুততময়ে সময়ে অপসারণে এসব স্থানে এসে পশু কোরবানি দেওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয় সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে।
বর্জ্য ডাম্পিং করার জন্য ইতোমধ্যে ল্যান্ডফিল প্রস্তুত করার কথাও জানান দুই সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য কর্মকর্তারা। ডিএনসিসির প্রধান বর্জ্য কর্মকর্তা মঞ্জুর হোসেন বলেন, বর্জ্য সংগ্রহের পর সেটিকে ডাম্পিংয়ের জন্য নিতে হয় ল্যান্ডফিলে। তাই ল্যান্ডফিলকেও প্রস্তুত রাখতে হয় যা আমরা ইতোমধ্যে করেছি। ল্যান্ডফিল্ডে কোরবানির বর্জ্য ডাম্পিংয়ের জন্য পর্যাপ্ত স্থান তৈরি করে রেখেছি আমরা।
খুব দ্রুত বর্জ্য অপসারণের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানিয়ে মঞ্জুর বলেন, আয়তন ও লোকসংখ্যার অনুপাতে প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি বা দু’টি পিকআপ বাড়িয়ে দিচ্ছি আমরা, যেন বর্জ্যগুলো দ্রুত ল্যান্ডফিলে নিয়ে যাওয়া যায়। সড়কে মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীরা বসে যেন এসব পিকআপ চলাচলে বাধা না সৃষ্টি করে তার জন্য ট্রাফিক পুলিশের সাহায্য চেয়েছি আমরা। নগরবাসীরা যদি একটু সচেতন হয়ে কোরবানি করেন এবং বর্জ্যগুলো যদি নির্ধারিত স্থানে রাখেন তাহলে বর্জ্য অপসারণ প্রক্রিয়া আরও দ্রুত হবে।
‘সোম অথবা মঙ্গলবার থেকে প্রতিটি ওয়ার্ডে বিনামূল্যে বর্জ্যবাহী ব্যাগ, ব্লিচিং পাউডার ও স্যাভলন বিতরণের কাজ শুরু হবে। নগরবাসীরা পশু কোরবানি করে তার বর্জ্য এসব ব্যাগে রাখবেন এবং কোরবানির স্থান স্যাভলন দিয়ে ধুয়ে ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দেবেন। আমাদের কর্মীরা সেই বর্জ্য দ্রুততার সঙ্গে সংগ্রহ করবে।’
অন্যদিকে ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে বর্জ্য অপসারণের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে ডিএসসিসি। সংস্থাটির প্রধান বর্জ্য কর্মকর্তা এয়ার কমোডর মো. জাহিদ হোসেন বলেন, বিগত বছরেও আমরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণ করেছিলাম। প্রায় ১৯ হাজার টন বর্জ্য অপসারণ করে ঢাকাবাসীদের আমরা একটি দুর্গন্ধমুক্ত, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন শহর দিয়েছিলাম। এবছরও চাচ্ছি আমরা তার চেয়ে ভালো করার জন্য।
‘প্রায় সব প্রস্তুতিই সম্পন্ন হয়েছে। তবে শেষ সময়ের সামান্য কিছু প্রস্তুতি বাকি আছে। এবার যেহেতু ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাবের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি আমরা তাই অন্য যেকোনো বছরের তুলনায় এবার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজটি অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং। তবে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে গতবারের থেকেও যেন ভালো কাজ করতে পারি তার জন্য প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছি। এবার প্রায় দুই লাখ বস্তা আমরা বিতরণ করবো বর্জ্য অপসারণের জন্য।’
পশু কোরবানির বিষয়ে নাগরিকদের সচেতন করতে বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন দুই সিটির দুই প্রধান বর্জ্য কর্মকর্তা। ঢাকা উত্তরের ১০টি জোনে ১০টি পিকআপে করে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করা হবে। অন্যদিকে মাইকিং ও লিফলেটের পাশাপাশি গণমাধ্যমেও প্রচারণা চালাবে ডিএসসিসি।
দুই সিটির কর্মকর্তারা বলছেন, অনেকেই ঈদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনেও পশু কোরবানি করেন। তবে নাগরিকেরা নির্ধারিত স্থানে সচেতনতার সঙ্গে পশু কোরবানি দিলে সর্বনিম্ন ২৪ ঘণ্টা থেকে সর্বোচ্চ ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে রাজধানী থেকে বর্জ্য অপসারণ সম্ভব।
Posted ১২:৫৭ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৫ আগস্ট ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed