সোমবার ২৫ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য বিশেষ তহবিল গঠন করেছে ১৩ ব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শনিবার, ১৮ জুলাই ২০২০   |   প্রিন্ট   |   422 বার পঠিত

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য বিশেষ তহবিল গঠন করেছে ১৩ ব্যাংক

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য প্রতিটি ব্যাংককে স্বল্প সুদ হারে ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের যে সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ পর্যন্ত ওই তহবিলের প্রস্তাব তাদের পরিচালনা পর্ষদে পাশ করিয়ে নিয়েছে ১৩টি ব্যাংক। কারা কত টাকা বিনিয়োগ করেছে বিএসইসিতে সে রিপোর্টও পাঠাচ্ছে তারা।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এই তথ্য জানিয়েছেন।

আজ শনিবার (১৮ জুলাই) পুঁজিবাজারে করোনাভাইরাসের প্রভাব ও উত্তরণের উপায় সম্পর্কিত রিসার্জেন্ট ডায়ালগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মেট্রোপলিটান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই), ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড) এবং পলিসি এক্সচেঞ্জ এর উদ্যোগে গঠিত রিসার্জেন্ট বাংলাদেশ এই ডায়ালগের আয়োজন করে।

ডায়ালগে বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, বাকী ব্যাংকগুলোর তহবিল গঠনের বিষয়ে চারদিক থেকে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সহযোগিতা চাওয়া হবে।

বিশেষ তহবিল গঠনের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা প্রজ্ঞাপনের কিছু শর্তের কারণে বিনিয়োগ ব্যাহত হতে পারে জানিয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, এসব শর্তের বিষয় পুনঃবিবেচনা করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ব্যাপারে ব্যাংকের পাশাপাশি নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তারল্য সুবিধা বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানান বিএসইসি চেয়ারম্যান। এছাড়া আইসিবিকে স্বল্প সুদের তহবিল সুবিধা দেওয়ার জন্যেও অনুরোধ জানাবেন, যাতে তারা পুঁজিবাজারে আরও বেশি ভূমিকা রাখতে পারে।

ডায়ালগটি সঞ্চালনা করেন এমসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবির। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মামুন-উর-রশিদ।

আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ছানাউল হক, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব লিস্টেড কোম্পানিজ (বিএপিএলসি) এর প্রেসিডেন্ট আজম জে চৌধুরী, বিল্ড চেয়ারম্যান আবুল কাসেম খান, ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন, আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হোসেন, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি শামস মামমুদ, মার্চেন্ট ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছায়েদুর রহমান, এমসিসিআই’র সাবেক সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শরীফ আনোয়ার হোসেন, পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশিদুল ইসলাম প্রমুখ।

ডায়ালগে বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, তারা পুঁজিবাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও অটোমেশনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন। অটোমেশন হয়ে গেলে ব্যবসা সহজ হবে, স্টেকহোল্ডারদের সময় ও খরচ বাঁচবে। বাজারে আরও স্বচ্ছতা এবং সুশাসন আসবে। বাজারের পরিধি প্রত্যন্ত এলাকা পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব হবে। সব মিলিয়ে দুই বছর পর একটি গতিশীল বাজার দেখা যাবে।

তিনি স্বীকার করেন, গত কয়েক বছরে বাজারে যেসব কোম্পানির আইপিও এসেছে সেগুলোর বেশিরভাগেরই মৌলভিত্তি ভাল নয়। অনেক কোম্পানি জাল কাগজপত্র বিএসইসিতে জমা দিয়ে আইপিও পাশ করিয়ে নিয়েছে। বিএসইসি এসব কাগজপত্রের উপর বিশ্বাস করেছে বলে তাদের সিদ্ধান্ত পুরোপুরি সঠিক হয়নি, অনেক ভুল হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা চিহ্নিত করে শাস্তির মুখোমুখী করা হচ্ছে যাতে নতুন করে কেউ এমন কাজের সাহস না দেখায়।

তিনি এ ধরনের প্রবনতা বন্ধে নিরীক্ষা প্রতিবেদনের মানের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেন।

বাজারে লেনদেন বাড়াতে সিএসইর চেয়ারম্যান স্ক্রিপ নেটিং এর সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাবটি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করার আশ্বাস দেন তিনি।

বহুল আলোচিত বাইব্যাক পদ্ধতি চালুর জন্য কোম্পানি আইনে সংশোধনের সময় বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি বন্ড মার্কেটের উন্নয়নের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, এই বাজারের উন্নয়ন হলে কোম্পানিগুলোকে দীর্ঘ মেয়াদী অর্থায়নের জন্য আর ব্যাংকের উপর এতটা নির্ভর করতে হবে না। ব্যাংকের উপর থেকে চাপ কমবে। স্বল্প মেয়াদের আমানত নিয়ে দীর্ঘ মেয়াদের অর্থায়নজনিত সমস্যা অনেকটাই কেটে যাবে।

পুঁজিবাজারের বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কেউ কেউ দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেন না বলে আভিযোগ করে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, অনেক বিদেশী বিনিয়োগকারী এখানে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করেন। এটি ভাল। তাদেরকে উৎসাহিত করতে চাই। কিন্তু কিছু বিদেশী বিনিয়োগকারী স্বল্প মেয়াদে বিনিয়োগ করে কারসাজির মাধ্যমে বেশি মুনাফা করার চেষ্টা করে। তারা কয়েকটি একাউন্টে টাকা ঢুকিয়ে সেগুলো থেকে একসঙ্গে শেয়ার কিনে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করে দিয়ে মুনাফা বিদেশে নিয়ে যায়। এ ধরনের ঘটনায় আমরা ব্যবস্থা নেব।

স্বাগত বক্তব্যে সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম পুঁজিবাজারে আস্থা ও গতি ফেরাতে করপোরেট গভর্ন্যান্স ভালো এবং অতীতে ভাল লভ্যাংশ দিয়েছে এমন কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে নিয়ে আসার আহ্বান জানান। এসএমই কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারের প্রতি আগ্রহী করতে তালিকাভুক্তির প্রথম তিন বছরে শূন্য শতাংশ এবং পরবর্তীতে ১৫ শতাংশ করপোরেট কর আরোপের প্রস্তাব করেন।

তিনি ফ্লোরপ্রাইসজনিত সমস্যা বাজারে সৃষ্টি হওয়া তারল্য সংকট দূর করতে স্ক্রিপ নেটিং চালুর প্রস্তাব দেন।

বিএপিএলসির প্রেসিডেন্ট আজম জে চৌধুরী পুঁজিবাজারের দুষ্ট কোম্পানি, যারা আইনের লংঘন করেছে, তাদেরকে কঠোর শাস্তি দেওয়ার আহ্বান জানান। তাতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসবে।

বিল্ড চেয়ারম্যান আবুল কাসেম খান বলেন, আমাদের যে উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এবং তার জন্য যে বিশাল বিনিয়োগ প্রয়োজন তা শুধু ব্যাংকিং খাতের মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভব হবে না। এর জন্য পুঁজিবাজারকে কাজে লাগাতে হবে। বন্ড মার্কেটকে শক্তিশালী করতে হবে।

তিনি গ্রিনফিল্ড কোম্পানিকে আইপিওতে আসার সুযোগ দেওয়া এবং আইপিওর জন্য ন্যুনতম তিন বছরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনার শর্ত তুলে নেওয়ার আহ্বান জানান।

এমসিসিআই এর প্রাক্তন সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, বারবার ভাল কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির কথা বলা হয়। কিন্তু নীতিমালা এমন করা হচ্ছে যাতে ভালো কোম্পানি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। সর্বশেষ তালিকাভুক্ত ও তালিকা-বহির্ভুত কোম্পানির কর হারের ব্যবধান আরও কমিয়ে ফেলা হয়েছে।

পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ বলেন, প্রতিদেশি দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে সঞ্চয়ের হার বেশ ভাল। কিন্তু বিনিয়োগে তার প্রতিফলন নেই।

তিনি বলেন, অর্থনীতিতে করোনার ধাক্কা সামলে উঠা এবং আগামী দিনে উন্নয়নের গতি ধরে রাখতে হলে পুঁজিবাজারকে কাজে লাগানো ছাড়া সেটি সম্ভব হবে না।

তিনি আরও বলেন, ক্যাপিটাল মার্কেট ও হাউজিং মার্কেট ডেভেলপ করা ছাড়া কোনো দেশ উন্নতি করতে পারেনি।

ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশিদুল ইসলাম আশা প্রকাশ করেন বিএসইসির বর্তমান কমিশন ইতোমধ্যে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন তাতে পুঁজিবাজারে শিগগিরই আস্থা ও গতি ফিরে আসবে।

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য বিশেষ তহবিল গঠন করেছে ১৩ ব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য প্রতিটি ব্যাংককে স্বল্প সুদ হারে ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের যে সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ পর্যন্ত ওই তহবিলের প্রস্তাব তাদের পরিচালনা পর্ষদে পাশ করিয়ে নিয়েছে ১৩টি ব্যাংক। কারা কত টাকা বিনিয়োগ করেছে বিএসইসিতে সে রিপোর্টও পাঠাচ্ছে তারা।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এই তথ্য জানিয়েছেন।

আজ শনিবার (১৮ জুলাই) পুঁজিবাজারে করোনাভাইরাসের প্রভাব ও উত্তরণের উপায় সম্পর্কিত রিসার্জেন্ট ডায়ালগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মেট্রোপলিটান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই), ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড) এবং পলিসি এক্সচেঞ্জ এর উদ্যোগে গঠিত রিসার্জেন্ট বাংলাদেশ এই ডায়ালগের আয়োজন করে।

ডায়ালগে বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, বাকী ব্যাংকগুলোর তহবিল গঠনের বিষয়ে চারদিক থেকে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সহযোগিতা চাওয়া হবে।

বিশেষ তহবিল গঠনের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা প্রজ্ঞাপনের কিছু শর্তের কারণে বিনিয়োগ ব্যাহত হতে পারে জানিয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, এসব শর্তের বিষয় পুনঃবিবেচনা করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ব্যাপারে ব্যাংকের পাশাপাশি নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তারল্য সুবিধা বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানান বিএসইসি চেয়ারম্যান। এছাড়া আইসিবিকে স্বল্প সুদের তহবিল সুবিধা দেওয়ার জন্যেও অনুরোধ জানাবেন, যাতে তারা পুঁজিবাজারে আরও বেশি ভূমিকা রাখতে পারে।

ডায়ালগটি সঞ্চালনা করেন এমসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবির। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মামুন-উর-রশিদ।

আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ছানাউল হক, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব লিস্টেড কোম্পানিজ (বিএপিএলসি) এর প্রেসিডেন্ট আজম জে চৌধুরী, বিল্ড চেয়ারম্যান আবুল কাসেম খান, ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন, আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হোসেন, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি শামস মামমুদ, মার্চেন্ট ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছায়েদুর রহমান, এমসিসিআই’র সাবেক সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শরীফ আনোয়ার হোসেন, পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশিদুল ইসলাম প্রমুখ।

ডায়ালগে বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, তারা পুঁজিবাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও অটোমেশনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন। অটোমেশন হয়ে গেলে ব্যবসা সহজ হবে, স্টেকহোল্ডারদের সময় ও খরচ বাঁচবে। বাজারে আরও স্বচ্ছতা এবং সুশাসন আসবে। বাজারের পরিধি প্রত্যন্ত এলাকা পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব হবে। সব মিলিয়ে দুই বছর পর একটি গতিশীল বাজার দেখা যাবে।

তিনি স্বীকার করেন, গত কয়েক বছরে বাজারে যেসব কোম্পানির আইপিও এসেছে সেগুলোর বেশিরভাগেরই মৌলভিত্তি ভাল নয়। অনেক কোম্পানি জাল কাগজপত্র বিএসইসিতে জমা দিয়ে আইপিও পাশ করিয়ে নিয়েছে। বিএসইসি এসব কাগজপত্রের উপর বিশ্বাস করেছে বলে তাদের সিদ্ধান্ত পুরোপুরি সঠিক হয়নি, অনেক ভুল হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা চিহ্নিত করে শাস্তির মুখোমুখী করা হচ্ছে যাতে নতুন করে কেউ এমন কাজের সাহস না দেখায়।

তিনি এ ধরনের প্রবনতা বন্ধে নিরীক্ষা প্রতিবেদনের মানের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেন।

বাজারে লেনদেন বাড়াতে সিএসইর চেয়ারম্যান স্ক্রিপ নেটিং এর সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাবটি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করার আশ্বাস দেন তিনি।

বহুল আলোচিত বাইব্যাক পদ্ধতি চালুর জন্য কোম্পানি আইনে সংশোধনের সময় বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি বন্ড মার্কেটের উন্নয়নের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, এই বাজারের উন্নয়ন হলে কোম্পানিগুলোকে দীর্ঘ মেয়াদী অর্থায়নের জন্য আর ব্যাংকের উপর এতটা নির্ভর করতে হবে না। ব্যাংকের উপর থেকে চাপ কমবে। স্বল্প মেয়াদের আমানত নিয়ে দীর্ঘ মেয়াদের অর্থায়নজনিত সমস্যা অনেকটাই কেটে যাবে।

পুঁজিবাজারের বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কেউ কেউ দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেন না বলে আভিযোগ করে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, অনেক বিদেশী বিনিয়োগকারী এখানে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করেন। এটি ভাল। তাদেরকে উৎসাহিত করতে চাই। কিন্তু কিছু বিদেশী বিনিয়োগকারী স্বল্প মেয়াদে বিনিয়োগ করে কারসাজির মাধ্যমে বেশি মুনাফা করার চেষ্টা করে। তারা কয়েকটি একাউন্টে টাকা ঢুকিয়ে সেগুলো থেকে একসঙ্গে শেয়ার কিনে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করে দিয়ে মুনাফা বিদেশে নিয়ে যায়। এ ধরনের ঘটনায় আমরা ব্যবস্থা নেব।

স্বাগত বক্তব্যে সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম পুঁজিবাজারে আস্থা ও গতি ফেরাতে করপোরেট গভর্ন্যান্স ভালো এবং অতীতে ভাল লভ্যাংশ দিয়েছে এমন কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে নিয়ে আসার আহ্বান জানান। এসএমই কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারের প্রতি আগ্রহী করতে তালিকাভুক্তির প্রথম তিন বছরে শূন্য শতাংশ এবং পরবর্তীতে ১৫ শতাংশ করপোরেট কর আরোপের প্রস্তাব করেন।

তিনি ফ্লোরপ্রাইসজনিত সমস্যা বাজারে সৃষ্টি হওয়া তারল্য সংকট দূর করতে স্ক্রিপ নেটিং চালুর প্রস্তাব দেন।

বিএপিএলসির প্রেসিডেন্ট আজম জে চৌধুরী পুঁজিবাজারের দুষ্ট কোম্পানি, যারা আইনের লংঘন করেছে, তাদেরকে কঠোর শাস্তি দেওয়ার আহ্বান জানান। তাতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসবে।

বিল্ড চেয়ারম্যান আবুল কাসেম খান বলেন, আমাদের যে উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এবং তার জন্য যে বিশাল বিনিয়োগ প্রয়োজন তা শুধু ব্যাংকিং খাতের মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভব হবে না। এর জন্য পুঁজিবাজারকে কাজে লাগাতে হবে। বন্ড মার্কেটকে শক্তিশালী করতে হবে।

তিনি গ্রিনফিল্ড কোম্পানিকে আইপিওতে আসার সুযোগ দেওয়া এবং আইপিওর জন্য ন্যুনতম তিন বছরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনার শর্ত তুলে নেওয়ার আহ্বান জানান।

এমসিসিআই এর প্রাক্তন সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, বারবার ভাল কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির কথা বলা হয়। কিন্তু নীতিমালা এমন করা হচ্ছে যাতে ভালো কোম্পানি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। সর্বশেষ তালিকাভুক্ত ও তালিকা-বহির্ভুত কোম্পানির কর হারের ব্যবধান আরও কমিয়ে ফেলা হয়েছে।

পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ বলেন, প্রতিদেশি দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে সঞ্চয়ের হার বেশ ভাল। কিন্তু বিনিয়োগে তার প্রতিফলন নেই।

তিনি বলেন, অর্থনীতিতে করোনার ধাক্কা সামলে উঠা এবং আগামী দিনে উন্নয়নের গতি ধরে রাখতে হলে পুঁজিবাজারকে কাজে লাগানো ছাড়া সেটি সম্ভব হবে না।

তিনি আরও বলেন, ক্যাপিটাল মার্কেট ও হাউজিং মার্কেট ডেভেলপ করা ছাড়া কোনো দেশ উন্নতি করতে পারেনি।

ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশিদুল ইসলাম আশা প্রকাশ করেন বিএসইসির বর্তমান কমিশন ইতোমধ্যে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন তাতে পুঁজিবাজারে শিগগিরই আস্থা ও গতি ফিরে আসবে।

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য বিশেষ তহবিল গঠন করেছে ১৩ ব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য প্রতিটি ব্যাংককে স্বল্প সুদ হারে ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের যে সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ পর্যন্ত ওই তহবিলের প্রস্তাব তাদের পরিচালনা পর্ষদে পাশ করিয়ে নিয়েছে ১৩টি ব্যাংক। কারা কত টাকা বিনিয়োগ করেছে বিএসইসিতে সে রিপোর্টও পাঠাচ্ছে তারা।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এই তথ্য জানিয়েছেন।

আজ শনিবার (১৮ জুলাই) পুঁজিবাজারে করোনাভাইরাসের প্রভাব ও উত্তরণের উপায় সম্পর্কিত রিসার্জেন্ট ডায়ালগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মেট্রোপলিটান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই), ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড) এবং পলিসি এক্সচেঞ্জ এর উদ্যোগে গঠিত রিসার্জেন্ট বাংলাদেশ এই ডায়ালগের আয়োজন করে।

ডায়ালগে বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, বাকী ব্যাংকগুলোর তহবিল গঠনের বিষয়ে চারদিক থেকে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সহযোগিতা চাওয়া হবে।

বিশেষ তহবিল গঠনের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা প্রজ্ঞাপনের কিছু শর্তের কারণে বিনিয়োগ ব্যাহত হতে পারে জানিয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, এসব শর্তের বিষয় পুনঃবিবেচনা করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ব্যাপারে ব্যাংকের পাশাপাশি নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তারল্য সুবিধা বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানান বিএসইসি চেয়ারম্যান। এছাড়া আইসিবিকে স্বল্প সুদের তহবিল সুবিধা দেওয়ার জন্যেও অনুরোধ জানাবেন, যাতে তারা পুঁজিবাজারে আরও বেশি ভূমিকা রাখতে পারে।

ডায়ালগটি সঞ্চালনা করেন এমসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবির। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মামুন-উর-রশিদ।

আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ছানাউল হক, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব লিস্টেড কোম্পানিজ (বিএপিএলসি) এর প্রেসিডেন্ট আজম জে চৌধুরী, বিল্ড চেয়ারম্যান আবুল কাসেম খান, ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন, আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হোসেন, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি শামস মামমুদ, মার্চেন্ট ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছায়েদুর রহমান, এমসিসিআই’র সাবেক সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শরীফ আনোয়ার হোসেন, পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশিদুল ইসলাম প্রমুখ।

ডায়ালগে বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, তারা পুঁজিবাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও অটোমেশনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন। অটোমেশন হয়ে গেলে ব্যবসা সহজ হবে, স্টেকহোল্ডারদের সময় ও খরচ বাঁচবে। বাজারে আরও স্বচ্ছতা এবং সুশাসন আসবে। বাজারের পরিধি প্রত্যন্ত এলাকা পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব হবে। সব মিলিয়ে দুই বছর পর একটি গতিশীল বাজার দেখা যাবে।

তিনি স্বীকার করেন, গত কয়েক বছরে বাজারে যেসব কোম্পানির আইপিও এসেছে সেগুলোর বেশিরভাগেরই মৌলভিত্তি ভাল নয়। অনেক কোম্পানি জাল কাগজপত্র বিএসইসিতে জমা দিয়ে আইপিও পাশ করিয়ে নিয়েছে। বিএসইসি এসব কাগজপত্রের উপর বিশ্বাস করেছে বলে তাদের সিদ্ধান্ত পুরোপুরি সঠিক হয়নি, অনেক ভুল হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা চিহ্নিত করে শাস্তির মুখোমুখী করা হচ্ছে যাতে নতুন করে কেউ এমন কাজের সাহস না দেখায়।

তিনি এ ধরনের প্রবনতা বন্ধে নিরীক্ষা প্রতিবেদনের মানের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেন।

বাজারে লেনদেন বাড়াতে সিএসইর চেয়ারম্যান স্ক্রিপ নেটিং এর সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাবটি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করার আশ্বাস দেন তিনি।

বহুল আলোচিত বাইব্যাক পদ্ধতি চালুর জন্য কোম্পানি আইনে সংশোধনের সময় বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি বন্ড মার্কেটের উন্নয়নের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, এই বাজারের উন্নয়ন হলে কোম্পানিগুলোকে দীর্ঘ মেয়াদী অর্থায়নের জন্য আর ব্যাংকের উপর এতটা নির্ভর করতে হবে না। ব্যাংকের উপর থেকে চাপ কমবে। স্বল্প মেয়াদের আমানত নিয়ে দীর্ঘ মেয়াদের অর্থায়নজনিত সমস্যা অনেকটাই কেটে যাবে।

পুঁজিবাজারের বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কেউ কেউ দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেন না বলে আভিযোগ করে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, অনেক বিদেশী বিনিয়োগকারী এখানে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করেন। এটি ভাল। তাদেরকে উৎসাহিত করতে চাই। কিন্তু কিছু বিদেশী বিনিয়োগকারী স্বল্প মেয়াদে বিনিয়োগ করে কারসাজির মাধ্যমে বেশি মুনাফা করার চেষ্টা করে। তারা কয়েকটি একাউন্টে টাকা ঢুকিয়ে সেগুলো থেকে একসঙ্গে শেয়ার কিনে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করে দিয়ে মুনাফা বিদেশে নিয়ে যায়। এ ধরনের ঘটনায় আমরা ব্যবস্থা নেব।

স্বাগত বক্তব্যে সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম পুঁজিবাজারে আস্থা ও গতি ফেরাতে করপোরেট গভর্ন্যান্স ভালো এবং অতীতে ভাল লভ্যাংশ দিয়েছে এমন কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে নিয়ে আসার আহ্বান জানান। এসএমই কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারের প্রতি আগ্রহী করতে তালিকাভুক্তির প্রথম তিন বছরে শূন্য শতাংশ এবং পরবর্তীতে ১৫ শতাংশ করপোরেট কর আরোপের প্রস্তাব করেন।

তিনি ফ্লোরপ্রাইসজনিত সমস্যা বাজারে সৃষ্টি হওয়া তারল্য সংকট দূর করতে স্ক্রিপ নেটিং চালুর প্রস্তাব দেন।

বিএপিএলসির প্রেসিডেন্ট আজম জে চৌধুরী পুঁজিবাজারের দুষ্ট কোম্পানি, যারা আইনের লংঘন করেছে, তাদেরকে কঠোর শাস্তি দেওয়ার আহ্বান জানান। তাতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসবে।

বিল্ড চেয়ারম্যান আবুল কাসেম খান বলেন, আমাদের যে উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এবং তার জন্য যে বিশাল বিনিয়োগ প্রয়োজন তা শুধু ব্যাংকিং খাতের মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভব হবে না। এর জন্য পুঁজিবাজারকে কাজে লাগাতে হবে। বন্ড মার্কেটকে শক্তিশালী করতে হবে।

তিনি গ্রিনফিল্ড কোম্পানিকে আইপিওতে আসার সুযোগ দেওয়া এবং আইপিওর জন্য ন্যুনতম তিন বছরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনার শর্ত তুলে নেওয়ার আহ্বান জানান।

এমসিসিআই এর প্রাক্তন সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, বারবার ভাল কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির কথা বলা হয়। কিন্তু নীতিমালা এমন করা হচ্ছে যাতে ভালো কোম্পানি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। সর্বশেষ তালিকাভুক্ত ও তালিকা-বহির্ভুত কোম্পানির কর হারের ব্যবধান আরও কমিয়ে ফেলা হয়েছে।

পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ বলেন, প্রতিদেশি দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে সঞ্চয়ের হার বেশ ভাল। কিন্তু বিনিয়োগে তার প্রতিফলন নেই।

তিনি বলেন, অর্থনীতিতে করোনার ধাক্কা সামলে উঠা এবং আগামী দিনে উন্নয়নের গতি ধরে রাখতে হলে পুঁজিবাজারকে কাজে লাগানো ছাড়া সেটি সম্ভব হবে না।

তিনি আরও বলেন, ক্যাপিটাল মার্কেট ও হাউজিং মার্কেট ডেভেলপ করা ছাড়া কোনো দেশ উন্নতি করতে পারেনি।

ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশিদুল ইসলাম আশা প্রকাশ করেন বিএসইসির বর্তমান কমিশন ইতোমধ্যে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন তাতে পুঁজিবাজারে শিগগিরই আস্থা ও গতি ফিরে আসবে।

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য বিশেষ তহবিল গঠন করেছে ১৩ ব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য প্রতিটি ব্যাংককে স্বল্প সুদ হারে ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের যে সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ পর্যন্ত ওই তহবিলের প্রস্তাব তাদের পরিচালনা পর্ষদে পাশ করিয়ে নিয়েছে ১৩টি ব্যাংক। কারা কত টাকা বিনিয়োগ করেছে বিএসইসিতে সে রিপোর্টও পাঠাচ্ছে তারা।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এই তথ্য জানিয়েছেন।

আজ শনিবার (১৮ জুলাই) পুঁজিবাজারে করোনাভাইরাসের প্রভাব ও উত্তরণের উপায় সম্পর্কিত রিসার্জেন্ট ডায়ালগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মেট্রোপলিটান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই), ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড) এবং পলিসি এক্সচেঞ্জ এর উদ্যোগে গঠিত রিসার্জেন্ট বাংলাদেশ এই ডায়ালগের আয়োজন করে।

ডায়ালগে বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, বাকী ব্যাংকগুলোর তহবিল গঠনের বিষয়ে চারদিক থেকে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সহযোগিতা চাওয়া হবে।

বিশেষ তহবিল গঠনের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা প্রজ্ঞাপনের কিছু শর্তের কারণে বিনিয়োগ ব্যাহত হতে পারে জানিয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, এসব শর্তের বিষয় পুনঃবিবেচনা করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ব্যাপারে ব্যাংকের পাশাপাশি নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তারল্য সুবিধা বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানান বিএসইসি চেয়ারম্যান। এছাড়া আইসিবিকে স্বল্প সুদের তহবিল সুবিধা দেওয়ার জন্যেও অনুরোধ জানাবেন, যাতে তারা পুঁজিবাজারে আরও বেশি ভূমিকা রাখতে পারে।

ডায়ালগটি সঞ্চালনা করেন এমসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবির। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মামুন-উর-রশিদ।

আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ছানাউল হক, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব লিস্টেড কোম্পানিজ (বিএপিএলসি) এর প্রেসিডেন্ট আজম জে চৌধুরী, বিল্ড চেয়ারম্যান আবুল কাসেম খান, ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন, আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হোসেন, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি শামস মামমুদ, মার্চেন্ট ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছায়েদুর রহমান, এমসিসিআই’র সাবেক সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শরীফ আনোয়ার হোসেন, পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশিদুল ইসলাম প্রমুখ।

ডায়ালগে বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, তারা পুঁজিবাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও অটোমেশনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন। অটোমেশন হয়ে গেলে ব্যবসা সহজ হবে, স্টেকহোল্ডারদের সময় ও খরচ বাঁচবে। বাজারে আরও স্বচ্ছতা এবং সুশাসন আসবে। বাজারের পরিধি প্রত্যন্ত এলাকা পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব হবে। সব মিলিয়ে দুই বছর পর একটি গতিশীল বাজার দেখা যাবে।

তিনি স্বীকার করেন, গত কয়েক বছরে বাজারে যেসব কোম্পানির আইপিও এসেছে সেগুলোর বেশিরভাগেরই মৌলভিত্তি ভাল নয়। অনেক কোম্পানি জাল কাগজপত্র বিএসইসিতে জমা দিয়ে আইপিও পাশ করিয়ে নিয়েছে। বিএসইসি এসব কাগজপত্রের উপর বিশ্বাস করেছে বলে তাদের সিদ্ধান্ত পুরোপুরি সঠিক হয়নি, অনেক ভুল হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা চিহ্নিত করে শাস্তির মুখোমুখী করা হচ্ছে যাতে নতুন করে কেউ এমন কাজের সাহস না দেখায়।

তিনি এ ধরনের প্রবনতা বন্ধে নিরীক্ষা প্রতিবেদনের মানের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেন।

বাজারে লেনদেন বাড়াতে সিএসইর চেয়ারম্যান স্ক্রিপ নেটিং এর সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাবটি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করার আশ্বাস দেন তিনি।

বহুল আলোচিত বাইব্যাক পদ্ধতি চালুর জন্য কোম্পানি আইনে সংশোধনের সময় বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি বন্ড মার্কেটের উন্নয়নের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, এই বাজারের উন্নয়ন হলে কোম্পানিগুলোকে দীর্ঘ মেয়াদী অর্থায়নের জন্য আর ব্যাংকের উপর এতটা নির্ভর করতে হবে না। ব্যাংকের উপর থেকে চাপ কমবে। স্বল্প মেয়াদের আমানত নিয়ে দীর্ঘ মেয়াদের অর্থায়নজনিত সমস্যা অনেকটাই কেটে যাবে।

পুঁজিবাজারের বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কেউ কেউ দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেন না বলে আভিযোগ করে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, অনেক বিদেশী বিনিয়োগকারী এখানে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করেন। এটি ভাল। তাদেরকে উৎসাহিত করতে চাই। কিন্তু কিছু বিদেশী বিনিয়োগকারী স্বল্প মেয়াদে বিনিয়োগ করে কারসাজির মাধ্যমে বেশি মুনাফা করার চেষ্টা করে। তারা কয়েকটি একাউন্টে টাকা ঢুকিয়ে সেগুলো থেকে একসঙ্গে শেয়ার কিনে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করে দিয়ে মুনাফা বিদেশে নিয়ে যায়। এ ধরনের ঘটনায় আমরা ব্যবস্থা নেব।

স্বাগত বক্তব্যে সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম পুঁজিবাজারে আস্থা ও গতি ফেরাতে করপোরেট গভর্ন্যান্স ভালো এবং অতীতে ভাল লভ্যাংশ দিয়েছে এমন কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে নিয়ে আসার আহ্বান জানান। এসএমই কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারের প্রতি আগ্রহী করতে তালিকাভুক্তির প্রথম তিন বছরে শূন্য শতাংশ এবং পরবর্তীতে ১৫ শতাংশ করপোরেট কর আরোপের প্রস্তাব করেন।

তিনি ফ্লোরপ্রাইসজনিত সমস্যা বাজারে সৃষ্টি হওয়া তারল্য সংকট দূর করতে স্ক্রিপ নেটিং চালুর প্রস্তাব দেন।

বিএপিএলসির প্রেসিডেন্ট আজম জে চৌধুরী পুঁজিবাজারের দুষ্ট কোম্পানি, যারা আইনের লংঘন করেছে, তাদেরকে কঠোর শাস্তি দেওয়ার আহ্বান জানান। তাতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসবে।

বিল্ড চেয়ারম্যান আবুল কাসেম খান বলেন, আমাদের যে উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এবং তার জন্য যে বিশাল বিনিয়োগ প্রয়োজন তা শুধু ব্যাংকিং খাতের মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভব হবে না। এর জন্য পুঁজিবাজারকে কাজে লাগাতে হবে। বন্ড মার্কেটকে শক্তিশালী করতে হবে।

তিনি গ্রিনফিল্ড কোম্পানিকে আইপিওতে আসার সুযোগ দেওয়া এবং আইপিওর জন্য ন্যুনতম তিন বছরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনার শর্ত তুলে নেওয়ার আহ্বান জানান।

এমসিসিআই এর প্রাক্তন সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, বারবার ভাল কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির কথা বলা হয়। কিন্তু নীতিমালা এমন করা হচ্ছে যাতে ভালো কোম্পানি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। সর্বশেষ তালিকাভুক্ত ও তালিকা-বহির্ভুত কোম্পানির কর হারের ব্যবধান আরও কমিয়ে ফেলা হয়েছে।

পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ বলেন, প্রতিদেশি দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে সঞ্চয়ের হার বেশ ভাল। কিন্তু বিনিয়োগে তার প্রতিফলন নেই।

তিনি বলেন, অর্থনীতিতে করোনার ধাক্কা সামলে উঠা এবং আগামী দিনে উন্নয়নের গতি ধরে রাখতে হলে পুঁজিবাজারকে কাজে লাগানো ছাড়া সেটি সম্ভব হবে না।

তিনি আরও বলেন, ক্যাপিটাল মার্কেট ও হাউজিং মার্কেট ডেভেলপ করা ছাড়া কোনো দেশ উন্নতি করতে পারেনি।

ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশিদুল ইসলাম আশা প্রকাশ করেন বিএসইসির বর্তমান কমিশন ইতোমধ্যে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন তাতে পুঁজিবাজারে শিগগিরই আস্থা ও গতি ফিরে আসবে।

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য বিশেষ তহবিল গঠন করেছে ১৩ ব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য প্রতিটি ব্যাংককে স্বল্প সুদ হারে ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের যে সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ পর্যন্ত ওই তহবিলের প্রস্তাব তাদের পরিচালনা পর্ষদে পাশ করিয়ে নিয়েছে ১৩টি ব্যাংক। কারা কত টাকা বিনিয়োগ করেছে বিএসইসিতে সে রিপোর্টও পাঠাচ্ছে তারা।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এই তথ্য জানিয়েছেন।

আজ শনিবার (১৮ জুলাই) পুঁজিবাজারে করোনাভাইরাসের প্রভাব ও উত্তরণের উপায় সম্পর্কিত রিসার্জেন্ট ডায়ালগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মেট্রোপলিটান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই), ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড) এবং পলিসি এক্সচেঞ্জ এর উদ্যোগে গঠিত রিসার্জেন্ট বাংলাদেশ এই ডায়ালগের আয়োজন করে।

ডায়ালগে বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, বাকী ব্যাংকগুলোর তহবিল গঠনের বিষয়ে চারদিক থেকে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সহযোগিতা চাওয়া হবে।

বিশেষ তহবিল গঠনের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা প্রজ্ঞাপনের কিছু শর্তের কারণে বিনিয়োগ ব্যাহত হতে পারে জানিয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, এসব শর্তের বিষয় পুনঃবিবেচনা করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ব্যাপারে ব্যাংকের পাশাপাশি নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তারল্য সুবিধা বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানান বিএসইসি চেয়ারম্যান। এছাড়া আইসিবিকে স্বল্প সুদের তহবিল সুবিধা দেওয়ার জন্যেও অনুরোধ জানাবেন, যাতে তারা পুঁজিবাজারে আরও বেশি ভূমিকা রাখতে পারে।

ডায়ালগটি সঞ্চালনা করেন এমসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবির। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মামুন-উর-রশিদ।

আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ছানাউল হক, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব লিস্টেড কোম্পানিজ (বিএপিএলসি) এর প্রেসিডেন্ট আজম জে চৌধুরী, বিল্ড চেয়ারম্যান আবুল কাসেম খান, ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন, আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হোসেন, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি শামস মামমুদ, মার্চেন্ট ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছায়েদুর রহমান, এমসিসিআই’র সাবেক সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শরীফ আনোয়ার হোসেন, পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশিদুল ইসলাম প্রমুখ।

ডায়ালগে বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, তারা পুঁজিবাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও অটোমেশনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন। অটোমেশন হয়ে গেলে ব্যবসা সহজ হবে, স্টেকহোল্ডারদের সময় ও খরচ বাঁচবে। বাজারে আরও স্বচ্ছতা এবং সুশাসন আসবে। বাজারের পরিধি প্রত্যন্ত এলাকা পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব হবে। সব মিলিয়ে দুই বছর পর একটি গতিশীল বাজার দেখা যাবে।

তিনি স্বীকার করেন, গত কয়েক বছরে বাজারে যেসব কোম্পানির আইপিও এসেছে সেগুলোর বেশিরভাগেরই মৌলভিত্তি ভাল নয়। অনেক কোম্পানি জাল কাগজপত্র বিএসইসিতে জমা দিয়ে আইপিও পাশ করিয়ে নিয়েছে। বিএসইসি এসব কাগজপত্রের উপর বিশ্বাস করেছে বলে তাদের সিদ্ধান্ত পুরোপুরি সঠিক হয়নি, অনেক ভুল হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা চিহ্নিত করে শাস্তির মুখোমুখী করা হচ্ছে যাতে নতুন করে কেউ এমন কাজের সাহস না দেখায়।

তিনি এ ধরনের প্রবনতা বন্ধে নিরীক্ষা প্রতিবেদনের মানের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেন।

বাজারে লেনদেন বাড়াতে সিএসইর চেয়ারম্যান স্ক্রিপ নেটিং এর সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাবটি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করার আশ্বাস দেন তিনি।

বহুল আলোচিত বাইব্যাক পদ্ধতি চালুর জন্য কোম্পানি আইনে সংশোধনের সময় বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি বন্ড মার্কেটের উন্নয়নের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, এই বাজারের উন্নয়ন হলে কোম্পানিগুলোকে দীর্ঘ মেয়াদী অর্থায়নের জন্য আর ব্যাংকের উপর এতটা নির্ভর করতে হবে না। ব্যাংকের উপর থেকে চাপ কমবে। স্বল্প মেয়াদের আমানত নিয়ে দীর্ঘ মেয়াদের অর্থায়নজনিত সমস্যা অনেকটাই কেটে যাবে।

পুঁজিবাজারের বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কেউ কেউ দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেন না বলে আভিযোগ করে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, অনেক বিদেশী বিনিয়োগকারী এখানে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করেন। এটি ভাল। তাদেরকে উৎসাহিত করতে চাই। কিন্তু কিছু বিদেশী বিনিয়োগকারী স্বল্প মেয়াদে বিনিয়োগ করে কারসাজির মাধ্যমে বেশি মুনাফা করার চেষ্টা করে। তারা কয়েকটি একাউন্টে টাকা ঢুকিয়ে সেগুলো থেকে একসঙ্গে শেয়ার কিনে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করে দিয়ে মুনাফা বিদেশে নিয়ে যায়। এ ধরনের ঘটনায় আমরা ব্যবস্থা নেব।

স্বাগত বক্তব্যে সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম পুঁজিবাজারে আস্থা ও গতি ফেরাতে করপোরেট গভর্ন্যান্স ভালো এবং অতীতে ভাল লভ্যাংশ দিয়েছে এমন কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে নিয়ে আসার আহ্বান জানান। এসএমই কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারের প্রতি আগ্রহী করতে তালিকাভুক্তির প্রথম তিন বছরে শূন্য শতাংশ এবং পরবর্তীতে ১৫ শতাংশ করপোরেট কর আরোপের প্রস্তাব করেন।

তিনি ফ্লোরপ্রাইসজনিত সমস্যা বাজারে সৃষ্টি হওয়া তারল্য সংকট দূর করতে স্ক্রিপ নেটিং চালুর প্রস্তাব দেন।

বিএপিএলসির প্রেসিডেন্ট আজম জে চৌধুরী পুঁজিবাজারের দুষ্ট কোম্পানি, যারা আইনের লংঘন করেছে, তাদেরকে কঠোর শাস্তি দেওয়ার আহ্বান জানান। তাতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসবে।

বিল্ড চেয়ারম্যান আবুল কাসেম খান বলেন, আমাদের যে উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এবং তার জন্য যে বিশাল বিনিয়োগ প্রয়োজন তা শুধু ব্যাংকিং খাতের মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভব হবে না। এর জন্য পুঁজিবাজারকে কাজে লাগাতে হবে। বন্ড মার্কেটকে শক্তিশালী করতে হবে।

তিনি গ্রিনফিল্ড কোম্পানিকে আইপিওতে আসার সুযোগ দেওয়া এবং আইপিওর জন্য ন্যুনতম তিন বছরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনার শর্ত তুলে নেওয়ার আহ্বান জানান।

এমসিসিআই এর প্রাক্তন সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, বারবার ভাল কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির কথা বলা হয়। কিন্তু নীতিমালা এমন করা হচ্ছে যাতে ভালো কোম্পানি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। সর্বশেষ তালিকাভুক্ত ও তালিকা-বহির্ভুত কোম্পানির কর হারের ব্যবধান আরও কমিয়ে ফেলা হয়েছে।

পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ বলেন, প্রতিদেশি দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে সঞ্চয়ের হার বেশ ভাল। কিন্তু বিনিয়োগে তার প্রতিফলন নেই।

তিনি বলেন, অর্থনীতিতে করোনার ধাক্কা সামলে উঠা এবং আগামী দিনে উন্নয়নের গতি ধরে রাখতে হলে পুঁজিবাজারকে কাজে লাগানো ছাড়া সেটি সম্ভব হবে না।

তিনি আরও বলেন, ক্যাপিটাল মার্কেট ও হাউজিং মার্কেট ডেভেলপ করা ছাড়া কোনো দেশ উন্নতি করতে পারেনি।

ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশিদুল ইসলাম আশা প্রকাশ করেন বিএসইসির বর্তমান কমিশন ইতোমধ্যে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন তাতে পুঁজিবাজারে শিগগিরই আস্থা ও গতি ফিরে আসবে।

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৮:১৯ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১৮ জুলাই ২০২০

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।