নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ | প্রিন্ট | 296 বার পঠিত
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্য প্রতিষ্ঠান সিনহা সিকিউরিটিজ লিমিটেডে আজ মঙ্গলবার থেকে স্বাভাবিক লেনদেন শুরু হবে হয়েছে । এর আগে প্রতিষ্ঠানটিতে লেনদেন পাঁচ কার্যদিবস বন্ধ ছিল।
বিএসইসি ও সিডিবিএল সূত্রে এই তথ্য জানা।
গতকাল সোমবার দুপুরে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এমন নির্দেশ না দিয়েছে ডিএসইকে। বিএসইসির সিদ্ধান্তের আলোকে সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) ব্রোকারেজ হাউজের ডিপোজিটরি পার্টিসিপেন্ট (ডিপি) চালু করেছে। আর ডিএসইও লেনদেনের পথ খুলে দিয়েছে।
সিনহা সিকিউরিটিজের এইচআর বিভাগের প্রধান মাহবুবুল আলম বলেন, সোমবার সর্বশেষ ১৫ মিনিটে ১ কোটি ৪৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। তবে ডিএসই ও সিডিবিএলের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সোমবার সিনহা সিকিউরিটিজের কোনো লেনদেন হয়নি। তারা জানান, সোমবার শেষ সময় হওয়ায় লেনদেন হয়নি কিন্তু মঙ্গলবার থেকে লেনদেন হবে।
সিডিবিএল সূত্র জানিয়েছে, সরকার, কমিশন এবং সিডিবিএলের পাওনার ৬কোটি টাকার মধ্যে ৬০ লাখের কিছু বেশি টাকা জমা দিয়েছে। একই সঙ্গে বাকি টাকা আগামী ৬ মাসের মধ্যে ৬টি কিস্তিতে পরিশোধ করবে। এই প্রতিশ্রুতি দেয়ার পরই কমিশন লেনদেন চালু বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে।
উল্লেখ, সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) বকেয়া টাকা না দেয়ায় পহেলা সেপ্টম্বর থেকে সিনহা সিকিউরিটিজের ডিপোজিটরি পার্টিসিপেন্ট (ডিপি) লাইসেন্স স্থগিত করায়। সিনহা সিকিউরিটিজ ৩ বছর ধরে গ্রাহকদের কাছ থেকে বিও অ্যাকাউন্ট রক্ষণাবেক্ষণের বার্ষিক ফি জমা নিলেও তা থেকে সিডিবিএলসহ অন্য স্টেকহোল্ডারদের প্রাপ্য পরিশোধ করেনি। যা টাকার অংকে দাঁড়িয়েছে ৬ কোটিতে। তাই লেনদেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) লেনদেন বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে। ফলে পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে ৭ সেপ্টেম্বর মোট ৫ কার্যদিবস লেনদেন বন্ধ ছিলো। তাতে এই হাউজের ৩১ হাজার বিওধারীরা তাদের শেয়ার লেনদেন করতে পারেনি। এতে অনেক গ্রাহক বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
একটি বড় গ্রুপ অব কোম্পানির মালিকানাধীন ব্রোকারহাউজটির এই ঘটনায় বাজার সংশ্লিষ্টরা বিষ্মিত। ক্ষুব্ধ। তাদের অভিযোগ, এই ধরনের ঘটনা পুঁজিবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা নষ্ট করছে।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত একমি ল্যাবরেটরিজ ও সিনহা সিকিউরিটিজ একই মালিকদের প্রতিষ্ঠান। একমি ল্যাবরেটরিজের চেয়ারম্যান নাসির উর রহমান সিনহা এই ব্রোকারহাউজের (সিনহা সিকিউরিটিজ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
জানা গেছে, তিন বছর ধরে সিনহা সিকিউরিটিজ সিডিবিএলের প্রাপ্য অর্থ পরিশোধ করছে না। অথচ তারা ঠিকই গ্রাহকদের কাছ থেকে ফি সংগ্রহ করছে। প্রতিষ্ঠানটিকে বার বার তাগাদা দিয়েও কোনো সদুত্তর পায়নি সিডিবিএল কর্তৃপক্ষ। এর প্রেক্ষিতে তারা পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) শরনাপন্ন হয়। বিএসইসি প্রতিষ্ঠানটিকে বকেয়া টাকা পরিশোধের জন্য ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়। পাশাপাশি সিডিবিএলকে অনুমতি দেওয়া হয়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি বকেয়া পরিশোধ না করলে ডিপি লাইসেন্স স্থগিত রাখার।
ডিপি লাইসেন্স স্থগিত থাকলে ওই প্রতিষ্ঠানের ডিপি হিসাবে শেয়ারের পে-ইন ও পে-আউট বন্ধ থাকে। তাই শেয়ারের লেনদেন হলেও তা নিষ্পন্ন করা সম্ভব নয়। তাই ডিএসই কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানটির লেনদেন বন্ধ রেখেছে।
ডিপি লাইসেন্স স্থগিতজনিত সমস্যায় ব্রোকারহাউজটির সব সব শাখা অফিস গত কয়েকদিন বন্ধ ছিল। এসব শাখার গ্রাহকরা অফিসে এসে সেটি তালাবদ্ধ দেখে ফিরে গেছেন। এ কারণে তারা লেনদেন তো করতে পারেন-ই-নি, উল্টো হয়রানির শিকার হয়েছেন।
Posted ১১:২২ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২০
bankbimaarthonity.com | saed khan