ব্যাংক বীমা অর্থনীতি ডট কম | সোমবার, ২৮ জানুয়ারি ২০১৯ | প্রিন্ট | 1010 বার পঠিত
মোবাইল ফোন সেবায় স্বল্পমেয়াদী ইন্টারনেট ও ভয়েস (কথা বলা) প্যাকেজের ক্ষেত্রে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। আগামী মাসের ১ তারিখ অর্থাত ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ থেকে ইন্টারনেট ও ভয়েস কলের ক্ষেত্রে সব প্রকার প্যাকেজ, অফার বা বান্ডেলের মেয়াদ হবে ন্য‚নতম ৩ দিন।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন ২৪ জানুয়ারি এ নতুন নির্দেশনা জারি করে। এতে বলা হয়েছে, একজন গ্রাহক ‘পে-পার-ইউজ প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ ৫ টাকার ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন। নির্ধারিত সীমা (৫ টাকা) পার হলে গ্রাহকের মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য ইন্টারনেট প্যাকেজ-বান্ডল-অফার সাবস্ক্রাইব করতে হবে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু বা অটো-রিনিউ অপশন চালু থাকলে মেয়াদ বা পরিমাণ উত্তীর্ণ হওয়ার পরই প্যাকেজটি নতুন করে চালু হয়ে যাবে।
এর আগে গত মাসের শুরুতে মোবাইল অপারেটরগুলোকে দেওয়া এক নির্দেশনায় বিটিআরসি প্যাকেজের সর্বনিম্ন মেয়াদ ৭ দিন করার নির্দেশ দিয়েছিল। একই নির্দেশনায় প্যাকেজের সর্বোচ্চ মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩০ দিন। অবশ্য নতুন নির্দেশনায় সর্বোচ্চ মেয়াদ নিয়ে কিছু বলা হয়নি।
বিটিআরসি গত মাসে যে নির্দেশনা জারি করে, তা নিয়ে আপত্তি ছিল মোবাইল অপারেটরগুলোর। অপারেটগুলোর দাবি, তাদের আয়ের একটি বড় উৎস স্বল্পমেয়াদী প্যাকেজ। এরপর বিটিআরসির সঙ্গে মোবাইল অপারেটরগুলোর বৈঠক হয়। বিটিআরসির কর্মকর্তারা গত ১৬ জানুয়ারি সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে জানান, ২৭ জানুয়ারির পর থেকে ৭ দিনের কম মেয়াদের কোনো ইন্টারনেট প্যাকেজ থাকবে না। এর আগের নির্দেশনায় প্যাকেজের পরিমাণ কমিয়ে ৩৫টিতে নামিয়ে আনতে বলা হয়েছিল। নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্যাকেজের সংখ্যা নিয়ে পরে নির্দেশনা জারি করা হবে।
এদিকে ইন্টারনেট ব্যবহারের সর্বাধুনিক ইন্টারনেট প্রটোকল বা আইপি অ্যাড্রেসিং পদ্ধতি আইপিভি-৬ এ যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশ। এ পদ্ধতি চালু হলে দেশের সব ইন্টারনেট ব্যবহারকারীকে আসল আইপিভি ঠিকানা দেয়া সম্ভব হবে। আইপিভি-৬ চালুর অন্য সুবিধার পাশাপাশি প্রতিটি ডিভাইসের অবস্থান শনাক্ত হওয়ায় স্পুফিং বা মাস্কিং পদ্ধতিতে সংঘটিত অপরাধসহ সব সাইবার অপরাধ কমে আসবে।
নতুন সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জানান, বাংলাদেশ সর্বাধুনিক সংস্করণের তথ্যপ্রযুক্তি গ্রহণে পিছিয়ে থাকবে না। বিশ্বের সঙ্গে সমানতালে এগিয়ে যেতে প্রয়োজনীয় সবকিছুই করবে বর্তমান সরকার। নতুন আইপিভি অ্যাড্রেসিং পদ্ধতিতে যেতে ইতিমধ্যে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) একটি স্ট্যাডি গ্রু গঠন করেছে। এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন কমিশনের প্রকৌশল বিভাগের মহাপরিচালক। বাংলাদেশ এখনও আইপিভি-৪ অ্যাড্রেসিং পদ্ধতি ব্যবহার করছে। অথচ অনেক দেশেরই আইপিভি-৪ ঠিকানা ফুরিয়েছে। কোনো কোনো দেশ পুরোপুরি আইপিভি-৬ ব্যবহার করছে। অনেক দেশে আইপিভি-৬ সবার কাছে না যাওয়ায় আইপিভি-৪ পদ্ধতিও পাশাপাশি ব্যবহার করা হচ্ছে।
স্টাডি গ্রুপ গত বছর ডিসেম্বর মাসে দুটি বৈঠকও করেছে। এতে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি, ইন্টারনেট গেটওয়ে ও মোবাইল ফোন অপারেটররা অংশ নেন। বৈঠকগুলোতে আইপিভি-৬ গ্রহণের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ ও দায়িত্বগুলো নিয়ে ম‚লত আলোচনা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সবাই আইপিভি-৬ গ্রহণের সম্ভাব্য সমস্যা, চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করা এবং সমাধানের উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। এজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সবার পক্ষ থেকে কাজ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান আইপিভি-৬ বাস্তবায়ন কার্যক্রমের পরামর্শক সুমন আহমেদ সাবির। সাবির ও বিডিনগ বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান এবং জাতিসংঘের ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামে (আইজিএফ) মাল্টি স্টেকহোল্ডার অ্যাডভাইজরি গ্রুপের সদস্য। তিনি জানান, চাইলে ছয় মাসের মধ্যে দেশে আইপিভি-৬ চালু করা সম্ভব। চ্যালেঞ্জও খুব বেশি তাও নয়।
Posted ৮:২৭ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২৮ জানুয়ারি ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed