নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার, ২১ জুন ২০২১ | প্রিন্ট | 423 বার পঠিত
গ্রেফাতারের পর জামিন লাভ করেছেন প্রাইম এশিয়ার ট্রাস্টি বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান এমএ খালেক। ঢাকা মহানগর বিজ্ঞ হাকিম আদালত গতকাল বিকেলে তাকে শর্ত-সাপেক্ষে জামিন প্রদান করেন। এর আগে গতকাল দুপুরে রাজধানীর বনশ্রী থেকে তাকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বেসরকারি প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের করা অর্থ আত্মসাৎ ও প্রতারণার মামলায় গ্রেফতার হন ট্রাস্টি বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান এবং ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সাবেক পরিচালক ও শিল্পপতি এম এ খালেক। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এমনটা জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সাবেক পরিচালক এমএ খালেক ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব শুরু করেন। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর ট্রাস্টি বোর্ড থেকে পদত্যাগের পূর্ব পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফান্ড থেকে উন্নয়নের নামে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। পরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে টাকা প্রদানের কথা থাকলে বার বার সময় ক্ষেপণ করতে থাকেন। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর হুমকি দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে দুটি মামলা করা হয় এম এ খালেকের বিরুদ্ধে।
মামলার নথি সূত্রে জানা যায়- ঢাকা মহানগর বিজ্ঞ হাকিম আদালতে গত বছরের ৫ মার্চ ও ৯ আগস্ট মামলা দুটি রুজু করা হয়। যার নং- সি.আর ২২৩/২০২০ এবং সি.আর ৬৬২/২০২০। প্রথম মামলাটির বাদী প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবুল কাশেম মোল্লা এবং দ্বিতীয়টির বাদি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন কর্মকর্তা মো. নাফিদ মোমেন। নথিতে উল্লেখ করা হয়- ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর কোন আইনকানুনের পরোয়া না করে নিজের ইচ্ছেমতো বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করতে থাকেন এমএ খালেক। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে ব্যবহারের কথা বলে বিভিন্ন সময়ে আর্থিক ফান্ড থেকে ৩৭ টি ব্যাংক চেকের মাধ্যমে প্রায় দেড় কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। এছাড়াও নিজ নামে আরো বিপুল পরিমান টাকা হাতিয়ে নেন তিনি।
দীর্ঘদিন যাবৎ টাকা পরিশোধ না করায় ট্রাস্টি বোর্ডের বাকি সদস্যরা তাকে চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। একপর্যায়ে ২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর ট্রাস্টি বোর্ড থেকে পদত্যাগ করেন এবং টাকা প্রদানের জন্য কিছুদিন সময় চেয়ে নেন এমএ খালেক। কিন্তু বারবার অনুরোধ স্বত্ত্বেও টাকা ফেরত দেননি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। একপর্যায়ে গত বছরের ১২ জানুয়ারি টাকা প্রদানে অস্বীকার করেন এবং পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে হুমকি প্রদান করেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কার্যক্রম বন্ধ করবেন বলেও হুমকি দিতে থাকেন। উপায়ন্তু না দেখে অবশেষে আইনের দারস্থ হয় প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়।
মামলা দায়ের হলেও আদালতে অনুপস্থিত থাকায় গত বছরের ৫ মার্চ ও ৯ আগস্ট সমন জারি করে মহানগর হাকিম আদালত। অবশেষে গতকাল দুপুরে বনশ্রী থেকে তাকে গ্রেফতার করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
উল্লেখ্য, প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে এমএ খালেক বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ৯০ কোটি টাকা নিয়েছেন। বর্তমানের সুদাসলে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৬৭ কোটি টাকা। যে দুটি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে সেখানে টাকার পরিমাণ ১ কোটি ৪৯ লাখ ৭০ হাজার।
Posted ১১:৪৮ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ২১ জুন ২০২১
bankbimaarthonity.com | saed khan