পান্না কুমার রায় রজত | বুধবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২১ | প্রিন্ট | 2008 বার পঠিত
প্যারাডাইস পেপার্স নামে যে এক কোটির ও বেশি গোপন দলিলপত্র ২০১৭ সালের নভেম্বরে প্রকাশিত হয়েছিল, তাতে উঠে এসেছে কীভাবে পৃথিবীর বড় বড় ধনী ও ক্ষমতাবান লোকেরা আয়কর এড়ানোর জন্য বিভিন্ন ক্যারিবিয়ান দ্বীপে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করেছেন। অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক কনসোর্টিয়াম (আইসিআইজে) এবং জার্মান সংবাদপত্র জুড ডয়েচে সাইটুংয়ের করা এক তদন্তের অংশ হিসেবে এক কোটি ৩০ লাখেরও বেশি দলিলপত্র পাওয়া গেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, অফশোর বা বিদেশি বিনিয়োগ এখন একটি ইন্ডাস্ট্রিতে পরিণত হয়েছে। এর মাধ্যমে আয়কর কর্তৃপক্ষের আওতার বাইরে বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার কোটি ডলার গচ্ছিত রাখা হয়েছে।
যে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় বিদেশি সূত্র থেকে বৈদেশিক মুদ্রায় তহবিল সৃষ্টি হয় এবং দেশীয় আইন-কানুনের বাইরে আলাদা আইন-কানুনের মাধ্যমে এই তহবিল পরিচালিত হয় ও হিসাব সংরক্ষণ করা হয় তাকে অফশোর ব্যাংকিং বলে। অর্থাৎ অফশোর ব্যাংকিং অনিবাসী বৈদেশিক মুদ্রার সম্পদ এবং দায়গুলোর সাথে জড়িত আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং ব্যবসাকে বোঝায়। এটি এমন একটি ব্যাংকিং অপারেশনগুলোকে নির্দেশ করে, যা শুধুমাত্র অনিবাসীদের যেমন- মাল্টিন্যাশনাল পণ্য ও সেবা এবং ফাইন্যান্সারদের সম্পৃক্ত করে এবং এটি দেশীয় ব্যাংকিংয়ের সাথে মিশ্রিত হয় না।
শাব্দিক অর্থে এটি প্রথম বোঝানো হয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাহামা, স্যাম্যান দ্বীপপুঞ্জের মতো সমুদ্রসৈকতের কেন্দ্রগুলোকে যেখানে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের দিক দিয়ে অনেক শুল্ক মওকুফ করা হয়েছিল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে অফশোর ব্যাংকিং সমুদ্রসৈকতের নিকটে হওয়ার প্রয়োজন নেই। হংকং, শ্রীলংকা, ফিলিফাইন এবং সিঙ্গাপুরের মতো স্থানে এশিয়ার চারটি এই ধরনের ব্যাংকিং ইউনিট রয়েছে। এটি বৈদেশিক মুদ্রা ঋণ ও ধার দেয়া নেয়ার কাজে নিয়োজিত থাকে।
১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর অফশোর ব্যাংকিং পরিচালনার অনুমোদন দেয়। দেশে কার্যরত ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ দেয়ার আলাদা ইউনিটের নামই হলো অফশোর ব্যাংকিং। এর তহবিল বিদেশ থেকে সংগ্রহ করতে হবে, তখন শর্ত দেয়া হয়েছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি নিয়ে অনেক ব্যাংকই অফশোর ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
অফশোর ব্যাংকিং ব্যবসায় সাধারণ বাণিজ্যিক ব্যাংক ব্যবসায়ের পাশাপাশি পরিচালনা করা যায়। আমানত গ্রহণ ও ঋণ প্রদানের দিক থেকে অফশোর ব্যাংকিংয়ের কার্যক্রম সাধারণ ব্যাংকগুলোর মতো হলে ও এ জাতীয় ব্যাংকের আমানত গ্রহণ এবং ঋণ প্রদান এ দুুটি কার্যক্রমই বৈদেশিক সূত্র থেকে আগমন ও বিদেশি গ্রাহকের অনুকূলে প্রদান করা হয়। অর্থাৎ এই ব্যাংকের কার্যক্রম শুধু অনিবাসীদের মধ্যেই সীমিত থাকে। স্থানীয় মুদ্রার পরিবর্তে বৈদেশিক মুদ্রায় হিসাব হয় অফশোর ব্যাংকিংয়ে। ব্যাংকের কোনো নিয়ম-নীতিমালা অফশোর ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে প্রয়োগ হয় না। কেবল মুনাফা ও লোকসানের হিসাব যোগ হয় ব্যাংকের মূল হিসাবে।
২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রথমবারের মতো অফশোর ব্যাংকিং পরিচালনার জন্য পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই নীতিমালা অনুযায়ী একটি ব্যাংক যে ঋণ বিতরণ করবে তার অন্তত ৭৫ শতাংশ দেশেই বিনিয়োগ হতে হবে। অন্য কোনো অবস্থায় ব্যাংকের মোট মূলধনের ২০ শতাংশের বেশি আমানত অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সংগ্রহ করা যাবে না। এ ছাড়া ব্যাংকের দায়-সম্পদ ব্যবস্থাপনা মূলধন, সিআরআর ও এসএলআর, সংরক্ষণসহ সবক্ষেত্রে সাধারণ ব্যাংকিংয়ের মতো নিয়ম মেনে চলতে হবে।
নীতিমালা অনুযায়ী, দেশের বিভিন্ন অর্থনৈতিক অঞ্চলে থাকা সম্পূর্ণ বিদেশি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যাংকিং কার্যক্রম করা যাবে। এক্ষেত্রে ঋণ বিতরণ ও আমানত নেয়া যাবে। কিন্তু যৌথমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমতি নিতে হবে। নীতিমালায় আরো উল্লেখ করা হয়েছে, অফশোর ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদনের পরে প্রতিটি ব্যাংককে একটি নিজস্ব নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। নীতিমালাটি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ নির্ধারণ করবে। অফশোর ব্যাংকিংয়ে কোনোভাবেই ব্যাংকের নষ্ট হিসাব থেকে অর্থ স্থানান্তর করা যাবে না। মূল ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে কোনো হিসাব ও সমন্বয় করা যাবে না। অফশোর ব্যাংকিংসেবা ব্যাংক-সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি নিতে পারবে না।
শুরুতে বিদেশি ব্যাংকগুলো এ সেবায় থাকলেও প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ব্যাংক যুক্ত হচ্ছে অফশোর ব্যাংকিংয়ে। গত পাঁচ বছরে এ ব্যাংকিং-ব্যবস্থা বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। যে কারণে বিদেশি ব্যাংকের পাশাপাশি দেশীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোও আলাদা শাখা বা ইউনিট খুলেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত অফশোর ব্যাংকিংয়ের ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৫৯ হাজার ২২৭ কোটি টাকা। এক বছর পূর্বে অর্থাৎ ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর ছিল ৫১ হাজার ৬৯১ কোটি টাকা। এ হিসাবে এক বছরে অফশোর ব্যাংকিংয়ের ঋণ বেড়েছে ১৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ। যার বড় অংশই বিতরণ করেছে বিদেশি মালিকানাধীন হংকং সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন (এইচএসবিসি) ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক (স্ট্যানচার্ট) প্রচলিত আইনের বাইরে ব্যাংকিংয়ের সুযোগ থাকায় সবাই এখন অফশোর ব্যাংকিংয়ের দিকে ঝুঁকছে। তবে এ সুবিধা মূলত রফতানিকারকদের জন্য। কম সুদ হওয়ায় ব্যবসায়ীরা এ ধরনের ঋণের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এ ছাড়া সুদের হার কম হওয়ায় ব্যবসায়ীরা এখন অফশোর ইউনিট থেকে ঋণ পেতে আগ্রহী। অফশোর ইউনিট থেকে ব্যাংকগুলো বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ দিয়ে থাকে। এ ঋণের সুদহার ৬ শতাংশের নিচে।
বৃহত্তর গোপনীয়তা, কম বিধিনিষেধযুক্ত আইনি প্রবিধান, কম বা কোনো ট্যাক্সেশন নেই, আমানতের সহজ অ্যাক্সেস স্থানীয় রাজনৈতিক বা আর্থিক অস্থিরতার বিপরীতে আমানত সুরক্ষা এবং সরকারি হস্তক্ষেপের অভাবের কারণে অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাংক হারের চেয়ে বেশি সুদের হার সরবরাহ করতে পারে। অফশোর ব্যাংকিং সুদের ওপর ব্যক্তিগত আয়কর-সাপেক্ষ সম্পদকে আটকায় না, কম খরচে সেবা দিয়ে কাজ করে। এ ছাড়াও অফশোর ব্যাংকিংয়ে প্রায়ই আমানতের সুদের হার হ্রাস করে। এই ব্যাংকিং উন্নয়নশীল দেশগুলোকে উৎস বিনিয়োগকে সহায়তা করতে এবং তাদের অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি তৈরি করতে সহায়তা করে এবং উন্নত বিশ্বের উন্নয়নে সহায়তা করতে পারে।
ঙইট বা অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট স্বাধীনভাবে বৈদেশিক আমানতের এবং ঋণগ্রহণ করতে পারবে। অনুরূপভাবে ঊচত এলাকায় শিল্পসমূহে ঋণ বা বিনিয়োগ করতে পারবে। ঙইট কতগুলো নির্দিষ্ট বৈদেশিক মুদ্রার ব্যবসা করতে পারবে। যেমন- ডলার, পাউন্ড, স্টার্লিং কানাডীয় ডলার, ডয়েচ মার্ক, জাপানি ইয়েন, সুইস ফ্রাংক, নেদারল্যান্ডস গিল্ডার, ফ্রান্স ফ্রাঙ্ক, সুইডিশ ক্রোনা, সিঙ্গাপুরী ডলার। ঙইট এর ভৌগোলিক অবস্থান সম্পর্কে কোনো বিধিনিষেধ থাকবে না। এটি ঊচত বা অন্য যে কোনো স্থানে হতে পারে। ঊচত এলাকার বাইরে বাংলাদেশি নাগরিকরা ব্যাংকিং লেনদেন করতে পারবে না। তবে অস্থানীয়দের ক্ষেত্রে অসুবিধা নেই।
তবে অবাধ উদারনীতির আড়ালে অফশোর ব্যাংকিংয়ে আন্ডারগ্রাউন্ড অর্থনীতি এবং সংঘটিত অপরাধের সাথে মানি লন্ডারিংয়ের সাথে ও যুক্ত থাকতে পারে। অফশোর বিচার বিভাগগুলো প্রায়ই পূর্ববর্তী। তাই সরাসরি অ্যাক্সেস এবং তথ্য অ্যাক্সেস পাওয়া কঠিন হতে পারে। অফশোর প্রাইভেট ব্যাংকিং সাধারণত উচ্চআয়ের মানুষেরা খোলে, কেননা অফশোর হিসাবগুলো পরিচালনা ও চালু রাখার খরচ অনেক বেশি, তাই মনিটরিং ব্যবস্থাটা যথাযথ বিধি মোতাবেক পরিচালনাকারী ব্যাংকগুলোর দায়িত্ববোধের ওপর নির্ভরশীল বলে আমি মনে করি।
বৈদেশিক করেসপনডেন্টদের নিকট যেমনভাবে দেশীয় ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রার হিসাব পরিচালনা করতে পারে, তেমনি ঙইট-এর নিকট ও তারা বৈদেশিক মুদ্রার হিসাব পরিচালনা করতে পারে।
৩১ মার্চ ২০১৯ মোতাবেক বিদেশি মালিকানাধীন এইচএসবিসি, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড, সিটিব্যাংক এনএ, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ও উরি ব্যাংক অফশোর ব্যাংকিংসেবা দিচ্ছে। এ ছাড়া দেশীয় ব্যাংকের মধ্যে বেসরকারি খাতের এবি ব্যাংক, আল-আরাফাহ ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, মধুমতি ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, দি সিটি ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, ইউসিবিএল ও উত্তরা ব্যাংক এ সেবা দিচ্ছে। তা ছাড়া রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মধ্যে একমাত্র অগ্রণী ব্যাংক অফশোর ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে যুক্ত।
১৮ জুন ২০২০ বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রবিধি ও নীতি বিভাগ জারিকৃত সার্কুলার অনুযায়ী, দেশি শিল্পোদ্যোক্তাদের মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেয়ার আগে বিআরপিডির অনুমোদন নেয়ার শর্ত তুলে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে একটি ব্যাংকের মূলধনের ২০ শতাংশের পরিবর্তে এখন ৩০ শতাংশ পর্যন্ত তহবিল সংগ্রহ করা যাবে। ঋণ দেয়ার পর বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগকে অবহিত করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মতে, ব্যাংকের অফশোর কার্যক্রমের তহবিল আহরণের সুযোগ বাড়ানো, বৈদেশিক তহবিলের ব্যবহার নিশ্চিত করা, তহবিল ব্যবস্থাপনা যথাযথ রাখার মাধ্যমে অফশোর ব্যবসার সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং অফশোর ব্যাংকিং কার্যক্রমের আরো সুষ্ঠু বিকাশের জন্য এসব সংশোধনী আনা হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী ব্যাংকগুলোর আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং ব্যবসা পরিচালনার জন্য ঙইট একটি অনন্য সমাধান হিসেবে কাজ করে, যার মাধ্যমে গ্রাহকদের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিযোগিতামূলক মূল্যের সুযোগ গ্রহণ করার সুবিধা সৃষ্টি হয়। অফশোর ব্যাংকের রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইজেড) এবং হাইটেক পার্কে স্থাপিত শতভাগ বিদেশি মালিকানাধীন যৌথ উদ্যোগ এবং স্থানীয় মালিকানাধীন শিল্পপ্রতিষ্ঠানেও কার্যক্রম রেখে দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে।
কোভিড-১৯ মহামারীর এই সংকটের সময়ে অফশোর ব্যাংকিংয়ের নীতিমালা সহজকরণ একটি ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে আমি মনে করি। বিশ্লেষকরা বলছেন, অফশোর বা বিদেশি বিনিয়োগ এখন একটি ইন্ডাস্ট্রিতে পরিণত হয়েছে। এর মাধ্যমে আয়কর কর্তৃপক্ষের আওতার বাইরে বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার কোটি ডলার গচ্ছিত রাখা হয়েছে।
Posted ১১:০৩ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২১
bankbimaarthonity.com | rina sristy