বিবিএ নিউজ.নেট | মঙ্গলবার, ২৪ মে ২০২২ | প্রিন্ট | 171 বার পঠিত
পতনের ধাক্কা সামলে উঠতে পুঁজিবাজার নিয়ে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েও বাজারে আস্থা ফেরাতে পারেনি বিনিয়োগকারীদের। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে অর্থমন্ত্রীর বৈঠক, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নানা ঘোষণায় যে উত্থান হয়েছিল তাও এক দিন যেতে না যেতেই আবারও পতনে শেষ হলো লেনদেন। গত সোমবার ১১৮ পয়েন্ট সূচক উল্লম্ফন নিয়ে লেনদেন শুরু করা পুঁজিবাজারে গতকাল মঙ্গলবার পতন হলো ৫০ পয়েন্ট। গত সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়া বড় দরপতনে যে চিত্র প্রতিদিন দেখা গেছে, সেটি দেখা গেল আবার। সূচক বেড়ে গিয়ে আশা তৈরি করে পরে হতাশ করেছে বিনিয়োগকারীদের।
টানা আট কার্যদিবসে ৫৫৫ পয়েন্ট সূচকের পতনের পর রোববার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল বসেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, অর্থসচিব আব্দুর রউফ তালুকদার এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআরর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সঙ্গে। বৈঠকে বাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দেন মন্ত্রী।
সিদ্ধান্ত হয়, এখন থেকে ব্যাংকগুলো আইসিবির মাধ্যমে পুঁজিবাজারে যে বিনিয়োগ করবে, সেটাকে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগসীমার (এক্সপোজার লিমিট) বাইরে রাখা হবে। এ ছাড়া ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য আইসিবিকে দেয়া ১৫৩ কোটি টাকার যে তহবিলের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল, সেটির মেয়াদ বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তহবিলের আকারও বাড়িয়ে ৩০০ কোটি টাকা করা হবে। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এবং আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করার নির্দেশও দেন মন্ত্রী। এই বৈঠকের প্রতিক্রিয়ায় গত সোমবার ১১৮ পয়েন্টের উত্থান হলেও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে শঙ্কা রয়ে গিয়েছিল, সেটির প্রমাণ পাওয়া যায় গতকালের লেনদেনেই।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সব ধরনের মূল্য সূচকের পতন হলেও টাকার অংকে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) একই চিত্রে লেনদেন শেষ হয়েছে। গতকাল ডিএসইতে ৬৬০ কোটি ৮৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা আগেরদিন থেকে ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা বেশি। গতকাল ডিএসইতে ৬৫৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। এছাড়া, ডিএসই প্রধান বা ডিএসইএক্স সূচক ৫০ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৬ হাজার ২১১ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ৯ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৬৭ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ১৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২৯৫ পয়েন্টে। গতকাল ডিএসইতে ৩৭৬টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫টির, কমেছে ২৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৩টির।
অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)ও সূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। আজ সিএসই সার্বিক সূচক সিএসপিআই ১২৯ পয়েন্ট কমেছে। এদিন সিএসইতে ১৮ কোটি ৭০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
গতকাল সবচেয়ে বেশি শেয়ার দর হারিয়েছে সিরামিকস, চামড়া, টেলিযোগাযোগ, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের সব শেয়ার। এছাড়া প্রধান খাতগুলোর মধ্যে ওষুধ ও রসায়ন খাতে দেখা গেছে মিশ্র প্রবণতা। বাকি সব খাতেই দর হারিয়েছে সিংহভাগ কোম্পানি। ওষুধ ও রসায়ন খাতের ১৩টি কোম্পানির দর বৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৬টির। প্রধান অন্য খাতগুলোর মধ্যে বস্ত্রে ৪টি কোম্পানির দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ৫০টির দর, প্রকৌশল খাতে ৬টির দর বৃদ্ধির বিপরীতে ৩৪টি, সাধারণ বিমায় ৫ টির দর বৃদ্ধির বিপরীতে ৩২টি, জীবন বিমায় ৩টির দর বৃদ্ধির বিপরীতে ৯টির, খাদ্য খাতে ৩টির বিপরীতে ১৮টি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৩টির বিপরীতে ২০টি, মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে ৪টির বিপরীতে ২০টি, বিবিধ খাতে ২টির বিপরীতে ১২টি, ব্যাংক খাতে ৬টির বিপরীতে ১৪টি, আর্থিক খাতে ৩টির বিপরীতে ১৩টি, তথ্য প্রযুক্তিতে একটির বিপরীতে ১০টি, সিমেন্টের একটির বিপরীতে ৫টি, সেবা ও আবাসনে একটির বিপরীতে ৩টির দর কমেছে।
Posted ৫:১৬ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৪ মে ২০২২
bankbimaarthonity.com | rina sristy