বিবিএনিউজ.নেট | শুক্রবার, ০১ মার্চ ২০১৯ | প্রিন্ট | 1463 বার পঠিত
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত মুন্নু সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ডিএসই’র লিস্টিং রেগুলেশন ভঙ্গ করে বিনিয়োগকারীদের বিও অ্যাকাউন্টে ডিভিডেন্ড পাঠায়নি মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কোম্পানিটির ৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৮ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে এ সংক্রান্ত ‘অ্যামফেসিস অব ম্যাটার’ প্রদান করে নিরীক্ষক এ ওয়াহাব অ্যান্ড কোম্পানি। এর আগের হিসাব বছরের আর্থিক প্রতিবেদনেও ডিভিডেন্ড পরিশোধ না করার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলে তত্কালীন নিরীক্ষক সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোম্পানি।
নিরীক্ষক এ ওয়াহাব অ্যান্ড কোম্পানি তার মতামতে জানিয়েছে, মুন্নু সিরামিকের আর্থিক প্রতিবেদনের ১৭নং নোটে আনক্লেইমড ডিভিডেন্ড হিসেবে ২ কোটি ৯১ লাখ ৫৪ হাজার ২৬৫ টাকা দেখানো হয়েছে। তবে লভ্যাংশের অর্থ জমা রাখার জন্য মনোনীত ব্যাংক হিসাবে মাত্র ১৪ লাখ ৬ হাজার ১৫ টাকার স্থিতি দেখা গেছে। কোম্পানিটি ৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৭ হিসাব বছরে ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছিল, টাকার অংকে যার পরিমাণ ১ কোটি ১৯ লাখ ৬৪ হাজার ১০ টাকা। কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ৩৭ লাখ ৭ হাজার ৭৩ টাকা ব্যাংকে জমা দেয়া হয়, যা ডিএসইর লিস্টিং রেগুলেশন ২০১৫-এর সেকশন ২৮(১)-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
উল্লেখ্য, ডিএসইর লিস্টিং রেগুলেশন ২০১৫-এর সেকশন ২৮(১) অনুসারে, লভ্যাংশ অনুমোদনের ৩০ দিনের মধ্যে নগদ লভ্যাংশের ক্ষেত্রে শেয়ারহোল্ডারদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে আর স্টক লভ্যাংশের ক্ষেত্রে শেয়ারহোল্ডারের বিও অ্যাকাউন্টে পাঠানোর নিয়ম রয়েছে।
২০১৬-১৭ হিসাব বছরের আর্থিক প্রতিবেদনে ২০১৫-১৬ হিসাব বছরের জন্য ঘোষিত ৫ শতাংশ ডিভিডেন্ডের টাকা শেয়ারহোল্ডারদের পরিশোধ না করার বিষয়ে কোম্পানিটি জানিয়েছিল, তাদের পরিচালকেরা নতুন যন্ত্রপাতি কেনার জন্য লভ্যাংশের অর্থ গ্রহণ করেননি। এ কারণে পরিচালকদের ডিভিডেন্ডের অর্থ অপরিশোধিত দেখানো হয়েছে।
যদিও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর পরিচালকদের মধ্যে ক্যাশ ডিভিডেন্ড গ্রহণ না করার সংস্কৃতি বিদ্যমান রয়েছে। তবে এক্ষেত্রে ডিভিডেন্ড ঘোষণার সময়ই উল্লেখ করা হয়, ঘোষিত নগদ ডিভিডেন্ড পরিচালক ব্যতীত সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য। কিন্তু মুন্নু সিরামিকের ডিভিডেন্ড ঘোষণার ক্ষেত্রে এ ধরনের কোনো কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
আগের বছরে উল্লেখ করলেও মুন্নু সিরামিকের ২০১৭-১৮ হিসাব বছরের আর্থিক প্রতিবেদনে ডিভিডেন্ড পরিশোধ না করার বিষয়ে কিছু বলাই হয়নি। তবে আর্থিক প্রতিবেদনের ১৭নং নোটে দেখা যায়, ওপেনিং ব্যালেন্স হিসাবে ২ কোটি ২০ লাখ ৩৪ হাজার ৯২৭ টাকা দেখানো হয়েছে। এর সঙ্গে ২০১৬-১৭ হিসাব বছরের ক্যাশ ডিভিডেন্ড হিসেবে ১ কোটি ১৯ লাখ ৬৪ হাজার ১০ টাকা যোগ হয়েছে। আর ৪৮ লাখ ৪৪ হাজার ৬৭২ টাকা ডিভিডেন্ড হিসেবে পরিশোধ করা হয়েছে। সবশেষে আনক্লেইমড ডিভিডেন্ড হিসেবে ২ কোটি ৯১ লাখ ৫৪ হাজার ২৬৫ টাকার স্থিতি দেখানো হয়েছে।
মুন্নু সিরামিক ৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৮ হিসাব বছরের জন্য ৩০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছে। সমাপ্ত হিসাব বছরে এর শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২ টাকা ১১ পয়সা ও শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) ৯১ টাকা ৪৬ পয়সা। ২০১৭ হিসাব বছরে ৫ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দেয় কোম্পানিটি। সে সময়ে এর ইপিএস ছিল ১০ পয়সা ও এনএভিপিএস ৯৪ টাকা ৩২ পয়সায়। ২০১৬ হিসাব বছরে ৫ শতাংশ নগদ ডিভিডেন্ড দেয় মুন্নু সিরামিক। সে বছর ইপিএস হয়েছিল ৯ পয়সা।
Posted ৮:০৯ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০১ মার্চ ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed