নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট | 152 বার পঠিত
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) পক্ষ থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে জুয়েলারি শিল্পের সমস্যা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চুরি ,ডাকাতি, ব্যবসায়ীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা এবং খুনের ঘটনায় গভীর উদ্ভেগ প্রকাশের পাশাপাশি এই শিল্পের নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছে কর্মকর্তারা। একই সঙ্গে সারাদেশে জুয়েলারি শিল্পে চুরি, ডাকাতি ও হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলাগুলো দ্রুত তদন্ত সম্পন্ন করে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করার আবেদন জানানো হয়েছে। এছাড়াও জুয়েলারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লুণ্ঠিত এবং চুরিকৃত স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে বাজুস কর্মকর্তারা। ১৯৮০ সাল থেকে এ পর্যন্ত সন্ত্রাসী হামলায় জুয়েলারি শিল্পের সঙ্গে জড়িত ২০ জনকে হত্যা করা হয়েছে এবং আহত হয়েছেন আরও অনেক।
বৃহস্পতিবার (০৮ সেপ্টেম্বর) সকালে পান্থপথস্থ বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) কার্যালয়ে জুয়েলারি শিল্পের নিরাপত্তার দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বাজুসের এন্টি স্মাগলিং অ্যান্ড ল এনফোর্সমেন্টের চেয়ারম্যান এনামুল হক খান দোলন লিখিত বক্তব্য পাঠ করেনে।
এ সময় সংগঠনটির সাবেক প্রেসিডেন্ট দিলীপ রায় ও বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন এন্টি স্মাগলিং অ্যান্ড ল এনফোর্সমেন্টের সদস্য সচিব ইকবাল উদ্দিন , বাজুসের সাবেক সভাপতি ডা. দিলীপ কুমার রায়, সহ সভাপতি গোলজার আহমেদ,কার্যনির্বাহী সদস্য মো. রিপনুল হাসান, জয়দেব সাহা,বিপুল ঘোষ শংকর, স্বপন চন্দ্র কর্মকার, বিকাশ ঘোষ, ও বাবুল রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে এনামুল হক খান দোলন বলেন, সারাদেশের প্রায় ৪০ হাজার জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন- বাজুস। তিনি বলেন, জুয়েলারি শিল্পের চলমান সংকট ও সমস্যা, দেশি-বিদেশি চোরাকারবারি সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য, অর্থপাচার ও চোরাচালান বন্ধে কাস্টমসসহ সকল আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর জোরালো অভিযানের দাবি জানিয়ে গত ১৩ আগস্ট ঐতিহ্যবাহী বাণিজ্য সংগঠন বাজুস সংবাদ সম্মেলনে মিলিত হয়েছিল। এই সংবাদ সম্মেলনের পর আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো ব্যাপক তৎপরতা শুরু করেছে। বাজুসের আহ্বানে বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড- এনবিআরের কাস্টমস বিভাগ ও অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো ব্যাপক সাড়া দেওয়ায় আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
এনামুল হক খান দোলন বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে জুয়েলারি দোকানে চুরি ও প্রকাশ্যে ডাকাতির ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ৩১ আগস্ট গভীর রাতে ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার কলাতিয়া বাজারের মন্দির মার্কেটের কাঁকন জুয়েলার্সে চুরির ঘটনা ঘটেছে। চোরের দল দোকান থেকে প্রায় ১৫০ ভরি স্বর্ণের ও দুই কেজি রূপার গহনা চুরি করে নিয়ে যায়।
দেশের বিভিন্ন স্থানের জুয়েলারি শিল্পের ডাকাতির ঘটনা বর্ণনা করে তিনি বলেন, গত ২৯ জুলাই রাজধানী ঢাকার মিরপুরের রূপনগরে রজনীগন্ধা মার্কেটে দিন দুপুরে নিউ বিসমিল্লাহ জুয়েলার্সে চুরির ঘটনা ঘটেছে। চোরের দল দোকান থেকে প্রায় ৪০ ভরি স্বর্ণ ও ৫০ ভরি রূপা চুরি করে নিয়ে যায়।
এর আগে ২০ জুলাই ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলাধীন প্রদীপ জুয়েলার্সে প্রকাশ্যে ককটেল ফাটিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ডাকাতি সংগঠিত হয়। ডাকাতদল দোকান থেকে প্রায় ৫০ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। এ সময় ডাকাতের গুলিতে দোকান মালিক অধীর কর্মকার গুরুতর আহত হন। এ ব্যাপারে ২১ জুলাই ভালুকা মডেল থানায় মামলা নং ৪০ দায়ের করা হয়েছে।
গত ০৬ জুন ময়মনসিংহের ট্রাংক পট্টিতে বর্ষা জুয়েলার্সে চুরির ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে ৮ জুন কোতয়ান মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে মামলা নং-৩১। গত ২৪ এপ্রিল রাজধানীর ঢাকার রাজারবাগ কালী মন্দীর মার্কেটে মা গোল্ড হাউসে চুরির ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে ২৫ এপ্রিল সবুজবাগ থানা মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং-২৬। এছাড়া কচুক্ষেত রজনীগন্ধা টাওয়ারস্থ রাঙ্গাপরি জুয়েলার্সে চুরির ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে ৫ ফেব্রুয়ারি ভাষানটেক থান মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং-০৭ (০২)।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সর্বশেষ গত ০৬ সেপ্টেম্বর বন্দর নগরী চট্টগ্রামের বাজুস সদস্য ধীমান ধরকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনায় আমরা গভীরভাবে মর্মাহত ও শোক প্রকাশ করছি। আমরা ঘটনাগুলো দ্রুততার সঙ্গে তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির আওতায় আনা এবং চুরি হওয়া স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।
Posted ৫:৪৯ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২
bankbimaarthonity.com | rina sristy