বিবিএনিউজ.নেট | বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০১৯ | প্রিন্ট | 685 বার পঠিত
দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে রাজধানীর হাতিরঝিলে অবস্থিত তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ভবন সিলগালা করে দিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। মঙ্গলবার রাত ৭ টা ৪৫ মিনিটে রাজউকের পরিচালক প্রশাসন ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খন্দকার অলিউর রহমান ভবনটির প্রতিটি তলা পরিদর্শন শেষে মূল ফটক সিলগালা করে দেন। এর আগে ভবনটির সকল প্রকার ইউটিলিটি সার্ভিসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় আদালত। এদিকে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সরেজমিনে তদন্তপূর্বক অতি দ্রুতই ভবনটি ভেঙ্গে ফেলা হবে। মাইন দিয়ে আধুনিক সর্বোচ্চ নিরাপদ প্রযুক্তি পদ্ধতি ব্যবহার করে (কন্ট্রোলড ডিমোলিশন বা নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ) পদ্ধতি ব্যবহার করে ভবনটিকে ভাঙ্গা হবে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন সংস্থাটির প্রধান প্রকৌশলী রায়হানুল ফেরদৌস। সিলগালা করার আগে ভবনটিতে অবস্থিত সকল অফিসের মালামাল সরিয়ে নিতে ৫টা পর্যন্ত সময় দেয় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এর আগে সকাল নয়টার আগেই রাজউকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারী, বিপুল সংখ্যক পুলিশ, সেনাবাহিনীর সদস্যসহ বিজিএমইএ ভবনের সামনে এসে উপস্থিত হন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রায়হানুল ফেরদৌস বলেন, বিজিএমইএ ভবন অপসারণের অংশ হিসেবে আমরা প্রথমে ইউটিলিটি সার্ভিসের কাজ বন্ধ রেখেছি। ভবনে যারা আছেন তাদের মালামাল সরিয়ে নেয়ার জন্য রাজউক কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত তাদের সময় দিয়েছেন। এরমধ্যে তাদের মালামাল সরিয়ে নিতে হবে। তিনি বলেন, এরইমধ্যে আমরা ভবনটি চীনা বিশেষজ্ঞদের দেখিয়েছি। তারা সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন। মূলত ভবনটি কন্ট্রোল ডিমোলেশনের মাধ্যমে অপসারণ করা হবে। ইতিপূর্বে র্যাংগস ভবন অপসারণ করতে গিয়ে বেশকিছু সমস্যা হয়েছে। আমরা চাই সেরকম ঘটনা যাতে আর না ঘটে। এজন্য যত ধরনের সতর্কতা আছে তা অনুসরণ করা হবে।
প্রধান প্রকৌশলী বলেন, ভবনটি ভাঙ্গার অংশ হিসেবে আমরা এখানকার সেবা সার্ভিসগুলো বিচ্ছিন্ন করছি। যারা ভাড়াটিয়া আছেন তাদের মালামাল সরিয়ে নেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। তিনি বলেন, এর আগে র্যাংগস ভবন অপসারণ করতে বেশকিছু ক্যাজুয়ালিটি হয়েছিল। আমরা চাই এ ভবনটি সঠিকভাবে অপসারণ করতে। তাই চাইনিজ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কন্ট্রোলড ডিমোলিশন পদ্ধতিতে এটি অপসারণ করা হবে। কন্ট্রোলড ডিমোলিশন একটি প্রসেসের বিষয়। এটি একটি বিশাল ভবন। আমরা আজ থেকে ভবন অপসারণের প্রাথমিক কাজ শুরু করেছি, যা শেষ করতে কিছুটা সময় লাগবে।
উপস্থিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খন্দকার অলিউর রহমান বলেছেন, বিকেল ৫টার পর বিজিএমইএ ভবন সিলগালা করে দিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেব। আইনের ভিত্তিতে আমরা বিজিএমইএ ভবন অপসারণের কাজ শুরু করেছি। আমরা যে কাজগুলো শুরু করেছি এটাও ভবন ভাঙ্গার অংশ। এ ছাড়া এখানে টেকনিক্যাল ও ম্যানেজমেন্টের বিষয় আছে। এগুলো শেষ হলেই আমরা ভবন ভাঙ্গার কাজ শুরু করব। এই বড় ভবনের নানা বিষয় দেখতে হচ্ছে, এখানে অনেকগুলো ব্যাংক আছে সেটাও দেখতে হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ কাজ শেষ করতে পারব, এ কাজে মূল সহযোগী হবেন চীনা বিশেষজ্ঞরা। তিনি বলেন, বারবার তাদের সময় দেয়ার পরও নানা অজুহাতে এখান থেকে অফিস সরানো হয়নি। আমাদের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে তারা অনেকটা কাজ সম্পন্ন করেছেন। পরে দ্বিতীয় দফা সময় দেয়া হয়। এখনও কাজ শেষ না হওয়ায় বিকেল ৫টা পর্যন্ত সময় চাইলে আমরা সম্মতি দিয়েছি। এ সময়ের মধ্যে তারা তাদের অফিস অপসারণে ব্যর্থ হলে বিকেল ৫টার পরই বিজিএমইএ ভবন সিলগালা করে দেয়া হবে। উল্লেখ্য, এর আগে সর্বশেষ ১২ এপ্রিলের মধ্যে ভবনটি সরিয়ে নিতে সময় দিয়েছিল আদালত। নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার পর আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে নেমেছে রাজউক।
–
Posted ১:০৮ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed