জাহিদুল ইসলাম | বুধবার, ১৩ অক্টোবর ২০২১ | প্রিন্ট | 860 বার পঠিত
আইন ভেঙে অযোগ্যদের সিইও (মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা) পদে অনুমোদন দেয়ায় এবার স্বয়ং বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থারই (আইডিআরএ) সম্পৃক্ততা পেয়েছে বাণিজ্যিক অডিট অধিদফতর। এ বিষয়ে আইডিআরএ চেয়ারম্যানের জবাব চেয়ে চিঠি দিয়েছে অডিট অধিদফতর। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, গত ২০১৮-১৯ এবং চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে আইডিআরএ থেকে বিভিন্ন বীমা কোম্পানিতে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিয়োগ অনুমোদন করা হয়। অনুমোদন প্রাপ্ত এসব ব্যক্তির অনেকেরই বীমা আইন অনুযায়ী সিইও হওয়ার যোগ্যতা নেই। এরপরও সেসব ব্যক্তির অনুমোদন দেয় আইডিআরএ। অডিট অধিদফতর জানায়, অনিয়মের মাধ্যমে সিইও নিয়োগ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো-হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, পদ্মা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, স্বদেশ লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং প্রোটেক্টিভ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
নিরীক্ষা প্রতিবেদন বলা হয়, উল্লিখিত ব্যক্তিরা সিইও অনুমোদন পেতে যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার যথাযথ শর্তপূরণ করতে পারেনি। এরপরও তাদের সিইও অনুমোদন দিয়ে বীমা আইনের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ ও অপসারণ প্রবিধানমালা, ২০১২-এর ৩ ধারা লঙ্ঘন হয়েছে। এর ফলে বীমাখাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হয়েছে।
মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ ও অপসারণ প্রবিধানমালা, ২০১২-এর ৩ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যাল থেকে কমপক্ষে তিন বছর মেয়াদি স্নাতক ও এক বছর মেয়াদি স্নাতকোত্তর অথবা চার বছর মেয়াদি স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি থাকতে হবে। এ ছাড়া মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার অব্যবহিত নিম্নপদে কমপক্ষে তিন বছর এবং যে ধরনের বীমায় সিইও হতে ইচ্ছুক সে ধরনের বীমায় কমপক্ষে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
অথচ ওইসব কর্মকর্তার ক্ষেত্রে এ বিধি মানা হয়নি। এদের মধ্যে আজিজুল ইসলাম, একেএম শরীফুল ইসলাম এবং ইখতিয়ার উদ্দিন শাহিনের বিরুদ্ধে অনুমোদনহীন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাশের সনদ দাখিল করা এবং ডা. কিশোর বিশ্বাসের ক্ষেত্রে মেডিকেল অফিসার হিসেবে চাকরির অভিজ্ঞতাকে প্রাসঙ্গিক অভিজ্ঞতা হিসেবে দেখানো হয়।
এ বিষয়ে পদ্মা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সিইও শরীফুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে বলেন, ‘বাণিজ্যিক অডিট অধিদফতর যে প্রতিবেদন দিয়েছে তা সঠিক নয়। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স ও মাস্টার্স করেছি। তবে দারুল ইহসান থেকে এমবিএ করেছি।’ তিনি জানান, ‘২০১১-১২ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ধানমন্ডি শাখা থেকে পাস করেছি। তাই আমার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই।’ এক্ষেত্রে ২০০৬ সাল থেকে প্রদান করা ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ বাতিল করেছে ইউজিসি, এটা জানানো হলে বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি। তাছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স, মাস্টার্স হলে দারুল ইহসানের এমবিএ সার্টিফিকেট দাখিল করার কেন প্রয়োজন পড়লোÑএ বিষয়টি জানতে চাইলে যথাযথ জবাব দিতে পারেননি।
আবার হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সিইও জানান, ‘তিনি ২০০৪ সালে দারুল ইহসানে ভর্তি হন। তাই ২০০৬ সাল থেকে সার্টিফিকেট বাতিলের আওতায় তিনি পড়েননি। কারণ ইউজিসি চেয়ারম্যান জানিয়েছেন যারা ২০০৬ সালের আগে ভর্তি হয়েছেন তারা এর আওতায় পড়বে না।’ তবে ওই সময়ে তার ব্যাচ নম্বর ও সেশন জানতে চাইলে তিনি মনে করতে পারছে না বলে এই প্রতিবেদককে জানান।
এদিকে অডিট অধিদফতরের চিঠির সত্যতা ও এ বিষয়ে করণীয় পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে আইডিআরএ’র মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক (আইন) এসএম শাকিল আখতারকে বেশ কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি এবং কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।
Posted ১১:০৬ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১৩ অক্টোবর ২০২১
bankbimaarthonity.com | rina sristy