নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪ | প্রিন্ট | 125 বার পঠিত
সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মালিবাগ শাখা ম্যানেজার মো. রেজাউল করিম ও তার সহকর্মীদের মারধর ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) তৎকালীন চেয়ারম্যান জয়নুল বারীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ভুক্তভোগী রেজাউল করিম। সি, আর মামলা নং- ১৬০৪ /২০২৪। ধারা : ১৪৩/৩৪৮/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩২৭/৩৭৯/ ৩৮০/৪২৭/৫০৬/১০৯/৩৪ দন্ডবিধি।
মামলায় জয়নুল বারী ছাড়াও তার পুত্রসহ আরও ১৬ জনকে আসামী করা হয়েছে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, একটি স্বার্থান্বেষী কুচক্রী মহলের মাধ্যমে সোনালী লাইফ দখল করার চক্রান্ত হিসেবে নিজস্ব ও ভাড়াটে গুন্ডা বাহিনী দিয়ে জয়নুল বারী এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন।
মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়েছে, সোনালী লাইফের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস একজন সৎ, কর্মঠ ও ন্যায় পরায়ণ নিষ্ঠাবান যিনি অত্যন্ত সুনামের সাথে ইতিপূর্বে উক্ত কোম্পানিটি পরিচালনা করে আসছিলেন। তার পরিচালনাকালে চাকুরীজীবী/এজেন্ট এবং গ্রাহকদের মধ্যে কোন বৈষম্য বা কেউ কোন হয়রানির শিকার হয়নি। তথাপিও একটি কুচক্রি মহল তাদের অসৎ উদ্দেশ্যে বাস্তবায়ন করার লক্ষে তৎকালীন চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসকে সরিয়ে দিয়ে তাদের ফায়দা হাসিলের জন্য দেশের অন্যান্য ব্যাংকের মতো সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিটি দখল করার পায়তারা করে এবং গত ২১ এপ্রিল জয়নুল বারীর কুমন্ত্রণায় আইডিআরএ কর্তৃপক্ষ আইন বহির্ভূতভাবে এস. এম ফেরদাউসকে চুক্তিভিত্তিক প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেন। তিনি প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হওয়ার পর থেকেই ভাতা, বোনাস, সঠিক সময়ে গ্রাহকের টাকা প্রদান না করা, ঊর্ধ্বতন ৫ জন কর্মকর্তাসহ সর্বমোট ১৮ জনকে বহিষ্কার করেন এবং নিজের সুবিধার্থে তার আস্থাভাজন ৮/১০ জন আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবকে নিয়মবহির্ভূতভাবে নিয়োগ করেন। যারা ৭ থেকে ৮ দিন ডিউটি করে পুরো মাসের বেতন, চাকরির মেয়াদ ছয় মাস না হওয়ার পরও ঈদ বোনাস নিয়ে থাকেন এবং বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, কোম্পানির হিসেবে গড়মিল থাকায় সঠিক সময়ে গ্রাহকদের পাওনাদি পরিশোধ না করায় স্বনামধন্য কোম্পানির সুনাম নষ্ট এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে চরম অসন্তোষ দেখা দেয়। একাধিকবার বিষয়গুলো সমাধানের জন্য জয়নুল বারীর সাথে রেজাউল করিম আলোচনা করেন এবং প্রশাসক ফেরদৌসের অন্যায় কার্যক্রম, টাকা আত্মসাৎ সংক্রান্ত বিষয় অবগত করা হয়।
গত ২০ আগস্ট সকাল ১১টায় জয়নুল বারীর সাথে আলোচনায় বসার জন্য বাদী রেজাউল করিম টেলিফোনে সময় চাইলে ওই দিনই বিকাল সাড়ে ৪টায় আইডিআরএ কর্যালয়ে আসতে বলেন। সময়মত রেজাউল করিম সেখানে গেলে জযনুল বারী অন্যান্য আসামীদের সহায়তায় বাদীকে অফিস কক্ষে আটকে রেখে শারীরিকভাবে নির্যাতন ও হেনস্তা করেন এবং তার সাথে থাকা সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের আরো ৪ জন কর্মকর্তাকে একইভাবে মারধর ও হেনস্তা করেন। এছাড়া রেজাউল করিমের পকেটে থাকা সাতচল্লিশ হাজার পাঁচশত সত্তর টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং আইফোন প্রো ম্যাক্স-১৫ মোবাইলফোন ছিনিয়ে নিয়ে ভেঙে ফেলে, যার আনুমানিক মূল্য দুই লাখ বিশ হাজার টাকা।
সংবাদ পেয়ে সোনালী লাইফের কর্মকর্তাগণ আটক/অবরুদ্ধ সঙ্গীদের উদ্ধার করার জন্য আইডিআরএ অফিসে এসে ভবনের নিচে অবস্থান করেন। এ সময় জয়নুল বারীর নির্দেশে প্রায় ২৫/৩০ জন গুন্ডা বিভিন্ন অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বাদীর সহকর্মী ও গ্রাহক/এজেন্টদের আক্রমণ করে। এতে অনেকেই আহত হন। এক পর্যায়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন এবং বাদীসহ অবরুদ্ধদের উদ্ধার করেন।
সেনা সদ্যস্যদের সহায়তায় উদ্ধারের পর বাদী ও তার সাথে থাকা ৪ জনকে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কর্তব্যরত ডাক্তার মাথায় আঘাতের জন্য বাদীকে দ্রুত সিটি স্ক্যান করার পরামর্শ দেন। পরবর্তীতে বাদী গত ২৯ আগস্ট এভারকেয়ার হাসপাতালে সিটি স্ক্যান করান।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, বাদী সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ মামলা গ্রহণ না করে আদালতে মামলা দায়ের করার পরামর্শ দেন। পরবর্তীতে বাদী তার আত্মীয় স্বজনের সাথে আলোচনা করে আদালতে মামলা দায়ের করতে কিছুটা বিলম্ব হয়। বর্তমানে ১ ও ২নং আসামী বাদীকে জীবন নাশের হুমকি দিচ্ছে বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেনÑমুখলিছ আরিফিন অনিক, মো. সালাউদ্দিন, জনি, মহসিনুল বারী শাকির, দুখু মিয়া, মো. রিয়াদ, সুজন, মিজানুর রহমান, মো. সেলিম, মো. সাইফুল ইসলাম, সুজন, মো. মিরাজ হোসেন, মো. লিমন, মো. মারুফ, মো. সজিব, মো, আলমগীর ও বিশ্বজিত।
Posted ৯:৩৮ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪
bankbimaarthonity.com | rina sristy