| রবিবার, ২৮ জুলাই ২০১৯ | প্রিন্ট | 664 বার পঠিত
সাধারণ বীমা কোম্পানির লেনদেনে স্বচ্ছতা আনতে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সংখ্যা নির্ধারণ করে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। নির্দেশনায় একই ব্যাংকে যেসব সাধারণ বীমা কোম্পানির তিনটির বেশি ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট আছে, তাদের চলতি মাসের মধ্যেই অতিরিক্ত অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে বলা হয়েছে।
একই সঙ্গে কোম্পানি আয়-ব্যয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সংখ্যাও নির্ধারণ করেছে সংস্থাটি। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সাতটি অ্যাকাউন্ট রাখতে পারবে একটি বীমা কোম্পানি। ওই বিষয়ে বীমা কোম্পানির মালিক-প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেছে আইডিআরএ। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তাও চাওয়া হয়েছে।
তথ্যমতে, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট লেনদেন বিষয়ে নয়টি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এসব নির্দেশনা মানতে ব্যর্থ হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুশিয়ার করা হয়েছে।
নির্দেশনায় অনুযায়ী, এখন থেকে সাধারণ বীমা কোম্পানি তাদের বীমা দাবি, কমিশন ও বেতন-ভাতা নগদ টাকায় পরিশোধ করতে পারবে না। আর সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলো আদায় করা প্রিমিয়াম জমা করার জন্য তিনটির বেশি তফসিলি ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবে না। সেই সঙ্গে নির্ধারিত তিনটি ব্যাংকে একটি করে মোট তিনটি অ্যাকাউন্ট রেখে বাকিগুলো চলতি মাসের মধ্যেই বন্ধ করতে বলা হয়েছে।
প্রিমিয়াম জমা করার জন্য তিনটি হিসাবের বাইরে কোম্পানিগুলো মূলধন সংরক্ষণ, অন্যান্য আয় জমা, বীমা দাবি পরিশোধ ও ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের জন্য আরেকটি করে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবে। তবে ব্যয়ের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অর্থ প্রিমিয়াম জমার অ্যাকাউন্ট থেকে ফান্ড ট্রান্সফার বা ক্রসড চেকের মাধ্যমে ওই অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা যাবে। আর কোম্পানির শাখার নৈমিত্তিক ব্যয় মেটাতে একটি করে অ্যাকাউন্ট থাকলেও সেগুলোর মাধ্যমে লেনদেনেও কোম্পানিগুলোকে কিছু নিয়ম মানতে হবে। আইডিআরএ’র ওই নির্দেশনা বাস্তবায়িত হলে সাধারণ বীমা খাতে আর্থিক লেনদেনে স্বচ্ছতা আসবে বলে আশা করছেন দায়িত্বশীলরা।
আইডিআরএ’র নির্দেশনা অনুযায়ী, সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলো আদায় করা প্রিমিয়াম জমা করার জন্য যে কোনো তিনটি তফসিলি ব্যাংকের প্রতিটিতে একটি করে সর্বোচ্চ তিনটি হিসাব রাখতে পারবে। কোনোভাবেই প্রিমিয়াম জমা করার জন্য একটি ব্যাংকে তিনটির বেশি ব্যাংক হিসাব খোলা যাবে না। এছাড়া কোম্পানির মূলধন সংরক্ষণের জন্য একটি ব্যাংক হিসাব ও অন্যান্য আয় জমা করার জন্য অন্য একটি ব্যাংক হিসাব রাখা যাবে। আর বীমা দাবি পরিশোধের জন্য একটি ও ব্যবস্থাপনা ব্যয় মেটানোর জন্য একটি ব্যাংক হিসাব রাখার কথা বলা হয়েছে। প্রিমিয়াম জমা করার হিসাব থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ ওই হিসাব দুটিতে ফান্ড ট্রান্সফার করার সুযোগ রাখা হয়েছে।
এদিকে ‘কোনো অবস্থাতেই দাবি, কমিশন ও বেতন-ভাতার টাকা নগদে পরিশোধ করা যাবে না’ উল্লেখ করে ওই নির্দেশনায়, কোম্পানির শাখা কার্যালয়ের খরচ নির্বাহের জন্য প্রতিটি শাখায় একটি করে ব্যাংক হিসাব রাখা যাবে। সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় প্রিমিয়াম জমার হিসাবগুলো থেকে ক্রসড চেক বা ফান্ড ট্রান্সফার ছাড়া অন্য কোনো অর্থ ওই ব্যাংক হিসাবগুলোয় জমা করা যাবে না। আর শাখা কার্যালয়ের অন্য যে কোনো আয় ও ফেরত কমিশনের টাকাও ওই ব্যাংক হিসাবে জমা করার ব্যবস্থা করতে হবে। সাধারণ বীমা কোম্পানির সব ধরনের লেনদেন ক্রসড চেকের মাধ্যমে করার কথা বলা হয়েছে। তবে দাফতরিক প্রয়োজনে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত নগদ উত্তোলনের সুযোগ রাখা হয়েছে। ওই অর্থ শুধু কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ সভার সম্মানী ও এ-সংক্রান্ত অন্য খাতে ব্যয় করা যাবে।
বিনিয়োগ-সংক্রান্ত এফডিআর করার জন্য ব্যাংক হিসাব খুলতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমতি লাগবে না। তবে জনগণের অংশের শেয়ার বা আইপিও, রাইট শেয়ার ইস্যু ও বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ প্রদানের জন্য পৃথক ব্যাংক হিসাব খুলতে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন নিতে হবে এবং ওই ব্যাংক হিসাবের বিস্তারিত তথ্য কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে। এর বাইরে অন্য যে কোনো বিষয়ে কোম্পানির ব্যাংক হিসাব খোলার আগে অবশ্যই আইডিআরএ’র অনুমতি নিতে হবে।
Posted ১:৩৫ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৮ জুলাই ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed