নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ২৮ জুন ২০২০ | প্রিন্ট | 350 বার পঠিত
দেশের চামড়া খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা। এই বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়মিতকরণসহ আগামী কোরবানির ঈদে চামড়া কিনতে নতুন করে আরও ৬০০ কোটি টাকা ঋণের প্রস্তাব দিচ্ছেন ট্যানারি মালিকরা।
আগামী সোমবার (২৯ জুন) বিষয়টি নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন খাত-সংশ্লিষ্টরা। এতে উপস্থিত থাকবেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম।
বৈঠকে চামড়াখাত উন্নয়নে নীতি সহায়তার অংশ হিসেবে ট্যানারি মালিকরা ২০১৭-২০২০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩ বছরে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ নিয়মিত করার প্রস্তাব দেবেন। পাশাপাশি এক বছরের গ্রেস পিরিয়ড বাদে আগামী ১৬ বছর ধরে সুদমুক্ত কিস্তিতে এই ঋণ পরিশোধের সুযোগও চাইবেন তারা।
এছাড়া এবার কোরবানির চামড়ার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য নতুন করে যে ৬০০ কোটি টাকা নগদ ঋণ চাইবেন, তার বিপরীতে বন্ধকি সম্পদ হিসাবে প্রত্যেক ট্যানারি মালিকের কেনা চামড়াকেই বিবেচিত করার দাবি জানাবেন। যা পরবর্তী সময়ে ওই চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ থেকে রপ্তানি পর্যন্ত মনিটরিংয়ের মাধ্যমে আদায় করে নেবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক।
অবশ্য এবার চামড়া কেনায় ব্যাংকগুলো কী পরিমাণ ঋণ দেবে, তার লক্ষ্যমাত্রা এখনো ঠিক করা হয়নি। উদ্যোক্তারাও জানেন না কী পরিমাণ ঋণ তারা পাবেন। তবে তাদের আশা, সোমবারের বৈঠকের পর আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ যে নির্দেশনা দেবে, সে অনুযায়ী ব্যাংকগুলো পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
এদিকে, গত ২২ জুন অনুষ্ঠিত চামড়াখাত উন্নয়ন সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের বৈঠকে এই শিল্পের বিদ্যমান সংকট দূর করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারিখাত ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। তিনি বলেছেন, চামড়াশিল্প মহাসংকটে আছে। এখনই এই শিল্পে ঋণ ও নীতিগত সহায়তা না দিলে ১০ বছরেও এই খাত ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না। দেশের অর্থনীতির স্বার্থেই খাতটিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ)-এর প্রেসিডেন্ট শাহিন আহমেদ বলেন, চামড়া খাতে ব্যাংক ঋণের নামে শুভঙ্করের ফাঁকি চলছে। কোরবানির চামড়া কেনায় যে ঋণ দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে, প্রকৃত ঋণ অনেক কম। তারা আগের ঋণই পরিশোধ সাপেক্ষে পুনঃবিনিয়োগ করে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখাচ্ছে। আবার খেলাপি হওয়ার কারণে ৭০-৮০ ভাগ উদ্যোক্তা বরাদ্দের ঋণই পান না। অথচ খেলাপি হতে হয়েছে নীতি সহায়তার অভাবেই।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই এই খাতে আবারও সুদিন ফিরুক। চামড়া ব্যবস্থাপনায় সবাই চাহিদা যোগ্য ঋণ পাক। পাশাপাশি ব্যাংকও তার ঋণ ফেরত পাক। ট্যানারি উদ্যোক্তাদের প্রস্তাবনাগুলো বিবেচনা করা হলে ব্যাংক, উদ্যোক্তা সবার জন্যই শুভ হবে। না হলে এই শিল্প ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না বলেও তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
Posted ১২:১৩ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৮ জুন ২০২০
bankbimaarthonity.com | saed khan