| সোমবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৩ | প্রিন্ট | 418 বার পঠিত
মেয়াদউত্তীর্ণ না হওয়া ঝুঁকির বিপরীতে সলভেন্সি মার্জিন হিসেবে নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলোকে ৪০ থেকে ১০০ ভাগ পর্যন্ত রিজার্ভ রাখতে হবে। বীমা খাতের ঝুঁকি বহনের ক্ষমতা বাড়াতে ‘নন-লাইফ বীমাকারীর সলভেন্সি মার্জিন প্রবিধানমালা, ২০২৩’ এর খসড়া প্রবিধানমালায় এমন শর্ত যুক্ত করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।
প্রবিধানমালার চূড়ান্ত খসড়ায় অংশীজন ও জনসাধারণের মতামত গ্রহণের জন্য ইতিমধ্যে তা প্রকাশ করেছে অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। ৬ এপ্রিল চূড়ান্ত খসড়া উন্মুক্ত করে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে অংশীজনদের মতামত দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
‘নন-লাইফ বীমাকারীর সলভেন্সি মার্জিন প্রবিধানমালা, ২০২৩’ এর খসড়ার উপর সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও জনসাধারণের যে কোন মতামত ১৫ দিনের মধ্যে ds.insurance@fid.gov.bd ইমেইলে পাঠাতে বলা হয়েছে। সলভেন্সি মার্জিন হল অতিরিক্ত মূলধন। বীমাকারীর সম্পদের ওপর নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত দায়ের বিপরীতে একটি ন্যূনতম মূল্য।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আর্থিকভিত্তির দুর্বলতা থাকায় অনেক কোম্পানিই যথাসময়ে বীমা দাবি পরিশোধ করতে পারে না। এতে বীমা খাতের প্রতি জনসাধারণের আস্থার সংকট সৃষ্টি হওয়ায় বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা এই প্রবিধানমালা তৈরি করেছে। এতে বীমা কোম্পানির ঝুঁকিগ্রহণে আর্থিক সক্ষমতা বাড়বে। জাতীয় বীমা নীতিতেও সলভেন্সি মার্জিন প্রবিধানমালা জারি করার কথা বলা হয়েছে।
প্রবিধানমালার খসড়া অনুযায়ী, নন লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলোকে খাতভিত্তিক বিভিন্ন বীমা পলিসিতে ঝুঁকি কভারেজের ওপর নির্ধারিত শতাংশ হারে রিজার্ভ রাখতে হবে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী জানান, সারা পৃথিবীতে এই ধরনের আইন রয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশে এতদিন এটি ছিল না। টেকসই বীমা খাত নিশ্চিতের লক্ষ্যেই আইনটি প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মূলত, বীমা কোম্পানি যেন তাদের ঝুঁকির বিপরীতে সহজে বীমা দাবি পরিশোধ করতে পারে,
সেজন্যই এ আইন। কারণ বীমা কোম্পানির সলভেন্সি না থাকলে বীমার দাবি পরিশোধ করতে পারবে না।
আইডিআরএ চেয়ারম্যান মনে করেন, নন-লাইফ বীমা কোম্পানির দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়নে সলভেন্সি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এই আইন হলে সার্বক্ষণিক বীমা কোম্পানির ব্যবসা মনিটর সম্ভব হবে এবং বোঝা যাবে যে, কোম্পানিটি তার সক্ষমতার বাইরে ঝুঁকি নিচ্ছে কিনা।
প্রবিধানের খসড়ায় বলা হয়েছে, গৃহীত ঝুঁকির বিপরীতে অগ্নি বীমা পলিসিতে ৪০ শতাংশ, সামুদ্রিক বীমায় ৫০ শতাংশ, মেরিন-হল বীমায় শতভাগ, মোটর বীমায় ৪০ শতাংশ, এভিয়েশন বীমায় শতভাগ, স্বাস্থ্য বীমায় শতভাগ এবং অন্যান্য বীমা পলিসির ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ রিজার্ভ রাখতে হবে।
কোনো সাধারণ বীমা কোম্পানি যদি অগ্নি বীমা পলিসির মাধ্যমে কোনো গ্রাহকের এক কোটি টাকার ঝুঁকি গ্রহণ করে, তাহলে সলভেন্সি মার্জিন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে ওই ঝুঁকির ৪০ শতাংশ রিজার্ভ রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে কোম্পানিটিকে তার প্রফিট বা লাভ থেকে এই রিজার্ভ করতে হবে। প্রফিট থেকে সম্পূর্র্ণটা রাখা সম্ভব না হলে ফ্রেশ ক্যাপিটাল ইনজেক্ট করে রিজার্ভ বাড়াতে হবে।
এছাড়া, বীমা কোম্পানির অপরিশোধিত দাবির বিপরীতে শতভাগ রিজার্ভ রাখতে হবে। পাশাপাশি খারাপ ও সন্দেহজনক ঋণ, প্রস্তাবিত লভ্যাংশ, কর, অপ্রত্যাশিত ক্ষতি এবং সুদের রিজার্ভসহ ব্যাংক ঋণের বিপরীতে রিজার্ভ সংরক্ষণ করতে হবে বলে প্রস্তাবিত প্রবিধানমালায় বলা হয়েছে।
এরসঙ্গে যেসব সম্পদের মূল্য হিসাব করা যাবে না, অর্থাৎ শূন্য মূল্য ধরতে হবে, তার একটি তালিকাও দেওয়া হয়েছে খসড়া প্রবিধানমালায়। খসড়া প্রবিধানমালায়, কোম্পানিগুলোকে হিসাব দেওয়ার জন্য তিনটি ছক নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। সেই নির্ধারিত ছকেই কোম্পানিগুলো বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে প্রতিবেদন দাখিল করবে।
Posted ৭:৩৪ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৩
bankbimaarthonity.com | rina sristy