| বৃহস্পতিবার, ১৫ জুলাই ২০২১ | প্রিন্ট | 339 বার পঠিত
প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) থাকাবস্থায় জড়িয়েছেন একের পর অনিয়ম ও দুর্নীতিতে। এ বিষয়ে আইডিআরএ’র কাছে অভিযোগ জানানো হলে তদন্ত চালায় সার্ভিল্যান্স টিম। এতে সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় নিয়ন্ত্রক সংস্থার শাস্তির মুখে পড়েন তৎকালীন সিইও মোহাম্মদী খানম। এমনকি কোম্পানি থেকে ইস্তফা দিতেও বাধ্য হন তিনি। পরবর্তী গন্তব্য নির্ধারণ করেন দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স। কিন্তু দুর্নীতিগ্রস্ত হওয়ায় এবার সেখানেও চাকরি করতে আইডিআরএ’র বাধার মুখে পড়েছেন প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের সাবেক এই সিইও। এমনটাই জানা গেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা সূত্রে।
সূত্র জানায়, গত ১২ এপ্রিল দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের ১৩৪তম পর্ষদ সভায় মোহাম্মদী খানমকে ২৩ মে ২০২১ থেকে ২২ মে ২০২৪ পর্যন্ত সিইও হিসেবে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ জন্য তিন বছরের অনুমোদন চেয়ে আইডিআরএতে গত ২০ মে চিঠি দেয় কোম্পানিটি। কিন্তু সর্বশেষ দায়িত্ব পালনকালে প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের দুর্নীতিতে জড়িত থাকায় আইডিআরএ’র শাস্তি পেতে হয়। এ বিষয়টির প্রতি লক্ষ রেখে আইনানুযায়ী কোনো প্রতিবন্ধকতা আছে কি-না, তা খতিয়ে দেখতে গত ৯ জুন নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে পরামর্শ দেন আইডিআরএ’র সদস্য (প্রশাসন) মইনুল ইসলাম।
এর প্রেক্ষিতে গত ১৩ জানুয়ারি আইন অণুবিভাগের নির্বাহী পরিচালক এসএম শাকিল আখতার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জানানো হয়, মোহাম্মাদী খানম ইতিমধ্যে পুনর্নির্ধারিত জরিমানা এক লাখ টাকা পরিশোধ করেছেন। এতে প্রমাণিত হয় যে, প্রাইম ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে উত্থাপিত বিভিন্ন অনিয়মের তথ্য প্রমাণিত হওয়ায় তৎকালীন মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এক্ষেত্রে দায় এড়াতে পারেন না। এ প্রেক্ষিতে আরো বলা হয়, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি থেকে পাওয়া চিঠিতে তাকে সিইও করার প্রস্তাবটি বিবেচনার সুযোগ নেই।
উল্লেখ্য, বীমা আইন লঙ্ঘন করে বিদেশে পুনঃবীমা করা, মুদ্রাপাচার, সিইও কর্তৃক বেতন-ভাতার অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণ এবং কোম্পানির সাড়ে ২১ কোটি টাকা লোকসান গোপনের অভিযোগ করেন দৈনিক ব্যাংক বীমা অর্থনীতি পত্রিকার সম্পাদক ও কোম্পানির বিনিয়োগকারী মোহাম্মদ মুনীরুজ্জামান। এ অভিযোগ বিবেচনা করে গত ২৫ জুলাই ২০১৯ তারিখে প্রাইম ইন্স্যুরেন্স থেকে পদত্যাগ করেন মোহাম্মদী খানম। পরবর্তীতে আইডিআরএ’র তদন্তে এসব অভিযোগের সত্যতা মেলে। এমন প্রেক্ষাপটে গত ১৭ নভেম্বর ২০২০ তারিখে মোহাম্মদী খানমকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা ধার্য করে বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা। কিন্তু জরিমানা বিষয়ে আইডিআরএ’র কাছে রিভিউ আবেদন করলে গত ৩১ জানুয়ারি ১ লাখ টাকা পুনর্নির্ধারণ করা হয়।
পরবর্তীতে এ জরিমানা ও শাস্তি মেনে নিয়ে ২৩ ফেব্রুয়ারি ব্যাংক এশিয়ার গুলশান শাখার মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করেন সাবেক এই সিইও। এরই মাঝে পুঁজিবাজারে সদ্য তালিকাভুক্ত হওয়া দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সে যোগদানের চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে। তবে পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারীদের মতে, দুর্নীতির আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িত এমন একজন সিইওকে দেশ জেনারেলের দায়িত্ব দেয়া হলে এখানেও পূর্বের অনিয়ম ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। এতে হুমকির মুখে পড়বে বীমাগ্রাহক ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ। তাই বীমাখাতের কোনো কোম্পানিতে তাকে কাজ করার সুযোগ না দিতে আইডিআরএ’র প্রতি অনুরোধ জানান তারা।
Posted ১১:৪৪ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৫ জুলাই ২০২১
bankbimaarthonity.com | rina sristy