শুক্রবার ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গ্রাহকের পক্ষে আইডিআরএ অভিযোগ ডাচ-বাংলা ব্যাংকের

নান্নু স্পিনিংয়ের প্রায় ৭০ কোটি টাকা পরিশোধ করছে না সিটি ইন্স্যুরেন্স

জাহিদুল ইসলাম   |   সোমবার, ১১ অক্টোবর ২০২১   |   প্রিন্ট   |   439 বার পঠিত

নান্নু স্পিনিংয়ের প্রায় ৭০ কোটি টাকা পরিশোধ করছে না সিটি ইন্স্যুরেন্স

দীর্ঘদিন যাবৎ গ্রাহক দাবি পরিশোধ না করার অভিযোগ উঠেছে পুঁজিবাজারভুক্ত বীমাখাতের প্রতিষ্ঠান সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে। প্রতিষ্ঠানটিকে বারবার চিঠি দিয়ে দাবি পরিশোধের অনুরোধ জানালেও তাতে কর্ণপাত করেনি। ফলে দাবি আদায়ে বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ’র দ্বারস্থ হয়েছে গ্রাহক নান্নু স্পিনিং মিল্স। অভিযোগকারীর পক্ষে ডাচ-বাংলা ব্যাংক ও বীমা নিয়ন্ত্রক সূত্রের বরাতে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একটি অগ্নি-দুর্ঘটনা ঘটে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের গ্রাহক ও সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির পলিসিহোল্ডার নান্নু স্পিনিং মিল্সে। কিন্তু প্রায় আড়াই বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত পলিসি গ্রাহকের দাবি পরিশোধ করেনি বীমা কোম্পানি সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স। দাবি পরিশোধে গ্রাহককে ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ডাচ-বাংলা ব্যাংক চারবার চিঠি পাঠায় বীমা কোম্পানিকে। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো ভ্রুক্ষেপ করছে না সিটি জেনারেল।

জানা গেছে, ইন্ডাস্ট্রিয়াল অল রিস্ক পলিসির আওতায় মেসার্স নান্নু স্পিনিং মিল্স ২০১৮ সালে ১১ ফেব্রুয়ারি ২টি, ৭ আগস্ট ১টি এবং ৩ অক্টোবর ১টিসহ মোট চারটি পলিসি চুক্তি করে সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের সাথে। যার সমন্বিত বীমা অঙ্কের টাকা ৭৩ কোটি ৭৭ লাখ ২৭ হাজার ৩১৬ টাকা। প্রতিষ্ঠানটিতে অগ্নি-দুর্ঘটনার পর গত বছরের ১৫ জুলাই, ৭ সেপ্টেম্বর এবং ১৮ অক্টোবর তারিখে চিঠি দিয়ে বীমা দাবি পরিশোধের অনুরোধ জানায় ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকের ব্যাংক ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান ডাচ-বাংলা। কিন্তু তাতে কর্ণপাত না করায় সর্বশেষ গত ৫ মে চতুর্থবারের মতো চিঠি দেয় ব্যাংকটি। পাশাপাশি চিঠির একটি অনুলিপি পাঠায় বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কাছে।
এ বিষয়ে জানতে সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের যোগাযোগ করা হলে কোম্পানির মুখ্য অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) বলেন, ‘একমাত্র আমরাই নান্নু স্পিনিংয়ের ক্লেইম ধারাবাহিকভাবে দিয়ে যাচ্ছি। অন্য আরো দুটি বীমা কোম্পানি আমাদের গ্রাহকের সাথে চুক্তিবদ্ধ। জেনেছি তারা এখনো ক্লেইম দেয়নি। অথচ আমরা নিয়মিত দিলেও আমাদের নামেই অভিযোগ। কেউ হয়তো ইচ্ছে করেই আমাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলেছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘সার্ভে রিপোর্ট অনুসারে আমাদের কাছে কোম্পানির দাবির পরিমাণ প্রায় ২১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আমরা ইতোমধ্যে ৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা পরিশোধ করেছি। অবশিষ্ট টাকা সাধারণ বীমা থেকে পাচ্ছি না বলে পরিশোধ করতে পারছি না।’ সাধারণ বীমা করপোরেশন প্রায় আড়াই বছর ধরে টাকা পরিশোধ না করায় বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থায় কোনো অভিযোগ দিয়েছেন কিনাÑজানতে চাইলে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

অন্যদিকে সাধারণ বীমা করপোরেশনের পুনঃবীমা বিভাগের ডিজিএম মো. জাকির হোসেন জানান, কোনো দাবি উত্থাপিত হলে তা সংশ্লিষ্ট বীমা কোম্পানিকেই এর দায় নিতে হবে এবং পরিশোধ করতে হবে, এটাই প্রচলিত নিয়ম। কেননা গ্রাহকের সাথে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি রিস্ক কাভারের চুক্তি করেছে, সাধারণ বীমার সাথে নয়। ক্লেইম দেয়ার পর সাধারণ বীমা থেকে তারা তথ্য-উপাত্ত জমা দিয়ে প্রাপ্ত দাবির অংশ বুঝে নেবেন। কিন্তু এর দায়ভার কিছুতেই সাধারণ বীমা নেবে না।

বীমা সংশ্লিষ্টরা জানান, সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স মূলত তাদের দায় এড়িয়ে যেতেই এমনটা করছে। যদি সাধারণ বীমা নিয়ম ভঙ্গ করে তবে কেন তাদের বিরুদ্ধে নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কমিটির কাছে অভিযোগ দেয়নি এতোদিন? তাছাড়া ক্লেইম হলে সেটা প্রথমেই বীমা কোম্পানিকে পরিশোধ করতে হয়। তাছাড়া আইন অনুসারে তিন মাসের মধ্যে দাবি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় শাস্তি ও জরিমানার মুখে পড়তে পারে কোম্পানিটি। তাহলে কীভাবে এর দায় সাধারণ বীমার? বরং এমনটা হলে কোম্পানির পলিসিহোল্ডার ও শেয়ারহোল্ডারদের ঝুঁকির মুখে পড়তে হবে।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১০:৫৪ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১১ অক্টোবর ২০২১

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।