এস জেড ইসলাম | সোমবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ | প্রিন্ট | 567 বার পঠিত
জীবন বীমা কোম্পানির বিনিয়োগ সম্পর্কিত নতুন প্রবিধি অনুযায়ী, কোম্পানিকে তার দায়সমূহের সমপরিমাণ অর্থ বাধ্যতামূলকভাবে দেশে নির্ধারিত খাতে বিনিয়াগ করতে হয়। তাছাড়া মোট সম্পদের কমপক্ষে ৩০ শতাংশ সরকারি সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ থাকতে হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন যাবৎ এই বিধিমালা লঙ্ঘিত হচ্ছিল রূপালী লাইফে।
প্রবিধি অনুযায়ী, বিনিয়োগ না করায় রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। তবে প্রতিষ্ঠানটি বলছে নতুন প্রবিধি হওয়ার এক মাসের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব না হওয়ায় পুরোনো প্রবিধি অনুযায়ী তাদের বিনিয়োগ রয়েছে।
রূপালী লাইফের সিএফও মো. সিব্বির হোসাইন অবশ্য বীমা আইন ভঙ্গের বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, বীমা আইন অনুযায়ী বিনিয়োগ বিষয়ে প্রবিধি হয়েছে ২০১৯ সালের শেষদিকে। তাই তাৎক্ষণিকভাবে নতুন সংজ্ঞা অনুযায়ী বিনিয়োগ করা সম্ভব হয়নি। তবে আমরা প্রবিধি হওয়ার আগে ১৯৫৮ সালের বীমা প্রবিধি অনুযায়ী বিনিয়োগ করেছি। তাই এক্ষেত্রে আইন ভঙ্গের বিষয়টি সঠিক নয়।
তবে নতুন প্রবিধি অনুযায়ী বিনিয়োগ না থাকার কারণ ব্যাখ্যা করে গত ১৭ আগস্ট বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছে রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. গোলাম কিবরিয়া।
লাইফ বীমাকারীর সম্পদ বিনিয়োগ প্রবিধানমালা-২০১৯ সালের ১৯ নভেম্বর গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। এই বিধিভঙ্গের জন্য চলতি বছরের ২৪ জুন রূপালী লাইফ কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যাখ্যা তলব করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি রূপালী লাইফ থেকে এ চিঠি পাঠানো হয়।
চিঠিতে দাবি করা হয় গত ৭-৮ বছর যাবৎ বীমাগ্রাহকদের শতভাগ দাবি পরিশোধ করে আসছে রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স। ফলে বৃদ্ধি পায়নি জীবন বীমা তহবিল। তাছাড়া তহবিলের একটি বড় অংশ কোম্পানির প্রধান কার্যালয়ের ব্যয়, ঢাকাসহ খুলনা, নওগাঁ ও সন্দ্বীপে জমি ক্রয়, কাকরাইল-চট্টগ্রাম ও কুমিল্লায় ভবন নির্মাণ ও ক্রয়, পলিসি লোন, বকেয়া প্রিমিয়াম, অগ্রিম প্রাপ্য আয়, স্টক ও হাতে নগদসহ বিভিন্নভাবে রয়েছে। এ কারণে নির্ধারিত হারে বিনিয়োগ করা সম্ভব হয়নি।
প্রতিষ্ঠানটির ২০১৯ সালের সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী মোট সম্পদ ৫৭৬ কোটি ৫ লাখ ৪৩ হাজার ৮৮৬ টাকা এবং মোট দায় ৪৬ কোটি ৭৫ লাখ ১৯ হাজার ৬১২ টাকার বিপরীতে মোট বিনিয়োগ ছিল ১৪৮ কোটি ৫৫ লাখ ১৩ হাজার ৯০৬ টাকা। এর মধ্যে সরকারি সিকিউরিটিজে ছিল ১২৭ কোটি ১৯ লাখ ১১ হাজার ৭৭৬ টাকা। অথচ আইন অনুযায়ী মোট সম্পদের ৩০ শতাংশ অনুযায়ী ১৭২ কোটি ৮১ লাখ ৬৩ হাজার ১৬৫ টাকা এবং মোট দায়ের সমপরিমাণসহ মোট ২১৯ কোটি ৫৬ লাখ ৮২ হাজার ৭৭৭ টাকা দেশে বিনিয়োগ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এর মধ্যে শুধু সরকারি সিকিউরিটিজেই প্রায় ১৭৩ কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। কিন্তু তা পরিপালন করেনি প্রতিষ্ঠানটি।
এ বিষয়ে কোম্পানির সিইও মো. গোলাম কিবরিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মুখ্য অর্থ কর্মকর্তার (সিএফও) সাথে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।
Posted ১২:১৪ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
bankbimaarthonity.com | rina sristy