রবিবার ৬ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২১ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রশাসক-কর্মকর্তাদের দ্বন্দ্বে সোনালী লাইফের শেয়ারে ধস

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   71 বার পঠিত

প্রশাসক-কর্মকর্তাদের দ্বন্দ্বে সোনালী লাইফের শেয়ারে ধস

শেয়ারবাজারের তালিকাভুক্ত বীমা খাতের প্রতিষ্ঠান সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের প্রশাসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরেই দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এর প্রভাবে প্রতিষ্ঠানটির প্রিমিয়াম আয়সহ অন্যান্য দিকে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। একইসঙ্গে ধস নেমেছে শেয়ারদরেও। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) কোম্পানিটির লেনদেনের চিত্র বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানা গেছে।

ডিএসইর ওয়েবসাইটে থাকা তথ্য অনুসারে, ধারাবাহিকভাবে কোম্পানিটির শেয়ারদর কমছে। গত ৮ থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত শেয়ারটি দর হারিয়েছে ১৭ টাকা ৮০ পয়সা। এ সময়ের মধ্যে প্রতিদিনই দর কমেছে। ৮ জুলাই ক্লোজিং ছিলো ৮২ টাকা। আর ৩০ জুলাই ক্লোজিং হয়েছে ৬৬ টাকা ২০ পয়সায়।

জানা গেছে, চলতি বছরের শুরু থেকেই সোনালী লাইফে অস্থিরতা দেখা দেয়। কোম্পানির সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার প্রকাশ্য দ্বন্দ্বে এই অস্থিরতা শুরু হয়। এর সূত্র ধরে কোম্পানির আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। তার পরিপ্রেক্ষিতে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান হুদাভাসি এন্ড কোম্পানিকে দিয়ে একটি অডিট পরিচালনা করে। অডিটে সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ১৮৮ কোটি টাকা আত্মসাতের তথ্য উঠে আসে। এরপর কোম্পানির বোর্ড ছয় মাসের জন্য বরখাস্ত করে আইডিআরএ। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটিতে অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম ফেরদৌসকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রশাসক যোগদানের পর থেকেই নানা কারণে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে তার দূরত্ব তৈরি হয়।

কোম্পানি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আর্থিক অনিয়ম, শৃঙ্খলা ভঙ্গ, সনদ জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে প্রশাসক কোম্পানির শীর্ষ পাঁচ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করলে এই দ্বন্দ্ব আরও বাজে আকার ধারণ করে। এর প্রতিবাদে গত ৯ জুলাই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। একই সঙ্গে তারা প্রশাসকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা কমিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করে। এই কর্মসূচি চলে টানা ৫ দিন। এরমধ্যেই আরও ১৩ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়।

কোম্পানির শেয়ার লেনদেনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, যেদিন থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও প্রশাসক দ্বন্দ্ব বিক্ষোভে রূপ নিয়েছে ওইদিন থেকেই সোনালীর শেয়ারের দর কমতে শুরু করেছে। এছাড়া কোম্পানিটির লভ্যাংশ সংক্রান্ত বোর্ড সভা স্থগিত হয়ে যাওয়া, সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসসহ প্রতিষ্ঠানটির ৮ পরিচালক-কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলার কারণেও বিনিয়োগকারীরা আস্থা সঙ্কটে পড়েছেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তারা বলছেন, কোম্পানির আর্থিক স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠায় বিনিয়োগকারীরা অবজারভেশন মুডে রয়েছেন। এই অবস্থার উত্তরণ না হলে শেয়ারদর আরও কমতে পারে।

ধারাবাহিকভাবে শেয়ারদর কমার বিষয়ে জানতে সোনালী লাইফের প্রশাসক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম ফেরদৌসকে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
কোম্পানি সচিব মো. আব্দুর রবকেও একাধিকবার কল দেওয়া হয়। তবে তার মুঠোফোনে সংযোগ পাওয়া যায়নি।

২০১৩ সালে বীমা ব্যবসা শুরু করা সোনালী লাইফ শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ২০২১ সালে। তালিকাভুক্তির বছরে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়। ২০২২ সালে দেয় ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ। আইনি বাধ্যবাধকতায় ২০২৩ সালের লভ্যাংশ সংক্রান্ত বোর্ড সভা স্থগিত রয়েছে।

বর্তমানে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে লেনদেন করা কোম্পানিটির পেইড-আপ ক্যাপিটাল ৪৭ কোটি টাকা। মোট শেয়ারের ৫৪ শতাংশ রয়েছে উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ। আর বাকি ৪০ দশমিক ২৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে।

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৯:২০ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই ২০২৪

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।