| বুধবার, ১৬ নভেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট | 188 বার পঠিত
স্বচ্ছ ও সুশৃঙ্খলভাবে বীমা ব্যবসা পরিচালনা এবং গ্রাহকদের স্বার্থ সংরক্ষণে ধারাবাহিক পদক্ষেপের অংশ হিসেবে আরো বেশ কিছু নির্দেশনা জারি করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।
বিশ্লেষকরা বলছেন, কর্তৃপক্ষের এসব উদ্যোগ বীমাখাতে যেমন শৃঙ্খলা ফেরাবে, তেমনি দূর করবে গ্রাহক হয়রানি।
সম্প্রতি বীমা কোম্পানিগুলোতে জনবল নিয়োগ করে বাধ্যতামূলকভাবে অ্যাকচুয়ারিয়াল বিভাগ চালুর নির্দেশনা দিয়ে কর্তৃপক্ষের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘অ্যাকচুয়ারি তথা অ্যাকচুয়ারিয়াল বিষয়ে প্রয়োজনীয় জ্ঞানের অধিকারী জনবল জীবন বীমাকারীর পরিকল্পের মূল্য নির্ধারণ, দায় মূল্যায়ন, বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও আর্থিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রয়োগিক অ্যাকচুয়ারিয়াল বিজ্ঞানের কলাকৌশল যথাযথ প্রয়োগ ব্যতীত কোন জীবন বীমাকারী স্বচ্ছ ও সুশৃঙ্খলভাবে বীমা ব্যবসা পরিচালনা ও বীমা গ্রাহকদের স্বার্থ সংরক্ষণ করতে পারেনা।’
অ্যাকচুয়ারিদের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কোম্পানিগুলোতে অ্যাকচুয়ারিয়াল বিভাগ চালু ও জনবল নিয়োগ বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, প্রতিটি জীবন বীমা কোম্পানিতে বাধ্যতামূলকভাবে একটি স্বতন্ত্র অ্যাকচুয়ারিয়াল বিভাগ চালু করতে হবে। কোম্পানিতে জীবন বীমাকারীর মূল্য নির্ধারণ, দায় মূল্যায়ন, বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও আর্থিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে অ্যাকচুয়ারি।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, একটি বীমা কোম্পানি সঠিক ও নিয়মের মাধ্যমে পরিচালিত করতে প্রয়োজন দক্ষ অ্যাকচুয়ারি। ফলে প্রতিটি কোম্পানিতে অ্যাকচুয়ারিয়াল গণিত, পরিসংখ্যান ও সায়েন্স সম্পর্কিত লোকবল নিয়োগ করতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, অ্যাকচুয়ারিয়াল বিভাগ কমপক্ষে দুইজন নিয়মিত কর্মকর্তা নিয়ে গঠিত হবে। ৫০০ কোটি টাকার বেশি লাইফ ফান্ড আছে এমন কোম্পানিতে কমপক্ষে ৩ জন কর্মকর্তার সমন্বয়ে অ্যাকচুয়ারিয়াল বিভাগ গঠিত হবে। এ সকল কর্মকর্তাদের পর্যাপ্ত বেতন ভাতা প্রদান করতে হবে এবং তাদের ফেলোশিপ দেয়ার জন্য প্রণোদনা দিতে হবে।
অবিলম্বে এ নির্দেশনা কার্যকর করা হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়। অপরদিকে কর্তৃপক্ষের জারি করা আরেক প্রজ্ঞাপনে বাংলায় বীমা পলিসি ইস্যুর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, বীমা পলিসিতে উল্লেখিত শর্তসমূহ এবং পলিসি ইস্যুর সময় প্রয়োজনীয় দলিলাদির তালিকা ইংরেজির পাশাপাশি বাংলায় প্রণয়ন ও সরবরাহ করতে হবে।
সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি চিঠি বীমা কোম্পানিগুলোকে পাঠিয়েছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ।
চিঠিতে বলা হয়েছে, বীমা দাবি নিষ্পত্তি সংক্রান্ত শুনানীতে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, বীমা পলিসিতে বর্ণিত শর্তসমূহ পরিপালন এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দলিলাদি বীমাগ্রহীতা কর্তৃক সরবরাহ করতে না পারায় অনেক সময় বীমা দাবি নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। এর প্রেক্ষিতে একদিকে যেমন বীমাগ্রহীতা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অপরদিকে সংক্ষুব্ধ বীমাগ্রাহক বীমার প্রতি একটি নেতিবাচক বার্তা প্রচার করছে।
এতে অন্যরাও বীমা সেবা গ্রহণে আস্থা হারিয়ে ফেলছে। ফলে বীমাখাতে কাক্সিক্ষত প্রেনিট্রেশন বৃদ্ধি পাচ্ছে না। বীমা প্রতিষ্ঠানসমূহ কর্তৃক ইস্যুকৃত পলিসি সম্পূর্ণ ইংরেজিতে হওয়ায় অধিকাংশ বীমাগ্রাহক তাদের প্রাপ্যতা এবং প্রযোজ্য শর্তাবলি বুঝতে সক্ষম হন না। বীমা পলিসি বাংলা ভাষায় সহজ-সরল এবং বোধগম্য হওয়া উচিত। এ সকল দিক বিবেচনা করে এবং বীমা খাতের প্রেনিট্রেশন বৃদ্ধির লক্ষ্যে বীমা পলিসিসমূহ এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট দলিলাদি ইংরেজির পাশাপাশি সহজবোধ্য বাংলা ভাষায় প্রণয়ন করা প্রয়োজন।
চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, পলিসি ইস্যু করার সময় দাবি নিষ্পন্নের জন্য প্রয়োজনীয় দলিলাদির তালিকা বীমাগ্রাহককে প্রদান করতে হবে। বীমা পলিসিসমূহ এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট দলিলাদি ইংরেজি ভাষার পাশাপাশি বাংলা ভাষায় প্রণয়ন করে চালু করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
Posted ১:৩৭ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৬ নভেম্বর ২০২২
bankbimaarthonity.com | rina sristy