জাহিদুল ইসলাম | বৃহস্পতিবার, ০৬ জানুয়ারি ২০২২ | প্রিন্ট | 265 বার পঠিত
পলিসি করা কালে প্রদত্ত তথ্যানুযায়ি নির্ধারিত স্থানে ছিলো না গোডাউন। এছাড়া অগ্নি নির্বাপন ও সুরক্ষা সরঞ্জামে ছিলো অবহেলা। ফলে আইনানুযায়ি বীমা দাবি করতে পারে না। এরপরও দাবি উত্থাপন করে নিয়ন্ত্রক সংস্থায় অভিযোগ জানিয়েছে সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সের সাথে গ্রাহক রাইদা ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল। মূলত ব্যাংক ঋণের বোঝা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির উপর চাপিয়ে দিতেই প্রতিষ্ঠানটির মালিক মোজতোবা হোসেন রিপন এমন পদক্ষেপ নিয়েছেন বলছে বীমা কোম্পানি। আইডিআরএ’তে দাখিলকৃত অভিযোগের সূত্রে সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে কথা বলে এমনই তথ্য পাওয়া গেছে ব্যাংক বীমা অর্থনীতির অনুসন্ধানে।
জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর রংপুর চেম্বার অব কমার্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট মোজতোবা হোসেন রিপনের প্রতিষ্ঠান রাইদা ট্রেড ইন্টারন্যাশনালে এক অগ্নি দূর্ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের প্রতিবেদন অনুযায়ি দূর্ঘটনায় ৪ কোটি ৬০ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে প্রতিষ্ঠানটি। পাশাপাশি প্রতিবেদনে আরো বলা হয় বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত। তাছাড়া গোডাউনটির অগ্নি নিরাপত্তায় দূর্বলতা ছিলো এবং প্রতিষ্ঠানটিতে ফায়ার সেফটি প্ল্যানের কোন অনুমোদন ছিলো না। ফলে গোডাউনের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অবহেলার বিষয়টি প্রকট হয়ে ওঠে।
কিন্তু প্রতিষ্ঠানটিকে ঘিরে সবচেয়ে বড় যে অভিযোগটি ওঠে তা হলো- অগ্নি দূর্ঘটনা পলিসিতে উল্লেখ করা জায়গায় এর গোডাউন না থাকা। দেখা গেছে, গত ১২ মার্চ ২০১৭ সালের সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সের অগ্নি বীমা পলিসিতে রাইদা ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের গোডাউন ঠিকানা দেয়া হয়েছে রংপুর তালতলা রোড। কিন্তু অগ্নিকান্ডে ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়া গোডাউনটি ছিল রংপুর সদরের সিও বাজার, উত্তম হাইস্কুল মোড়। এক্ষেত্রে বীমাকারীর অজ্ঞাতে স্থান পরিবর্তন করায় আইন অনুসারে দাবী উত্থাপনের যোগ্যতা হারায় গ্রাহক। এ ধরণের অনিয়ম সত্ত্বেও গ্রাহক প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে দাবী উত্থাপন ও নিয়ন্ত্রক সংস্থায় অভিযোগ জানানোয় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
বিষয়টি নিয়ে সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জাহিদ আনোয়ার খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বৈঠকে আছেন জানিয়ে দাবী বিভাগের প্রধান জহির-উল-আলমের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। পরবর্তীতে জহির-উল-আলম জানান- ‘বীমাপত্রে গোডাউনের যে ঠিকানা দেয়া, বাস্তবে সেটা অন্য জায়গায়। বীমা করা কালে গ্রাহক বীমাপত্রে মিথ্যা তথ্য দেয়ায় আইনত তিনি ক্ষতি দাবী করতে পারেন না।’
বিষয়টি নিয়ে গ্রাহক মোজতোবা হোসেন রিপনের সাথে কথা বললে জানান, ‘আমি অনেক আগে থেকেই আমদানী-রফতানির ব্যবসা করি। পরে ২০১৭ সালে অলিম্পিক ও কোকাকোলার পরিবেশক হই। মূলত আমার দ্বিতীয় ব্যবসার গুদামেই আগুন লেগেছে। ঠিকানা অনুযায়ি গুদাম না থাকার বিষয়ে বলেন- আমার গুদাম যেখানে থাকার কথা ছিলো সেখানেই আছে। তারা যদি ভূল ঠিকানা লেখে তাহলে আমি কি করতে পারি?’ তবে একজন সচেতন গ্রাহক হিসেবে পলিসির কাগজপত্র দেখে নেয়া দরকার ছিলো জানিয়ে এ বিষয়ে নিজের অবহেলা স্বীকার করেন তিনি।
Posted ১১:৫২ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৬ জানুয়ারি ২০২২
bankbimaarthonity.com | rina sristy