বিবিএনিউজ.নেট | বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০১৯ | প্রিন্ট | 478 বার পঠিত
সূচকের টানা অবনতির প্রভাব পড়তে শুরু করেছে এবার পুঁজিবাজারের লেনদেনেও। দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মঙ্গলবার লেনদেন নেমে এসেছে ৩শ’ কোটি টাকার নিচে। মঙ্গলবার পুঁজিবাজারটি ২৮৮ কোটি টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি করতে সক্ষম হয় যা বিগত পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এ বছরের ১৫ মের পর আর এত নিচে নামেনি ডিএসইর লেনদেন। মঙ্গলবার লেনদেনের শুরু থেকে সৃষ্ট বিক্রয়চাপ শেষ পর্যন্ত বলবৎ থাকলে হাত গুটিয়ে নেন বিনিয়োগকারীরা। এতে লেনদেন হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি দর হারায় ৮৩ শতাংশ কোম্পানি।
মঙ্গলবার ছিল চলতি সপ্তাহের তৃতীয় কর্মদিস। রোববার সূচকের নামমাত্র উন্নতি ঘটলেও সোমবার সূচকের ২০ পয়েন্টের বেশি হারায় ডিএসই। মঙ্গলবার লেনদেনের শুরু থেকে সৃষ্ট বিক্রয়চাপ বেলা বাড়ার সাথে সাথে আরো ব্যাপক আকার ধারণ করে। মাত্র এক ঘণ্টার ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচকটি হারায় প্রায় ৬৬ পয়েন্ট। তবে শেষদিকে হারানো সূচকের কিছুটা ফিরে পায় বাজারটি। তা সত্ত্বেও দিনশেষে ৫২ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট হারায় ডিএসই। একই সময় ডিএসই-৩০ ও ডিএসই শরিয়াহ হারায় যথাক্রমে ১৪ দশমিক ৬৬ ও ৮ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট।
দেশের দ্বিতীয় পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক ও সিএসসিএক্স সূচকের অবনতি ঘটে যথাক্রমে ১৬২ দশমিক ১৩ ও ৯৭ দশমিক ০৫ পয়েন্ট। এখানে সিএসই-৫০ ও সিএসই শরিয়াহ হারায় যথাক্রমে ৮ দশমিক ২১ ও ৭ দশমিক ২৭ পয়েন্ট। ঢাকার মতো কমেছে বাজারটির লেনদেনও। ১০ কোটি টাকায় নেমে আসে লেনদেন। সিএসইতেও এটি সাম্প্রতিক সময়ের সর্বনিম্ন লেনদেন।
লেনদেনের এ অবনতিকে খুবই নেতিবাচক হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। একদিন আগেও ৩৫০ কোটি টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি করা বাজারটির লেনদেন এত নিচে নামা বিনিয়োগকারীদের নিষ্ক্রিয়তা বলেই মনে করছেন তারা। তাদের মতে, এর অর্থ বর্তমান মূল্যস্তরেও বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে উৎসাহী নন। ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগেও শুরু হচ্ছে খরা। এভাবে চলতে থাকলে দীর্ঘমেয়াদি মন্দার দিকে এগিয়ে যেতে পারে বাজার।
এ দিকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে শেয়ার ছেড়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হবে জীবন বীমা কোম্পানি ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। এ বিষয়ে কোম্পানিটিকে পরামর্শ সেবা দেবে দেশের অন্যতম শীর্ষ মার্চেন্ট ব্যাংক বিএমএসএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। এ লক্ষ্যে সোমবার রাজধানীর নয়াপল্টনে অবস্থিত ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের প্রধান কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠান দু’টি চুক্তি সই করেছে। বিএমএসএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: রিয়াদ মতিন এবং ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন।
এ সময় বিএসএমএল ইনভেস্টমেন্টের ভাইস- চেয়ারম্যান আব্দুল আওয়াল, ইউনাইটেড ফিন্যান্সিয়াল ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেডের (ইউএফটিসিএল) পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান জাবেদ চৌধুরী, ইউএফটিসিএলের উপদেষ্টা বিমান সাহা, ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মহাব্যবস্থাপক মো: শহিদুল ইসলাম ও কোম্পানি সচিব চৌধুরী মো: ফরিদ উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড নির্ধারিত মূল্য পদ্ধতির আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ৩০ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে।
আগের দিন প্রায় শতভাগ মূল্যবৃদ্ধি পাওয়া ব্যাংকিং খাতে গতকাল ব্যাপক দরপতন ঘটে। এতে সোমবার ব্যাংকগুলো পতন ঠেকালেও গতকাল তা ঘটেনি। দিনশেষে উভয় বাজারেই সূচকের বড় ধরনের পতন ঘটে। ব্যাংকিং খাতের পাশাপাশি অন্য খাতগুলোও পতন থেকে রক্ষা পায়নি মঙ্গলবার। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৫২টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে বেড়েছে মাত্র ৩০টির দর। বিপরীতে দর হারায় ২৯২টি যা মোট লেনদেন হওয়া কোম্পানির ৮৩ শতাংশ। অপরিবর্তিত ছিল ৩০টির দর। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৪০টি সিকিউরিটিজের মধ্যে ২৬টির মূল্যবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারায় ১৯৩টি। অপরিবর্তিত ছিল ২১টির দর।
Posted ২:৪১ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed