মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x

যথেষ্ট সরবরাহ থাকা সত্বেও দ্বিগুণেরও বেশি সবজির দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শনিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২০   |   প্রিন্ট   |   517 বার পঠিত

যথেষ্ট সরবরাহ থাকা সত্বেও দ্বিগুণেরও বেশি সবজির দাম

প্রতিবারের মতো রমজান উপলক্ষ্যে পণ্যের দাম বাড়িয়েছে ব্যবসায়ীরা। বাজারে শাক সবজির যথেষ্ট সরবরাহ আছে, তারপরও রোজা বলে কথা। দাম তো বাড়তেই হবে। বিশেষ করে ঢাকার ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে পণ্যের দাম বাড়ান। এরা সবচেয়ে বড় যে অজুহাত দেয় সেটি হলো- মোকামে মালের দাম বেশি।
অথচ মোকামে খবর নিয়ে দেখা গেছে, ঢাকার বাজারগুলোতে যে দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে, তার বেশিরভাগ সবজির দামই মোকামে এর অর্ধেক।
তাদের আরেকটি অজুহাত হলো- কাঁচামাল দ্রুত পচনশীল। বিক্রি না হলে পচে যায়, যে কারণে মোকামের দামের সঙ্গে বড় পার্থক্য থাকে। তবে কোনো কোনো পণ্যের দাম দ্বিগুণ আবার কিছু পণ্যের দাম চারগুণও বাড়ে।

শনিবার (২৫ এপ্রিল) থেকে শুরু হয়েছে রোজা। পবিত্র রমজান মাসে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ সবজি হলো বেগুন। যা দিয়ে তৈরি হয় বেগুনি। ইফতারিতে বেগুনি ও শসা না থাকলে যেন অসম্পূর্ণ থাকে সব আয়োজনই। এছাড়া যারা মুড়ি মাখা খান, তাদের জন্য ধনে ও পুদিনার পাতা খুবই প্রয়োজনীয় পণ্য। প্রয়োজন অন্যান্য তরিতরকারিও। এ কারণে সুযোগ বুঝে ব্যবসায়ীরা সব পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়।

গত কয়েকদিনে ঢাকার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে- বাজারে তরিতরকারি যে দামে বিক্রি হচ্ছে এর অনেকগুলোর দাম মোকামে অর্ধেক। যেমন বেগুনের কথাই ধরা যাক। ঢাকায় বাজার ভেদে লম্বা বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজিতে। অথচ বগুড়ার মহাস্থানের মোকামে বেগুনের দাম ১৫ টাকা কেজি। আর গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়। ঢাকায় শসার দাম ৪০-৫০ টাকা কেজি। মোকামে ১৫-১৮ টাকা টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া ঢাকায় করলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকায়। উস্তা ৩০-৪০ টাকা কেজি। বরবটি পাওয়া যাচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা কেজি। পটল ৪০-৫০, ঝিঙা ৪০-৫০ এবং চিচিঙ্গা ২০-৩০ টাকা কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে। গাজর ৩৫-৪০ টাকা। টমেটো ২০-৩০ টাকা। কচুর লতি প্রতি কেজি ৬০, বড় কচু ৪৮-৫০, মুলা ৩০, প্রতি কেজি ধনিয়াপাতা ১৫০ এবং পুদিনা পাতা বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। প্রতি হালি লেবু (ছোট) ৩০-৪০, বড় সাইজের লেবু ৬০-৭০, প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকায়, প্রতি পিস বাঁধাকপি ৩০ টাকা এবং কাচা মরিচ ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

বগুড়া মহাস্থানের কাঁচাবাজারের আড়তদার মোস্তাফিজুর রজমান বলেন, ‘মহাস্থান বাজারে করলার কেজি ১২ টাকা। উস্তা বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৮ টাকা। বরবটি ২০, পেঁপে ২০, পটল ২৫, ঝিঙা ২০, চিচিঙ্গা ১৫, গাজর ১৮-২০, টমেটো ১০, কচুর লতি ৩০, বড় কচু ২০-২৫, মুলা ৫, ধনিয়াপাতা ৫০-৬০, পুদিনা পাতা ৭০-৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি হালি লেবু (ছোট) ১৫-২০, প্রতি পিস লাউ ২০-২৫, প্রতি পিস বাঁধাকপি ৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৮ টাকা। কাঁচা মরিচ ২৮-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য ড. মো. শামসুল আলম এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘কৃষিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। কৃষক না বাঁচলে কৃষি বাঁচবে না। কৃষক যাতে পণ্যের ন্যায্য দাম পায়, এটা সংশ্লিষ্ট মহলের দেখা উচিৎ। কৃষক যদি পণ্য উৎপাদন না করে শহরের মানুষেরা বিপদে পড়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘লকডাউনের কারণে পরিবহন বন্ধ রয়েছে। এ কারণে হয়তো গ্রামের কৃষকরা পণ্যের দাম পাচ্ছেন না। তবে তারা যেন দাম পায়, এটা নিশ্চিত করা খুবই প্রয়োজন। লকডাউনের মধ্যেও বাজার ব্যবস্থাপনা সীমিত আকারে, স্বাস্থ্য সুরক্ষা করে, সামাজিক দূরত্ব মেনে চালু করা প্রয়োজন।’

রমজান মাসে বাজার ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘রোজার আগে অতি মুনাফালোভী এই সিন্ডিকেটসমূহের কারণে স্বল্প আয়ের সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা আরও জোরদার করে দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে রাখা উচিৎ। কিন্তু সরকারের বাজার মনিটরিং করার কোনো লোক নেই।’

তিনি বলেন, ‘বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের পর্যাপ্ত সরবরাহ ও মজুত থাকার পরও অসৎ সিন্ডিকেটের হোতারা স্বেচ্ছাচারী পন্থায় প্রায় প্রতিটি ভোগ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছে। করোনার কারণে সারা দেশে লকডাউন চলছে। কিন্তু কৃষককে বাঁচানোর জন্য সীমিত আকারে হলেও পরিবহন ব্যবস্থা চালু রাখতে হবে। অন্যথায় কৃষক তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য দাম পাবে না।’

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১১:৩৭ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২০

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11400 বার পঠিত)

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।