নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ১৭ মে ২০২০ | প্রিন্ট | 330 বার পঠিত
আগামী অর্থবছরের (২০২০-২১) বার্ষিক উন্নয়ন উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) পদ্মা সেতু নির্মাণে পাঁচ হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ প্রস্তাব করা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের মূল এডিপির তুলনায় যা ৩৭১ কোটি টাকা কম। চলতি অর্থবছরে পদ্মা সেতু নির্মাণে বরাদ্দ ছিল পাঁচ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা। অবশ্য করোনা ভাইরাসের প্রভাবসহ বিভিন্ন কারণে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কাজ না হওয়ায় সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বা আরএডিপিতে বরাদ্দ এক হাজার ৩৫৫ কোটি টাকা কমানো হয়।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আগামী অর্থবছরের এডিপির খসড়া রূপরেখা করা হয়েছে। এতে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় পদ্মা সেতুর জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। আগামী বাজেট ঘোষণার আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় জাতীয় অর্থনৈতিক কমিটির (এনইসি) সভায় এই বরাদ্দের চূড়ান্ত অনুমোদন হবে।
পরিকল্পনা কমিশনের এক কর্মকর্তা বলেন, সেতু বিভাগের প্রস্তাবেই এ পাঁচ হাজার কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। সাধারণত গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের প্রস্তাবের ওপর কোনো রকম পরিবর্তন আনা হয় না। করোনার ধাক্কা শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে ঠেকে কিংবা এ কারণে প্রকল্পের নির্মাণকাজ কতটা ব্যাহত হতে পারে, সেই আশঙ্কাসহ সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়েই এই বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে।
তিনি জানান, প্রকল্প বাস্তবায়নকারী চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজের কর্মী এবং কর্মকর্তারা ছুটিতে দেশে যাওয়ার পর করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশে আসতে পারছেন না। দেশি-বিদেশি সাড়ে চার হাজার কর্মীর মধ্যে এখন মাত্র দেড় হাজার কর্মী নিয়ে কাজ চলছে। আবার অনেক নির্মাণ সামগ্রী চীন থেকে আসার কথা। সেগুলোও পাইপলাইনে আটকা পড়েছে। এ কারণে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি হয়নি।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, মূল্যায়ন ও পরিবীক্ষণ বিভাগ আইএমইডির সর্বশেষ গেল মার্চের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রকল্পের সার্বিক বাস্তবায়ন অগ্রগতি ৮৮ দশমিক ৫ শতাংশ। প্রতিবেদনে আইএমইডি বলেছে, ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত জাতীয় অতি গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পে যে ধরনের গতিশীলতা থাকা প্রয়োজন, কার্যত তা নেই। নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে অসম্পূর্ণ কাজ সম্পন্ন করতে বাস্তবসম্মত সময়ভিত্তিক একটি কর্মপরিকল্পনা করার সুপারিশ করেছে আইএমইডি। মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করতে বলা হয়েছে একই সঙ্গে।
ইতিমধ্যেই পদ্মা সেতুর ১৯ এবং ২০ পিয়ারের ওপর ২৯তম স্প্যান স্থাপন করা হয়ছে। ফলে সেতুর ৪ হাজার ৩৫০ মিটার পর্যন্ত দৃশ্যমান। চলতি বছরেই প্রকল্পের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। আগামী বছরের জুন নাগাদ পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা আছে সরকারের।
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদিত হয়। সে সময় প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয় ১০ হাজার কোটি টাকা। এরপর তিন দফা সংশোধনের মাধ্যমে প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা।
Posted ৩:৫৭ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৭ মে ২০২০
bankbimaarthonity.com | saed khan