এস জেড ইসলাম | বুধবার, ১২ মে ২০২১ | প্রিন্ট | 377 বার পঠিত
মাকড়সার জালের মতো অনিয়ম, দুর্নীতির আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকার পরও স্বপদে বহাল থাকা ইসলামি কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্সের সিইও মীর নাজিম উদ্দিন এবার এগিয়ে গেলেন আরো এক ধাপ। যেখানে তাকে পদ থেকে অব্যহতি পাওয়ার কথা, সেখানে তার নিয়োগ নবায়ন করার বিষয়টি উঠে এসেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এমন পরিস্থিতিকে মীর নাজিমের ক্ষমতার কাছে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অসহায় আত্মসমর্পণ বলেই মনে করছেন বীমা সচেতন মহল।
সূত্র জানায়, চেয়ারম্যান ড. মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে চলতি মাসের ৩ তারিখে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে অনুষ্ঠিত আইডিআরএ’র মাসিক সভা। এতে স্থান পায় দুর্নীতিতে অভিযুক্ত ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্সের সিইও মীর নাজিম উদ্দিনের নিয়োগ নবায়ন অনুমোদনের বিষয়টি। কিন্তু চুক্তিপত্রে পূর্বের চেয়ে দ্বিগুনেরও বেশি বেতনের প্রস্তাব করায় তা সংশোধনের জন্য কোম্পানিকে চিঠি পাঠায় আইডিআরএ। তবে সে চুক্তি সংশোধন করে আইডিআরএকে অবহিত না করায় তখনকার পর্যন্ত নিয়োগ নবায়ন অনুমোদনের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
প্রস্তাবিত নিয়োগ নবায়ন আবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৩ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত মীর নাজিম উদ্দিনের বেতন-ভাতা ছিল দুই লাখ পঁয়ত্রিশ হাজার টাকা। আবার ২০১৬ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত বেতন ছিল তিন লাখ পঁয়ত্রিশ হাজার টাকা। কিন্তু ১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ থেকে পরবর্তী তিন বছরের জন্য বেতন ধরা হয় ছয় লাখ টাকা। পাশাপাশি বাসভবন রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বাবদ আরো এক লাখ টাকা। অর্থাৎ মোট সাত লাখ টাকা, যা আগের বেতনের দ্বিগুনের চেয়েও বেশি।
মীর নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের তদন্তে ১০টি অনিয়মের প্রমান পায় আইডিআরএ’র সার্ভিল্যান্স টিম। এরমধ্যে রয়েছেÑ বীমা আইন লঙ্ঘন করে অনিয়ম ও জালিয়াতিতে জড়িত থাকা, অর্থআত্মসাৎ ও ক্ষমতার অপব্যবহার, পরিচয় গোপন করে মোটা অঙ্কের বেতনে নিজের ছেলেকে নিয়োগ, অবলিখন কর্মকর্তাকে এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ, অনভিজ্ঞ জনবল নিয়োগ দিয়ে অবৈধভাবে বেতন উত্তোলন, বীমা আইন ও কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা লঙ্ঘন করে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় এবং প্রিমিয়াম হিসাবে গরমিল তথ্য প্রদান। শুধু তাই নয়, নিয়ন্ত্রক সংস্থার চিঠি জাল করে তা বোর্ড মিটিংয়ে উপস্থাপনের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এতসব দুর্নীতি ও জালিয়াতির পরও স্বপদে বহাল রয়েছেন এই সিইও। বর্তমানে তার নিয়োগ নবায়ন অনুমোদনের বিষয়টি আইডিআরএ’র মাসিক সভায় স্থায় পেয়েছে।
এমনটি ঘটলে নিয়ন্ত্রণ সংস্থার তার গ্রহনযোগ্যতা হারাবে বলে মনে করছেন বীমা সংশ্লিষ্ট সচেতন মহল। তাদের মতেÑ এমনিতেই ইড্রা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ রয়েছে, যা আদালতের বিচারাধীন। এরই মধ্যে মীর নাজিম উদ্দিনের নিয়োগ অনুমোদন সামনে আসলে তা আইডিআরএর উচ্চ পদস্থদের প্রতি দুর্নীতি অভিযোগ তুলতে সহায়ক হবে। এক্ষেত্রে মীর নাজিম উদ্দিনের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন ও এর প্রেক্ষিতে প্রদত্ত সুপারিশের ভিত্তিতে তার আবেদনটি বাতিল করে দেয়া উচিত ছিলো বলে মনে করেন তারা।
Posted ৩:২৩ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১২ মে ২০২১
bankbimaarthonity.com | rina sristy