নিজস্ব প্রতিবেদক | বুধবার, ১২ অক্টোবর ২০২২ | প্রিন্ট | 180 বার পঠিত
বীমা শিল্পের প্রসারে ইন্স্যুরেন্স অ্যাকাডেমির কার্যক্রম আরো বেগবান করতে হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আজ বুধবার বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাকাডেমি আয়োজিত অ্যাসোসিয়েটশিপ সনদপত্র প্রদান অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বীমা শিল্পকে এগিয়ে নিতে পেশাগত শিক্ষার গুরুত্ব অনস্বীকার্য। এ খাতকে এগিয়ে নিতে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবলের বিকল্প নেই। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান দক্ষ জনবল তৈরীর উদ্যোগ নিয়েছে। যার মধ্যে ইন্স্যুরেন্স অ্যাকাডেমি একটি।
ইন্স্যুরেন্স অ্যাকাডেমির পরিচালক এস এম ইব্রাহিম হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্র্র্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জয়নুল বারী, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবদুল্যাহ হারুন পাশা, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাকাডেমির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সোহরাব উদ্দিন। অনুষ্ঠান ভার্চুয়ালি যোগদান করেন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ বলেন, জিডিপিতে বীমা খাতের অবদান শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ অথচ তাইওয়ানে ২০ দশমিক ১ শতাংশ, দক্ষিণ আফ্রিকায় ১১ দশমিক ৮৪ শতাংশ। তাই এ শিল্পকে এগিয়ে নিতে পেশাগত শিক্ষার গুরুত্ব অনস্বীকার্য। এ খাতকে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবলের বিকল্প নেই। আর এ দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য জন্য দরকার অর্থ। এটা খরচ নয় বিনিয়োগ। দীর্ঘমেয়াদি লাভের জন্য বিনিয়োগ করা উচিত। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান দক্ষ জনবল তৈরীর উদ্যোগ নেয়। এজন্য গ্রহণযোগ্য বেতন কাঠামো অনুসরণ করতে হবে।
তিনি বলেন, বীমা খাতে আস্থা সংকটের অভাব। এ সংকট দূর করতে হলে বীমা কোম্পানীগুলোকে যথাসময়ে বীমা দাবি পরিশোধ করতে হবে। তবে সব প্রতিষ্ঠানে সমস্যা নেই। অল্প কয়টি প্রতিষ্ঠানের দুর্নামের কারণে সব প্রতিষ্ঠানকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরও বলেন, কয়েক দিন আগে জাতীয় বীমা দিবসকে ‘খ’ শ্রেণী থেকে ‘ক’ শ্রেনীতে উন্নিত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেকে বীমা খাতের একজন গর্বিত সদস্য মনে করেন। তার বলিষ্ঠ হাত ধরে এগিয়ে যাচ্ছে দেশের বীমা খাত। বীমা খাতের বিকাশের জন্য প্রয়োজন- আইনী কাঠামো, প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন, সেবা সহজিকরণ, বীমা দাবি দ্রুত নিষ্পত্তিকরণ, সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনা ও সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জনের মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় বীমা সেবা পৌঁছিয়ে দেয়া।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধু কিন্তু বীমা অফিসে নিজের জন্য চাকরি করেননি। তিনি দেশ, জাতি এবং বাংলাদেশকে স্বাধীন করার হাতিয়ার হিসেবে বীমাতে কাজ করেছেন। এর ফলশ্রূতিতে ১৯৭৩ সালে বীমাকে জাতীয়করণ করেন। দেশে প্রথমে কিন্তু বীমার জন্য একাডেমি প্রতিষ্ঠা করা হয়, ব্যাংকের জন্য নয়। তাই আমাদের বুঝতে হবে বীমা সেক্টরের গুরুত্ব কতটুকু।
আডিআরএ’র চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী বলেন, বীমা বাংলাদেশের অত্যন্ত সম্ভাবনাময় একটি খাত। বাংলাদেশের অর্থনীতি গত এক দশক ধরে অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে অগ্রসর হচ্ছে; সারাবিশ্বে প্রশংসিত হচ্ছে। আমরা ইতোমধ্যে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছি। ২০৩১ সালে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের মর্যাদা অর্জনের পর্যায়ে আছে বাংলাদেশ।
কিন্তু বীমা অর্থনীতির একটি অন্যতম ও বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় খাত হলেও এটি অনেক পিছিয়ে আছে। এ জন্য সরকার বীমা খাতের প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছে। বীমা খাত এগিয়ে নেয়ার জন্য সরকার সব ধরণের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছে। বীমা শিল্পে যেসব কর্মী আছে তাদের দক্ষতা ও পেশাগত জ্ঞানের অভাবের কারণে তারা মানুষকে ভুল বুঝিয়ে ব্যবসা করছে। দক্ষ কর্মী গড়ে তুলতে হলে আমাদের এই বিষয়ে কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রদান করতে হবে।
জয়নুল বারী আরো বলেন, মেধাবীদের এই পেশায় নিয়ে আসতে হবে। তারা যেন বীমায় এসে মুখ ফিরিয়ে না নেয় সেদিকেও নজর দিকে হবে। এই জন্য ভালো সুযোগ সুবিধা, বেতন-ভাতা দিতে হবে। তাহলেই মেধাবীরা এই খাতে যুক্ত হবে।
Posted ৮:০৭ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১২ অক্টোবর ২০২২
bankbimaarthonity.com | rina sristy