নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ১৩ জুন ২০২৩ | প্রিন্ট | 371 বার পঠিত
নানা অপরাধ ও দুর্নীতির কারনে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছে না হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। এমন পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠানের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডলকে অপসারণ চেয়েছেন অধিকাংশ পরিচালক।
গতকাল মঙ্গলবার (১৩ জুন) রাজধানীর মতিঝিলে হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের কোম্পানি প্রধান কার্যালয়ে ১৩৯ তম পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন কোম্পানির চেয়ারম্যান মো. হান্নান মিয়া।
সভায় আলোচ্য সূচির মধ্যে ছিল, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আয়োজিত ‘হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সার্বিক বিষয় আলোচনার জন্য পরিচালনা পর্ষদের সাথে সভা’র বিষয়বস্তু পর্যালোচনা। কোম্পানির মামলা মোকাবিলার বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ। কোম্পানির সাম্প্রতিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা ।
সভায় পরিচালকদের পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠানটির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার (এমডি) অপসারণের দাবি করে প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। এই বিষয়টি নিয়ে সভায় প্রচন্ড হট্টগোল শুরু হয়। পরিচালকরা কোম্পানির এমডিকে অপসারণ করতে চাইলে এর বিরোধীতা করে পরিচালক জুলহাস মিয়া বক্তব্য রাখেন।
তিনি মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডলকে স্বপদে বহাল রাখতে অনড়। অবশ্য বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডলকে যাতে অপসারণ করতে না পারে ,এজন্য আগে থেকেই (গতকাল) উক্ত সভার আশেপাশে ২৫ থেকে ৩০ জনের একটি বর্হিাগত দল মহড়া দিতে দেখা যায়। সভা চলাকালে চেয়ারম্যানসহ কয়েকজন পরিচালকদের বেরিয়ে আসার জন্য চাপ প্রয়োগ করা হয়।
এক পর্যায়ে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটলে মতিঝিল থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। কিন্তু পরিচালনা পর্ষদ ও এমডি গ্রুপের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করতে থাকে। সভা চলাকালেই আইডিআরএ কর্তৃক নিয়োগকৃত পর্যবেক্ষ হারুন অর রশিদ চলা যান। তার চলে যাবার পর সভায় হট্টগোল বাড়তে থাকে।
এদিকে পরিচালনা পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বর্তমান মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার জোড় করে স্বপদে পদে থাকতে অনড়। এমন পরিস্থিতিতে তারা আইডিআরএ’র হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
উল্লেখ্য, এর আগেই আইডিআরএ’র নির্দেশে এফডিআর’র টাকা থেকে গ্রাহকের বীমা দাবি পরিশোধ করায় কোম্পানিটির মুখ্য নির্বাহীর বিরুদ্ধে ক্ষমতা অপব্যবহারের অভিযোগ এনেছেন প্রবাসী পরিচালকরা। একইসাথে মুখ্য নির্বাহীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অপরদিকে কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা বলছেন গ্রাহকের টাকা পরিশোধ করার সামর্থ্য কোম্পানির রয়েছে। কিন্তু প্রবাসী পরিচালকরা অনুমোদন না দেয়ায় গ্রাহকদের বকেয়া বীমা দাবির টাকা পরিশোধ করা যাচ্ছে না। তিনি এফডিআরএ ভেঙ্গে গ্রাহকের পাওনা টাকা পরিশোধের বিষয়ে আইডিআরএ’র আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অন্যদিকে গ্রাহকের পাওনা টাকা পরিশোধ, আত্মসাতকৃত টাকা উদ্ধার, পরিচালকদের মধ্যে সমঝোতা করতেই গেলো প্রায় ১ বছর আগে আইডিআরএ’র সমঝোতায় পর্যটন করপোরেশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক সচিব হান্নান মিয়াকে নিরপেক্ষ পরিচালক নিয়োগ দিয়ে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া হয়।
এদিকে হোমল্যান্ড ইন্স্যুরেন্সকে গ্রাহকদের সকল বীমা দাবি ৩০ জুনের মধ্যে পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ। গত সোমবার (১২ জুন) আইডিআরএ ও হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে বীমা দাবি পরিশোধে বিশেষ গুরুত্বারোপসহ কোম্পানি পরিচালনায় শৃঙ্খলা আনয়ন, কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পরিপালন এবং কোম্পানির ব্যবসায় উন্নয়নের লক্ষ্যে সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করা হয়।
আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারীর সভাপতিত্বে বৈঠকে হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান মো. হান্নান মিয়ার নেতৃত্বে পরিচালক এবং সিইওর সমন্বয়ে ১২ জন সদস্য অংশগ্রহণ করেন। সভায় কর্তৃপক্ষের সদস্য এবং নির্বাহী পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।
Posted ১০:০৬ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৩ জুন ২০২৩
bankbimaarthonity.com | rina sristy