নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার, ২১ আগস্ট ২০২৩ | প্রিন্ট | 376 বার পঠিত
অবশেষে অনিয়ম, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং নিরীক্ষা দলকে অসহযোগিতার সুনির্দিষ্ট অভিযোগে হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ড. বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডলকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। একই সঙ্গে কোম্পানির নানা অনিয়মের অভিযোগ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাকে সিইও’র দায়িত্ব পালনে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইতিপূর্বে ‘দৈনিক ব্যাংক বীমা অর্থনীতি’ পত্রিকায় হোমল্যান্ড লাইফের সিইও ড. বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডল এবং কোম্পানির নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে একাধিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর টনক নড়েছে আইডিআরএ’র। এবার আইডিআরএ’র পক্ষ থেকে বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডলের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু হয়েছে। গত ১৪ আগস্ট আইডিআরএ’র পরিচালক (লাইফ) এস. এম মাসুদুল হক স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানো নোটিশে এসব নির্দেশনার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। সর্বশেষ খবরে জানা যায়, নোটিশ পাবার পর বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডল এখন আর অফিস করছেন না। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের সাড়া পাওয়া যায়নি।
নোটিশে বীমা আইন, ২০১০ এর ৫০ ধারার ১ (খ) উপ-ধারার প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডলকে কেন হোমল্যান্ড লাইফের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার পদ থেকে অপসারণ করা হবে না, তিন দিনের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা দাখিলের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। একই সঙ্গে বীমাকারী ও বীমা গ্রাহকের স্বার্থে বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বীমা আইন, ২০১০ এর ৫০ ধারার ১ (খ) এর (অ) উপধারা মোতাবেক তাকে (বিশ্বজিৎ) হোমল্যান্ড লাইফের সিইও হিসাবে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২২ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর আইডিআরএ’র পক্ষ থেকে পাঠানো এক চিঠিতে হোমল্যান্ড লাইফের ২০১৮ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত তিন বছরে অনিষ্পন্ন বীমা দাবি, ব্যবস্থাপনা ব্যয়, কমিশন প্রদান, বীমা সংক্রান্ত সকল লেনদেন, কোম্পানির আর্থিক সক্ষমতা যাচাইয়ের জন্য নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘হুসেইন ফরহাদ এন্ড কোং কে’ বিশেষ নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নিয়োগ করা হয় এবং অডিট ফার্মের বিশেষ নিরীক্ষা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য হোমল্যান্ড লাইফের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার নির্দেশ দেয়া হয়। পরবর্তীতে আবার ২০২২ সালের ১৪ নভেম্বর ওই অডিট ফার্মকে বিশেষ নিরীক্ষা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য হোমল্যান্ড লাইফের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু ২০২৩ সালের ২৯ জানুয়ারি নিরীক্ষা ফার্ম চিঠির মাধ্যমে আইডিআরএ’র নিকট হোমল্যান্ড লাইফের অসহযোগিতার বিষয়টি তুলে ধরে। পরবর্তীতে গত ২২ ফেব্রুয়ারি আইডিআরএ হোমল্যান্ড লাইফের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাসহ কোম্পানির প্রধান অর্থ কর্মকর্তাকে শুনানীতে ডেকে নিরীক্ষা ফার্মকে প্রয়োজনীয় তথ্য সর্বরাহের নির্দেশ দেয়া হয়। সর্বশেষ গত ২৭ ফেব্রুয়ারি অডিটর নিরীক্ষা সম্পন্ন করে হোমল্যান্ড লাইফের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার উপস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ কিছু নিরীক্ষা পর্যবেক্ষণের বিষয়ে তথ্য প্রদান না করায় কিছু বিষয় অমিমাংশিত থেকে গেছে বলে নিরীক্ষা প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়। এছাড়া নিরীক্ষা ফার্ম কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিলকৃত প্রতিবেদনে হোমল্যান্ড লাইফের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের অসহযোগিতা এবং প্রয়োজনীয় লেনদেন, বিল-ভাউচার, দলিলাদি সরবরাহ না করায় নিরীক্ষা কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারেনি বলে উল্লেখ করেছেন। এ বিষয়টি নিয়ে গত ১৫ মে আইডিআরএ’র পক্ষ থেকে হোমল্যান্ড লাইফের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান অর্থ কর্মকর্তাকে পৃথকভাবে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়।
গত ১০ আগস্ট আইডিআরএ’র সভাকক্ষ-১ এ ওই সব অভিযোগ নিয়ে ত্রিপক্ষীয় শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। শুনানীতে আইডিআরএ, হোমল্যান্ড লাইফ এবং নিরীক্ষা ফার্মের গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ এবং কোম্পানির লিখিত ব্যাখ্যা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং নিরীক্ষা ফার্মের প্রতিনিধি ও কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার বক্তব্য গ্রহণ করা হয়। শুনানীতে কয়েকটি অনিয়ম, দুর্নীতির বিষয় সুনির্দিষ্টভাবে প্রমাণিত হয়। এর মধ্যে রয়েছে-
কোম্পানির ব্যাংক হিসাবে অনিয়ম: অডিটর ২০১৮ সালের ব্যাংক স্থিতি ৫৪ কোটি ৯৭ লাখ, ২০১৯ সালে ৫৮ কোটি ৯৮ লাখ এবং ২০২০ সালে ব্যাংক স্থিতি ৫৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা কারসাজির মাধ্যমে বৃদ্ধি করে প্রদর্শন করেছেন বলে নিরীক্ষা প্রতিবেদনে তুলে ধরেছেন। হোমল্যান্ড লাইফের ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা ২৬৭টি। উল্লিখিত ব্যাংক স্থিতির যথার্থতা যাচাইয়ের জন্য নিরীক্ষা দল ব্যাংক বিবরণীসমূহ চাইলেও তা সরবরাহ করেনি হোমল্যান্ড লাইফ। এদিকে কোম্পানীর মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আইডিআরএ দপ্তরে দাখিলকৃত লিখিত ব্যাখ্যায় ব্যাংক খতিয়ান ও ব্যাংক সমন্বয় বিবরণী নিরীক্ষা দলকে সরবরাহ করেছেন বলে দাবী করেছেন। কিন্তু ত্রিপক্ষীয় শুনানিকালে সিইও স্বীকার করেছেন নিরীক্ষা দলকে ব্যাংক হিসাব বিবরণী সরবরাহ করা হয়নি এবং ব্যাংক হিসাব বিবরণী সমূহ নিরীক্ষা দলকে প্রদান করার কোন প্রমাণও উপস্থাপন করতে পারনেনি। হোমল্যান্ড লাইফের সিইওর অসহযোগিতার কারণে কোম্পানির ব্যাংক স্থিতি সম্পর্কে নিরীক্ষা দল নিশ্চিত হতে পারেননি নিরীক্ষা দল।
লাইসেন্স বিহীন এজেন্টকে কমিশন প্রদান : নিরীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী হোমল্যান্ড লাইফের ২০১৮ সালে লাইসেন্স বিহীন এজেন্ট সংখ্যা ছিল ২,১০৬ জন, ২০১৯ সালে ২,১৭৮ জন এবং ২০২০ সালে ২,১৪৬ জন। গত তিন বছরে মোট এজেন্টের সংখ্যা ছিলো ৬,৪৩০ জন। লাইসেন্স না থাকা সত্ত্বেও তাদের বেআইনিভাবে কমিশন প্রদান করা হয়েছে। হোমল্যান্ড লাইফের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আইডিআরএ দাখিলকৃত লিখিত ব্যাখ্যায় দাবি করেছেন যে, বীমা আইন অনুযায়ী কর্তৃপক্ষে সকল লাইসেন্স প্রাপ্তির জন্য আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু শুনানিতে জেরাকালে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি স্বীকার করে জানিয়েছেন যে, মাত্র ৪৭২ জন এজেন্টের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছেন। কিন্তু ৬,৪৩০ জন এজেন্টকে কোন সালে মোট কত টাকা কমিশন প্রদান করেছেন তার বিস্তারিত তথ্য নিরীক্ষা দলকে প্রদান করা হয়নি। ফলে কোম্পানির প্রকৃত ব্যবস্থাপনা ব্যয় অনুমোদিত সীমার মধ্যে ছিল কিনা তা নিরীক্ষা দল প্রমাণ করতে পারেনি।
অনিষ্পন্ন বীমা দাবি অর্থ ও বীমা দাবির সংখ্যায় গড়মিল: অডিট ফার্ম তাদের নিরীক্ষা প্রতিবেদনে ২০২০ সালে কোম্পানির প্রদত্ত তথ্য এবং নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে অনিষ্পন্ন বীমা দাবির মধ্যে ৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকার পার্থক্য তুলে ধরেছেন। হোমল্যান্ড লাইফ নিরীক্ষা দলকে অনিষ্পন্ন বীমা দাবি এবং গ্রাহক সংখ্যার তথ্য প্রদান করেনি। কোম্পানির সিইও আইডিআরএ দাখিলকৃত লিখিত ব্যাখ্যায় উল্লেখ করেছেন যে, গ্রাহকদের নিকট হতে দাবির আবেদন পাওয়ার পর তা যাচাই সাপেক্ষে বীমা দাবির অর্থ পরিশোধ করা হয়। তিনি লিখিত ব্যাখ্যায় দাবি করেন যে, ৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না পাওয়ায় তা হিসাবভূক্ত করা হয়নি। ত্রিপক্ষীয় শুনানীকালে ড. বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডল স্বীকার করেন যে, কোম্পানির অনিষ্পন্ন বীমা দাবির পরিমাণ ১২ কোটি ৬ লাখ টাকার চেয়েও অনেক বেশি এবং তা হিসাবভূক্ত করণে কোম্পানির ভুল হয়েছে। এ ক্ষেত্রে তিনি নিরীক্ষা দলকে সঠিক তথ্য না দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। ফলে কোম্পানির অনিষ্পন্ন বীমা দাবি সম্পর্কে আইডিআরএ নিশ্চিত হতে পারেনি।
হিসাববিহীন নবায়ন প্রিমিয়াম আয়: কোম্পানির ২০১৮ সাল থেকে ২০২০ সালের নবায়ন প্রিমিয়াম আয় যাচাই করার জন্য নিরীক্ষা দল পলিসি টেবিল, পিআর, ডিসিএস এবং ব্যাংক ও শাখা ভিত্তিক প্রিমিয়াম রশিদের সারাংশ দেয়ার কথা বলে। হোমল্যান্ড লাইফের সিইও আইডিআরএ দাখিলকৃত লিখিত ব্যাখায় জানিয়েছেন যে, নিরীক্ষা দলের চাহিদা অনুযায়ী যাবতীয় তথ্য ও সমুদয় ব্যাংক বিবরণী দেয়া হয়েছে। তবে ত্রিপক্ষীয় শুনানিকালে তিনি স্বীকার করেন যে, কোম্পানির মাত্র তিনটি শাখার একটি সারাংশ দিয়েছে, যাতে ব্যাংকভিত্তিক প্রিমিয়াম রশিদ ছিল না। ঐ তিনটি শাখার ব্যাংক হিসাব ও রশিদের মধ্যে নিরীক্ষা দল গড়মিল পেয়েছেন। যাতে দেখা যায়, কোম্পানির ২০১৮ সালে ব্যাংকে জমা করা হয় ৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। কিন্তু জমাকৃত রশিদে দেখা যায় ৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ২০১৯ সালে ব্যাংকে জমা দেখানো হয় ১১ কোটি টাকা। কিন্তু জমাকৃত রশিদে দেখা যায় ১১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আবার ২০২০ সালে ব্যাংকে জমা করা হয় ৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা। কিন্তু জমাকৃত রশিদে দেখা যায় ৯ কোটি ৯২ লাখ টাকা। ওই তিন বছরে মোট এক কোটি ৮৮ লাখ টাকার গড়মিলের বিষয়টি উঠে এসেছে।
নবায়ন পলিসির সংখ্যায় গড়মিল: কোম্পানির নবায়ন পলিসির সংখ্যার মধ্যে গড়মিল পরিলক্ষিত হয়। ২০১৮ সালে ব্যাংকে জমাকৃত গ্রাহক সংখ্যা ছিলো ১৪ হাজার ১৬৫ জন আর জমাকৃত গ্রাহকের রশিদ ছিলো ১৫ হাজার ১৫৩ জনের। ২০১৯ সালে ব্যাংকে জমাকৃত গ্রাহক সংখ্যা ছিলো ২১ হাজার ১৮৩ জন আর জমাকৃত গ্রাহকের রশিদ ছিলো ২২ হাজার ১০৮ জন। ২০২০ সালে ব্যাংকে জমাকৃত গ্রাহক সংখ্যা ছিলো ১৮ হাজার ৮৭৯ জন আর জমাকৃত গ্রাহকের রশিদ ছিলো ১৯ হাজার ৩৬৯ জন। এখানে গ্রাহকের সংখ্যার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে ২ হাজার ৪০৩ জন। কোম্পানির সিইও ড. বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডল প্রকৃত তথ্য প্রদান না করায় কোম্পানির ২০১৮ সাল থেকে ২০২০ সালের নবায়ন প্রিমিয়াম আয়ের যথার্থতা সম্পর্কে নিরীক্ষা দল প্রমাণ করতে পারেনি। কোম্পানির সিইওর অসহযোগিতার কারণে এটি ঘটেছে যা ত্রিপক্ষীয় শুনানীকালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
ব্যবসায় সমাপনী তথ্য এবং প্রথম বর্ষ প্রিমিয়াম আয়ের তথ্য প্রদান না করা:
অডিট ফার্মের নিরীক্ষা প্রতিবেদনের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী কোম্পানির ব্যবসায় সমাপনী এবং প্রথম বর্ষ প্রিমিয়াম আয়ের তথ্য প্রদান করা হয়নি। ড. বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডল আইডিআরএ’র নিকট দাখিলকৃত লিখিত ব্যাখ্যায় সকল তথ্য প্রদান হয়েছে দাবি করলেও ত্রিপক্ষীয় শুনানীতে জেরায় তিনি স্বীকার করেন যে, নিরীক্ষা দলের চাহিদা অনুযায়ী সকল তথ্য ও রেকর্ড সরবরাহ করা হয়নি। ড. বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডলের অসহযোগিতার কারণে এটি ঘটেছে যা ত্রিপক্ষীয় শুনানী কালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
প্রশাসনিক, ব্যবস্থাপনা ব্যয়ে অনিয়ম, ভাউচার ও নথি প্রদানে অসহযোগিতা:
অডিট ফার্ম তার নিরীক্ষা প্রতিবেদনের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী হোমল্যান্ড লাইফের প্রশাসনিক এবং অন্যান্য ব্যবস্থাপনা ব্যয় যাচাই করার জন্য নিরীক্ষা দলকে ভাউচার ও নথি প্রদানে অসহযোগিতা করেছে। এছাড়াও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে ২০১৮ সালে ২ কোটি ২৩ লাখ ৯৪২ টাকা, ২০১৯ সালে ৪ কোটি ৯১লাখ ৬৫৩ টাকা এবং ও ২০২০ সালে ১২ কোটি ৮২ লাখ ৯১৭ টাকার সন্দেহজনক ব্যয় চিহ্নিত করেছে। নিরীক্ষা দল সকল বিল, ভাউচার, রেকর্ড, নথি পর্যালোচনা করলে উল্লিখিত বছরসমূহে আর্থিক অনিয়মের টাকার পরিমাণ অনেকগুণ বেশি হতো মর্মে আইডিআরএ’র নিকট গণ্য হয়েছে। ত্রিপক্ষীয় শুনানী কালে ড. বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডলের নিরীক্ষা দলকে এ কাজে অসহযোগিতার বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, হোমল্যান্ড লাইফের নিরীক্ষা কালে প্রতিষ্ঠানটির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডল আইডিআরএ’র নিকট লিখিত ব্যাখ্যায় অসত্য তথ্য প্রদান এবং বিশেষ নিরীক্ষা কার্যক্রমে তথ্য গোপন ও তার অসহযোগিতার বিষয়গুলো প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তিনি হোমল্যান্ড লাইফের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা পদে অধিষ্ঠিত থাকার কারণে বীমা আইন, ২০১০ এর ২৯ ধারা অনুযায়ী কোম্পানিতে বিশেষ নিরীক্ষা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করণে বিঘ্নিত হয়েছে। তিনি বীমা আইন লংঘন করেছেন এবং নিরীক্ষা কাজে তার অসহযোগিতা বীমা গ্রহীতা ও বীমাকারীর স্বার্থের পরিপন্থী কার্যক্রম হিসেবে আইডিআরএ’র নিকট গণ্য হয়েছে।
এসব কারণে বীমা আইন, ২০১০ এর ৫০ ধারার ১ (খ) উপ-ধারার প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডলকে কেন ওই কোম্পানির সিইও পদ হতে অপসারণ করা হবে না তিন দিনের মধ্যে জবার দাখিলের নির্দেশ প্রদান করা হয়। একই সঙ্গে বীমাকারী ও বীমা গ্রাহকের স্বার্থে বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বীমা আইন, ২০১০ এর ৫০ ধারার ১ (খ) এর (অ) উপধারা মোতাবেক তাকে এ কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালনে বিরত থাকার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
Posted ৮:৫৫ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২১ আগস্ট ২০২৩
bankbimaarthonity.com | rina sristy