নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ২১ জানুয়ারি ২০২৪ | প্রিন্ট | 312 বার পঠিত
সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস পদত্যাগ করেছেন। বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) কোম্পানির জরুরি বোর্ড সভায় তিনি পদত্যাগ পত্র জমা দেন। পরে একই সভায় কোম্পানির স্বতন্ত্র পরিচালক কাজী মনিরুজ্জামানকে সর্বসম্মতিক্রমে কোম্পানির চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।
কোম্পানির বোর্ডে উপস্থাপিত চেয়ারম্যানের ইস্তফা পত্র সূত্রে জানা যায়, তিনি সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সে কর্পোরেট সুশাসন নিশ্চিত করাসহ কর্তৃপক্ষের নিয়োগকৃত নিরীক্ষা কাজের সুবিধার্থে প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিতকল্পে এ পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। যা বীমা খাতসহ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর জন্য এক অনন্য উদাহরণ হতে পারে।
এদিকে মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস তার ইস্তফা পত্রে আরো উল্লেখ করেন, ইতিপূর্বে নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুসরণ করে কোম্পানিতে ম্যাবস এন্ড জে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সালের অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদনের উপর বিশেষ নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করেন। নিরীক্ষা কার্যক্রম চলাকালে কোম্পানির প্রাক্তন মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার যোগসাজশে নিরীক্ষকদের অসহযোগিতার পাশাপাশি অনিয়মগুলো কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের নিকট গোপন করেন। ২০২৩ সালের অক্টোবরে মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস কোম্পানির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর কোম্পানির নানা অনিয়মের বিষয় বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরে কোম্পানির বোর্ডকে জানিয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেন। ওই তদন্তে কোম্পানির প্রাক্তন সিইও (সিসি) রাশেদ বিন আমানসহ তার কিছু অনুগত সহযোগী কর্মকর্তার নানা আর্থিক অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া যায়। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে সাবেক সিইও (সিসি) রাশেদ বিন আমানকে গত ১২ জানুয়ারি সাময়িক বরখাস্ত করে পর্ষদ। পরে গত ১৪ জানুয়ারি বীমা আইন ২০১০ অনুসারে নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের দফতরে চিঠি প্রেরণ করে সোনালী লাইফের চেয়ারম্যান।
এদিকে, কোম্পানির প্রাক্তন সিইওকে বরখাস্ত করার কারণে তিনি কোম্পানির চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসকে নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে সকল নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বরাবরে চিঠি প্রেরণ করেন। তার চিঠির প্রেক্ষিতে ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের প্রেক্ষিতে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানটিতে পুনরায় অডিট ফার্ম হুদাভাসি চৌধুরী এন্ড কোং নিরিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ করেন। আইডিআরএ’র নিয়োগকৃত নিরীক্ষকবৃন্দের নিরিক্ষা কার্যক্রম নির্বিঘ্ন করার করার লক্ষ্যে এবং প্রতিষ্ঠানে কর্পোরেট সুশাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস কর্তৃপক্ষের আদেশকে সর্বোচ্চ সম্মান দিয়ে চেয়ারম্যান পদ থেকে নিজেকে দূরে রাখার সাহসী সিদ্ধান্ত নেন। যাতে আইডিআরএ‘র নিয়োজিত নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান হুদাভাসি চৌধুরী এন্ড কোং কোম্পানির অনিয়মের বিষয়গুলোর পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ প্রতিবেদন প্রকাশ করতে পারে।
দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার বিষয়ে সোনালী লাইফের চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস বলেন, স্বচ্ছতার সংস্কৃতি গড়ে তোলার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের সততা ও সুনাম অক্ষুণ্ন রাখার লক্ষ্যে আমি পদত্যাগ করেছি। নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের নিরীক্ষা কার্যক্রম নিবির্ঘ্ন করার পাশাপাশি তদন্ত চলাকালীন কোন প্রভাব বিস্তার না করে নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করার জন্য আমি নিষ্ঠার সাথে কাজ করেছি।
Posted ১:০৪ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২১ জানুয়ারি ২০২৪
bankbimaarthonity.com | rina sristy