নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | প্রিন্ট | 244 বার পঠিত
স্বদেশ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের অপসারিত চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান এবং ওই সময়ের ম্যানেজমেন্টের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সীমাহীন অনিয়ম দুর্নীতি এবং প্রশাসনিক ব্যর্থতার আরও একটি ঘটনার তথ্য পাওয়া গেছে। এ ঘটনার অন্যতম সুবিধাভোগী সদ্য অপসারিত সংস্থাপন ইনচার্জ ও কোম্পানি সেক্রেটারি মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন। যিনি নানা অনিয়মে অভিযুক্ত এবং আইডিআরএ কর্তৃক অপসারিত সাবেক মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ইখতিয়ার উদ্দিন শাহিনের একান্ত অনুগত বলে পরিচিত।
পেশায় আইনজীবী এ আলোচিত কর্মকর্তা ঢাকা জজকোর্টে প্রাকটিস করেন। তার রয়েছে বারের সনদ। তিনি বারের সনদ বহাল রেখেই বীমা কোম্পানির বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জজ কোর্টে প্রাকটিস করার পাশাপাশি ২০২২ সালের ১২ ডিসেম্বর স্বদেশ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির খন্ডকালীন আইনজীবী হিসেবে যোগদেন। কোম্পানির এ পদে যোগ দিয়েই তিনি আলাদিনের চেরাগ হাতে পেয়ে যান। তাকে আর পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি। মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে ৫ হাজার টাকা বেতনের খন্ডকালীন আইনজীবী থেকে হয়ে যান ১ লাখ ৭ হাজার টাকা বেতন ও অন্যান্য সুবিধভোগী কোম্পানি সেক্রেটারি ও ভারপ্রাপ্ত এমডি। তবে তিনি এ পদে বেশিদিন থাকতে পারেন নি। কিছু দিনের মধ্যে অপসারিত হন।
জামাল উদ্দিনের নিয়োগ ও পদন্নোতি প্রক্রিয়ায় তাকে দেয়া সংশ্লিষ্ট চিঠিপত্রের অনুলিপি যাচাই বাছাই করে চাঞ্চল্যকর এ সব তথ্য পাওযা গেছে। এতে দেখা গেছে, মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন পেশায় একজন আইনজীবী। তিনি ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর সর্বসাকল্যে ৫ হাজার টাকা বেতনে কোম্পানির খন্ডকালীন আইনজীবী পদে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ পান। কোম্পানিতে তার কর্মজীবনের মাত্র ২২ দিনের ব্যবধানে অর্থাৎ ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি তাকে ম্যানেজার (সংস্থাপন) পদে পদন্নোতি দিয়ে ৩০ হাজার টাকা বেতন পুনর্নির্ধারণ করা হয়। এই পদন্নোতির মাত্র ৮ মাস পর একই বছরে ১ আগস্টে তাকে পুনরায় কোম্পানির ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে পদন্নোতি দিয়ে বেতন আরও ১০ হাজার টাকা বৃদ্ধি করে ৪০ হাজার টাকা করা হয়। এ সময়ে নির্ধারিত দায়িত্বের পাশাপাশি তাকে কোম্পানি সেক্রেটারির দায়িত্বও দেয়া হয়। ২০২২ সালের ২৭ ডিসেম্বর তার আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি তার বেতন আরও ১০ হাজার টাকা বৃদ্ধি করে ৫০ হাজার টাকা পুনর্নির্ধারণ করা হয়। ২০২৩ সালের ৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত কোম্পানির ৪৫তম বোর্ড সভায় তাকে কোম্পানির ভারপ্রাপ্ত এমডির দায়িত্ব দিয়ে বেতন আবার বৃদ্ধি করে ১ লাখ৭ হাজার টাকা করা হয়।
স্বদেশ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সে ব্যাপক অনিয়মের ঘটনায় নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) কোম্পানির ব্যবসায়িক নিবন্ধন ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করে। এর আগে আইডিআরএ সাবেক চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমানের নেতৃত্বাধীন পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সকল পরিচালককে অপসারণ করে। কোম্পানির পেইডআপ ক্যাপিটালের ১৪ কোটি টাকা ব্যাংক থেকে তুলে আত্মসাতের ঘটনায় আইডিআরএ কেন কোম্পানির পরিচালনা বোর্ডের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে না, মর্মে জানতে চেয়ে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়। কোম্পানির বোর্ডের পক্ষ থেকে এ নোটিশের কোন জবাব না দেয়ায় এবং আত্মসাৎকৃত টাকা কোম্পানির ব্যাংক হিসাবে জমা না দেয়ায় বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ নিবন্ধন স্থগিত করে। কোম্পানির সব ধরনের ব্যবসায়িক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।
Posted ৯:৩৫ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
bankbimaarthonity.com | rina sristy