নিজস্ব প্রতিবেদক | বুধবার, ১০ জুলাই ২০২৪ | প্রিন্ট | 79 বার পঠিত
সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের কর্মকর্তা ও মাঠ কর্মীরা বুধবার (১০ জুলাই) দ্বিতীয় দিনের মতো কোম্পানির প্রধান কার্যালয়ে অবস্থান নিয়ে বরখাস্তকৃত ৫ কর্মকর্তাকে পুনর্বহালসহ ৬ দফা দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, অনৈতিক, অনভিপ্রেত, দূরভিসন্ধিমূলক পদক্ষেপের কারণে সোনালী লাইফ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সব এফএ, ইউএম ও বিএমদের বকেয়া পাওনা দ্রুত পরিশোধ করতে হবে। নিরপেক্ষ অডিট কোম্পানি দিয়ে দ্রুত পূর্ণাঙ্গ অডিট সম্পন্ন করে রিপোর্ট প্রকাশ করতে হবে। স্যালারি পলিসি কার্যকর করার ক্ষেত্রে অন্যান্য জীবন বীমা কোম্পানির প্রচলিত সুযোগ-সুবিধা বিবেচনায় রেখে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের নিয়ম যথাযথ প্রতি পালনের সাপেক্ষে দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত উদ্যোগ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আবদুল্লাহিল কাফী, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম মোস্তফা, সহকারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মো. আজিম এবং সহকারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মঞ্জুর মোর্শেদকে স্বপদে বহাল করতে হবে। হেড অফিসের স্বাভাবিক কর্মপরিবেশ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বিশেষ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে নিয়োগ করা অস্ত্রধারী আনসার সদস্যদের কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে এবং আইডিআরএর প্রশাসক নিয়োগপত্রের ৯৫(১) ধারার বাইরে স্বেচ্ছাচারী কোনো পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা যাবে না।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, গত এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) এস এম ফেরদৌস-এনডিসি একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়ে সবার মাঝে ভয় ছড়ানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। সারা দেশের প্রায় ২৭ হাজার বিমা কর্মীর কমিশনের টাকা আটকে রাখার থেকে শুরু, এরপর আইটিসহ বিভিন্ন বিভাগের নিবেদিত কর্মীদের নামে সহকর্মীদের দিয়ে জোর করে মামলা করানোর হুমকি দেওয়া, কথায় কথায় কর্মকর্তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ, অতীতের সব রেওয়াজ ভেঙে নিজের বেতন ৫ লাখ সঙ্গে বোনাস বাবদ আরও ৩ লাখসহ ৮ লাখ টাকা নির্ধারণ করা, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন না দিয়েই ডিএমডি পদে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে চাকরি দেওয়া, ১৭ জন শীর্ষ নির্বাহী এবং ৩৩ জন ড্রাইভারের জুন মাসের বেতন আটকে রাখা, ডিএমডি পদমর্যাদায় নিযুক্তসহ সেনাবাহিনীতে তার সাবেক ৪ সহকর্মীকে গড়ে ২ লাখ টাকা বেতনে সোনালী লাইফে নিয়োগের ১ মাসের পরই নিয়মের বাইরে গিয়ে উৎসব ভাতা প্রদান করার অভিযোগ রয়েছে প্রশাসকের বিরুদ্ধে।
কম বেতনের কর্মীদের জন্য ভর্তুকিমূল্যে খাবার সরবরাহের জন্য স্থাপিত ক্যান্টিন ভেঙে সশস্ত্র আনসারদের আবাসন করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
সারাদেশ থেকে আসা নির্বাহী এবং শাখা ম্যানেজারদের থাকার জন্য নির্মিত আবাসনের জায়গায় ২ জন আনসার এবং প্রশাসকের ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষীর থাকার ব্যবস্থা করেছেন তিনি। এ বিষয় উল্লেখ করে অর্থ প্রতিমন্ত্রীর কাছে চিঠি দেওয়ার অপরাধে প্রশাসক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম ফেরদৌস গত ২৫ জুন ৫ কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিলেন। নোটিশের জবাব সন্তোষজন না হওয়ায় গত ৭ জুলাই সোনালী লাইফের সাবেক ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল ইসলামসহ শীর্ষ ৫ নির্বাহীকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসক।
বরখাস্তের বিষয়ে কোম্পানির সাবেক ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল ইসলাম জানান, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। সার্টিফিকেটে তথ্য বিভ্রান্তির বিষয়টি স্বীকার করে তিনি জানান এটি সংশোধনের জন্য পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হয়নি।
তিনি আরো বলেন, আমি এই কোম্পানির সঙ্গে দীর্ঘদিন জড়িত রয়েছি। আমার নেতৃত্বে ২০২৩ সালে ২০০ কোটির উপরে ব্যবসা হয়েছে, যা মোট প্রিমিয়ামের প্রায় ২৭ শতাংশ। এ কোম্পানি আমি মনে প্রাণে ধারণ করে কোম্পানির সাফল্যের জন্য সব সময় নিবেদিত প্রাণ হিসেবে কাজ করেছি। আমি সহ সোনালির কর্মকর্তা- কর্মচারীরা এ বরখাস্তের আদেশে অন্যান্য কর্মকর্তারা আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। আজকের এ আন্দোলন প্রশাসকের নানা অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতারই বহিঃপ্রকাশ।
Posted ১০:০৬ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১০ জুলাই ২০২৪
bankbimaarthonity.com | rina sristy