বিবিএনিউজ.নেট | শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০১৯ | প্রিন্ট | 575 বার পঠিত
বর্তমানে দেশের ব্যাংকিং খাতে নাজুক অবস্থা চলছে। এ অবস্থা থেকে উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। আসন্ন বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্যও প্রণোদনা থাকবে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনইসি সম্মেলন কক্ষে এক প্রাক-বাজেট আলোচনায় এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক ও সাংবাদিক, বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) প্রতিনিধি এবং ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) কার্যনির্বাহী কমিটির নেতারা আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকিং খাতের উন্নয়নে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। অনেকেই খেলাপি ঋণের বিপরীতে কোনো উদ্যোগ নিতে পারছেন না। মামলা করতে পারছেন না। আসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি এসব বিষয়ে উদ্যোগ নেবে।
মুস্তফা কামাল বলেন, ব্যাংকঋণে সুদের হার বেশি। এত বেশি সুদ দিয়ে কখনই ব্যবসা করা যাবে না। সুদের ওপর নতুন করে সুদ আরোপ করা হচ্ছে। আগামীতে সুদের হার অনেক কমিয়ে আনা হবে, যেন ঋণখেলাপি না হয়। ঋণখেলাপি হওয়ার পর সব ব্যবসায়ীকে জেলে পাঠালে চলবে না। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এ সংকটের সমাধানে কাজ করতে হবে।
বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য প্রণোদনা থাকবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, দেশের পুঁজিবাজারে এখন সিংহ-ছাগলের খেলা চলছে। আমার ভয় হয়, পুঁজিবাজারে ৫০ হাজার কোটি অথবা ৫ লাখ কোটি টাকা দিলেও মুহূর্তেই তা শেষ হয়ে যাবে। কারণ এখানে সমস্যা কোথায়, তা আমরা জানলেও সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করতে পারছি না।
দেশের অর্থনীতি ও পুঁজিবাজার ওতপ্রোতভাবে জড়িত জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, শেয়ারের দাম যারা কমিয়ে দিচ্ছে, তারা তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই করছে। একটি মহল ভালোভাবেই জানে সামনে বাজেট। পুঁজিবাজারের জন্য বাজেটে কিছু না কিছু প্রণোদনা থাকবে। এজন্য এখন শেয়ারের দাম বাড়ার কথা, কমার নয়। অথচ ওই মহল এখন দাম কমাচ্ছে, যেন তারা কম দামে শেয়ারটা কিনতে পারে।
মুস্তফা কামাল বলেন, অনেকে না বুঝে শেয়ারবাজারে আসে। তারাই ধরা খায়। মন্ত্রী না বুঝে ও স্বল্প সময়ের জন্য শেয়ারবাজারে না আসতে বিনিয়োগকারীদের প্রতি অনুরোধ জানান।
বাজারে এখন দুটি পক্ষ রয়েছে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, এদের মধ্যে এক পক্ষ সিংহ। অন্যটি ছাগলের বাচ্চা। এ দুই গ্রুপের মাঝে ফারাক অনেক। বিনিয়োগকারীদের নিজেদের সচেতন হতে হবে। তা না হলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়া বাজার কোনোভাবেই সংশোধন করা যাবে না। বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বাজার নিয়ে ভয় পাওয়ার কারণ নেই। দেশের অর্থনীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন করা হবে। আমরা বারবার এ বাজারকে নাজুক অবস্থায় ফেলে দিতে চাই না। বাজারের উন্নয়নে আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
অর্থ পাচার প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, যথাযথ আইন না থাকার কারণে দেশ থেকে অর্থ পাচার হচ্ছে। আমরা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে কঠোর আইন করব। যেসব পণ্য বিদেশ থেকে আসবে, সেগুলো শতভাগ স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে আসবে। যেসব পণ্য রফতানি হবে, সেগুলোও শতভাগ স্ক্যান করা হবে। এছাড়া র্যান্ডম স্যাম্পলিংয়ের মাধ্যমে পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সময় অনেক ক্ষেত্রে মিসম্যাচ হয়। ফলে বৈষম্য বেড়ে যায়। তবে বৈষম্য যেন আর না বাড়ে, সে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী বাজেটে সঞ্চয়পত্রের সুদহারে কোনো পরিবর্তন আসছে না। তবে সঞ্চয়পত্র ব্যবস্থার সংস্কার নিয়ে কাজ চলছে। সঞ্চয়পত্র যাদের জন্য করা হয়েছে, শুধু তারাই এখানে বিনিয়োগ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে তারা কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না। তিনি আরো বলেন, অনেক অবৈধ টাকায় সঞ্চয়পত্র কেনা হচ্ছে। ফলে যে পরিমাণ সঞ্চয়পত্র বিক্রি হওয়ার কথা, তার চেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে। এটি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
Posted ১০:৪৫ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed