বিবিএনিউজ.নেট | বুধবার, ০৮ জুলাই ২০২০ | প্রিন্ট | 315 বার পঠিত
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’র মতো ‘বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিকথা’ নামে আরেকটি বই প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নুর এ-সংক্রান্ত একটি সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিকথা’ একটা লেখা আছে। ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’র মতোই ওনার জীবনবৃত্তান্ত নিয়ে কিছু লেখা। সেই লেখাগুলো আমি প্রস্তুত করেছি। তা প্রায় তৈরি হয়ে আছে। ওটা আমরা ছাপতে দেব। আমার ধারণা, এটা ছিল একটি রাফ কাজ। প্রথমে তিনি ওটা করেন। তারপর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ প্রস্তুত করেন ছাপানোর জন্য। ওটার বিষয়ে আরও কিছু বিষয় আছে।
তিনি বলেন, ‘তিনি (বঙ্গবন্ধু) কিন্তু কখনো তার কারাজীবনের কোনো কষ্ট, দুঃখ-যন্ত্রণা কিচ্ছুই বলেননি। যেটুকু আমরা জানি এই বই পড়ে। তার লেখা পড়ে আমরা এটা জেনেছি। এর বাইরে আমরা কিছু জানতে পারিনি। কোনো দিন তিনি মুখ ফুটে বলতেন না যে উনার কষ্ট ছিল। কখনো বলেননি। আমি রেহানাকে জিজ্ঞাসা করেছি। ও ছোট ছিল। তো ও মাঝে মধ্যে আব্বাকে এ সমস্ত জিজ্ঞাসা করত, যা আমরা সাহস পেতাম না। আমি কয়েক দিন আগেও জিজ্ঞাসা করেছি, ‘তুই কি কিছুই শুনিস নাই ‘ জবাবে বলল, ‘আব্বাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম’। বলেছিল, ‘তোর শোনা লাগবে না। শুনলে সহ্য করতে পারবি না।’ উনার কথা ছিল শোনার দরকার নেই। ‘আমি বলব না। তোরা সহ্য করতে পারবি না’।
বঙ্গবন্ধুকন্যা আরও বলেন, ‘এত কষ্ট একজন মানুষ একটা দেশের জন্য, জাতির জন্য করতে পারেন? তা ধারণার বাইরে। তিনি মন্ত্রিত্ব ছেড়েছেন সংগঠন করার জন্য। আওয়ামী লীগ করার জন্য। দেশের মানুষের জন্য তিনি সব কিছুই ছেড়েছেন। তিনি ইচ্ছা করলেই প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন। ক্ষমতায় যেতে পারতেন। কিন্তু উনার লক্ষ্য ছিল দেশকে স্বাধীন করার।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘কারাগারের রোজনামচা’ মূলত ১৯৬৬ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত। একাত্তর সাল থেকে আমরা উনার কোনো লেখা পাইনি। কারণ একাত্তর সালে উনি কারাগারে (পাকিস্তানে) কীভাবে ছিলেন? কী অবস্থায় ছিলেন? আসলে তার কিছু আমরা জানি না। সামান্য একটা লাইন পাওয়া গেছে, আইয়ুব খানের ডায়েরি, অক্সফোর্ড থেকে প্রকাশিত। সেখানে উনার সম্পর্কে কিছু কমেন্ট করা আছে। বঙ্গবন্ধুকে যখন কোর্টে নিয়ে আসা হতো, উনি আসতেন, দাঁড়াতেন, বসতে বললে বসতেন। উনি এসে দাঁড়িয়েই নাকি ‘জয় বাংলাদেশ’ বলতেন। বলতেন, ‘আমাকে যা খুশি তাই করো। আমার যেটা করার আমি তা করে ফেলেছি।’ অর্থাৎ আমার বাংলাদেশ তো স্বাধীন হবেই। এর বাইরে একাত্তরের কিছু আমি পাইনি। তবে চেষ্টা করে যাচ্ছি। এখনো আমার চেষ্টা আছে ওখান (পাকিস্তান) থেকে কোনো কিছু উদ্ধার করা যায় কি-না? আমি জেলখানায় ছবি আনতে গিয়েছিলাম। জেলখানা ভেঙে নতুনভাবে করা হয়েছে। ছোট্ট একখানা দেয়ালের ছবি পেয়েছি। কিছু পাইনি। তবে আমার চেষ্টা আমি করে যাচ্ছি।
‘আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি ১৯৬৫ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত। আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে ক্লাসিফায়েড রেকর্ড সংগ্রহ করেছি। যেখানে বাংলাদেশের বিষয়টি রয়েছে। সাউথ এশিয়ার কিছু বিষয় আছে। অনেকগুলো কাগজ। বিশাল। এগুলো আমার অফিসে ছিল। করোনাভাইরাসের কারণে একটা সুবিধা হয়েছে। ঘরে থাকার কারণে সেগুলো সব ধীরে ধীরে দেখছি। সেখানে ওই সময়কার কিছু পাওয়া যায় কি-না সেই চেষ্টা করছি। যদি কিছু সংগ্রহ করা যায়’, যোগ করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Posted ৪:০৬ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০৮ জুলাই ২০২০
bankbimaarthonity.com | Sajeed